খােলা বাজার২৪। মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৭: শীতে শুষ্ক আবহাওয়া ও ধুলাবালুতে ত্বক হয়ে যায় খসখসে আর মলিন। তাই এ সময়টাতে সবারই চাই ত্বকের বাড়তি যত্ন।শীতকালে শুষ্ক আবহাওয়ায় চামড়া শুকিয়ে খসখসে হয়ে যায়।এর ফলে ত্বক ফেটে যাওয়া থেকে শুরু করে ত্বকে চুলকানিও হতে পারে।তবে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলে এসব থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
শীতে ছেলেদের ত্বকেও একটু রাড়তি যত্ন চাই।ছেলে বলেই যে শুষ্ক মৌসুমে ত্বকে সাদা দাগ হবে না, ঠোঁট ফাটবে না তা তো হয় না।
শীতের পুরো সময় জুড়ে রুক্ষ ও মলিন ত্বকের জন্য বেশ বিব্রতও হতে হয়। সারাদিন খাটাখাটুনির পর রাতে বাসায় ফিরে আলসেমি ধরে যায়, তাই ত্বকে যত্ন নেওয়ার সুযোগ কই!
ত্বকের যত্ন: সকালে ঘুম থেকে উঠে হালকা কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে নিতে পারেন, কেননা অতিরিক্ত ঠাণ্ডা পানি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর।তারপর ত্বকের ধরণ অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজিং লোশন ব্যবহার করুন।ইচ্ছে করলে মুখ পরিষ্কার করার জন্য ময়েশ্চারাইজার যুক্ত ক্লেনজার দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে পারেন। শীতকালে মুখে কালো ছোপ ছোপ দাগ পড়ে যায়, তাই সপ্তাহ অন্তত একদিন প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে স্ক্রাব তৈরি করে ব্যবহার করলে মুখের ব্ল্যাকহেডস বা কালো দাগ সেড়ে যাবে।
ত্বক পরিষ্কার করার সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ নিয়মে ময়েশ্চারাইজিং লোশন লাগাতে হবে এবং স্ক্রাবিং করার পর গাঢ় ময়েশ্চারাইজিং লোশন লাগাতে পারেন। ত্বকের ধরন অনুযায়ী বাজার থেকে শসা, গাজর, টক দই, চালের গুঁড়া, মধুসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে নিজেই স্ক্রাব তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেন। গোসলের আগে হাত-পা’য়ে আলিভ অয়েল, নারিকেল তেল কিংবা নারিকেল তেলের সঙ্গে মধু মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
ঘুমানোর আগে কুসুম গরম পানি দিয়ে হত, পা ও ফেইসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। যাদের ত্বক শুষ্ক তারা তৈলাক্ত ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন এবং যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা ময়েশ্চারাজিং ক্রিম ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন।
ঠোঁটের যত্ন: শীতে ঠোঁটের সমস্যাগুলো একটু বেশি চোখে পড়ে, ঠোঁটের চামড়া উঠে যায়, ঠোঁট ফেটে যায়, কারও কারও ঠোঁট ফেটে রক্ত আসে। ঠোঁটে সব সময় গ্লিসারিন বা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করলে, ঠোঁটের এসব সমস্যা থাকবে না।
যাদের ঠোঁটের সমস্যা একটু বেশি তারা সানস্ক্রিন লাগতে পারেন। ধূমপায়ীরা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর আর শীতে ধূমপান করলে ঠোঁটের বেশি ক্ষতি হয়। তাই এই অভ্যেস ত্যাগ করুন।
শীতের চুলের যত্ন: শরীরের অন্যান্য অঙ্গেরমতো শীতকালে চুলও আর্দ্রতা হারিয়ে ফেলে। তাই নানান রকম সমস্যা দেখা দেয়। চুলের এসব সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত চুলের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।
পুরুষদের সৌন্দর্য্য বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ‘বান থাই’য়ের হেয়ার এক্সপার্ট কামরুল ইসলাম বলেন, “অনেকেরই একটা ভুল ধারণা আছে যে, প্রতিদিন শ্যাম্পু করলে মাথার চুল পড়ে যায়, এটা ঠিক না। নিয়ম জেনে নিয়মিত চুলে শ্যাম্পু করলে চুলের অনেক সমস্যা-ই চলে যায়।” তিনি আরও পরামর্শ দেন, একদিন অন্তর অন্তর চুলে শ্যাম্পু করলে চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ে এবং স্বাভাবিক বৃদ্ধি বজায় থাকে।
শীতে আর্দ্রতা হারিয়ে ফেলায় চুল রুক্ষ ও মলিন দেখায়। তাই শ্যাম্পু করার আগে চুলে তেল, মধু, লেবুর রস কিংবা ঠাণ্ডা চায়ের লিকার মালিশ করে কিছুক্ষণ পর শ্যাম্পু কর নিলে চুল সতেজ থাকবে। সপ্তাহে একদিন চুলে কাঁচা-মেহেদিপাতা বেটে দিয়ে রাখুন। এতে স্বাভাবিক চুল পড়া কমে যেতে পারে।
চুলে যে কোন ধরনের প্যাক কিংবা মেহেদি ব্যবহার করার পর ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। তার পর কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। চুলে হালকা তেল মালিশ করলে চুলের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি পাবে।
পায়ের যত্ন: শীত বাড়লে প্রকটতর হয় পায়ের নানান সমস্যা— পা ফাটা এবং পায়ের দুর্গন্ধ অন্যতম। তাই এ সময়ে পায়ের যত্ন নেওয়া জরুরি। পায়ের দুর্গন্ধ দূর করতে পাতলা ছিদ্রযুক্ত মোজা ব্যবহার করতে হবে। ব্যবহারের পর প্রতিদিন পারলে জুতা রোদে দিন। আর মোজা একদিন পরার পর ধুয়ে রোদে শুকান।
দুর্গন্ধ এড়াতে পায়ে দুর্গন্ধনাশক লোশন ব্যবহার করুন। সমস্যা প্রকট হলে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। নখের গোড়ায় জমে থাকা ময়লা থেকে জীবাণু সংক্রমিত হয়ে পায়ে দুর্গন্ধ ছড়ায়, তাই প্রতি মাসে অন্তত দুবার পেডিকিউর করলে পা থেকে দুর্গন্ধ দূর হয়ে যাবে।