খােলা বাজার২৪। শুক্রবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৭: জাপানি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশের প্রতি ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। আরো অধিক সংখ্যক জাপানি কোম্পানি এই দেশে বিনিয়োগ করবে। বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোইয়াসু ইজুমি বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (সিইপিজেড) সফরকালে এই মন্তব্য করেন। বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর দেশের কোন ইপিজেডে এটিই তার প্রথম সফর।
তিনি বলেন, সদ্য সমাপ্ত জাপান-বাংলাদেশ পাবলিক-প্রাইভেট অর্থনৈতিক সংলাপের তৃতীয় রাউন্ডে জাপানি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে বিপুল আগ্রহ দেখিয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এই সফল সংলাপের পরে ইপিজেডসমূহ এবং বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ আরো বৃদ্ধি পাবে।
চট্টগ্রাম ইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক মো. খুরশিদ আলম দেশে ইপিজেডের পথিকৃৎ সিইপিজেড সফরের জন্য রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান। তিনি পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে ইপিজেড তথা বেপজার সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরেন।
বাংলাদেশের ইপিজেডসমূহকে বিনিয়োগের সুবর্ণভূমি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৩৮টি দেশের বিনিয়োগকারীগণ ৪.৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে ইপিজেডসমূহে শিল্প স্থাপন করেছে। সিইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক বলেন, বেপজাধীন ৮টি ইপিজেডের ৪৬৫টি চালু শিল্পে প্রায় পাঁচ লাখ শ্রমিক কর্মরত যার মধ্যে ৬৪% নারী। তিনি বলেন, এভাবে বেপজা নারীর ক্ষমতায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
খুরশিদ বলেন, ইপিজেডের শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহ এযাবৎ ৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের পণ্য রফতানি করেছে এবং প্রতি বছর জাতীয় রফতানিতে প্রায় ২০ভাগ অবদান রাখছে। তিনি বলেন, ইপিজেডের প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে শান্তিপূর্ণ বিনিয়োগ পরিবেশ যার সাফল্যের মূলে রয়েছে বিরাজমান বাধাহীন উৎপাদনমুখী কর্মপরিবেশ ও শ্রমিক মালিকের মধ্যে বিদ্যমান সু-সম্পর্ক। জাপানকে বাংলাদেশের খুব ভালো বন্ধু ও উন্নয়ন সহযোগী উল্লেখ করে সিইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক বলেন, বর্তমানে ইপিজেডসমূহে জাপানের ৩২টি কারখানা চালু রয়েছে যেখানে বিনিয়োগ হয়েছে প্রায় ৪৩৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
পরে রাষ্ট্রদূত চট্টগ্রাম ইপিজেডের জাপানি মালিকানাধীন এলইডি ও ইলেকট্রনিক্স পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অপ-সিড কো, (বিডি) লিমিটেড এবং লেন্স প্রস্তুতকারক সানকো অপটিক্যাল কো. লিমিটেড ঘুরে দেখেন। তিনি কারখানার উৎপাদন প্রক্রিয়া আগ্রহ সহকারে পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি আন্তর্জাতিক মানের পণ্য এবং ইপিজেডের পরিচালনা কার্যক্রম দেখে অভিভূত হন। তিনি ইপিজেডে বিরাজমান বিনিয়োগবান্ধব কর্মপরিবেশের প্রশংসা করেন।
জাপান দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি তাকাশি শিমোকিয়োদা ও থার্ড সেক্রেটারি মিজ এনরি উনো, বেপজার মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মিসেস নাজমা বিনতে আলমগীর, মহাব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) লে. কর্নেল লোকমান আলীসহ সিইপিজেডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।