Tue. May 6th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪। বুধবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৭: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রস্তুত নয় বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) খান মো. নূরুল হুদা। তিনি বলেছেন, আমরা জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচনে জন্য ইভিএম নিয়ে প্রস্তুত না। এটা আমরা স্থানীয় পর্যায়ে পরীক্ষামূলকভাবে চালাব। কিন্তু জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম প্রয়োগ করার জন্য আমরা একেবারেই প্রস্তুত না।

আজ বুধবার শেরেবাংলা নগরের আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে একথা বলেন।

জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, এখনো সিদ্ধান্ত নিইনি। প্রত্যেক জাতীয় নির্বাচনেই সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকে, এটা একটা বাস্তবতা। কিন্তু আমরা কমিশন এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিইনি। অনেক সময় আছে। এত তাড়াতাড়ি আপনারা এই সিদ্ধান্ত চান কেন? অনেক সময় আছে। এখনো এক বছরের বেশি সময় আছে সেই অবস্থানে পৌঁছাতে। এত আগে তো সেই সিদ্ধান্ত দেয়া যাবে না।

সংলাপে অধিকাংশ দলই সেনার কথা বলেছে। সংলাপের সুপারিশ এবং সেনা মোতায়েন নিয়ে আপনাদের মনোভাব কী এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের এই মনোভাবটা কমিশন মিটিংয়ের আগে আমি বলতে পারব না। আমাদের মনোভাব তো আমার মনোভাব হবে না। যেহেতু এটা নিয়ে কমিশনের সাথে এখনো আলোচনা করিনি। তাই এখনই বলা যাবে না। আমাদের কী মনোভাব।

জনগণ তো চায় নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হোক। কমিশন কি জনগণের দিকটা বিবেচনা করবে না কি সাংগঠনিকভাবে নির্বাচন কমিশন যেটা সঠিক মনে করে সেই সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করবে- এর জবাবে নূরুল হুদা বলেন, সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করব। কারণ জনগণ কিভাবে বলেন সেটা তো পরিমাপ করার কিছু সেই আমাদের কাছে। পরিমাপ করে তো বলতে পারি না যে কত সংখ্যক জনগণ চায় আর কত সংখ্যক জনগণ চায় না। সেটা একটা দিক আছে জনগণের কথা আমরা শুনি, আমরা বিবেচনা করি। তবে যে সিদ্ধান্ত আমরা নেব, সেটা কিন্তু পুরোপুরি কমিশনের সিদ্ধান্ত।

এর আগে গত সোমবার নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, আগামী নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে। তবে কোন প্রক্রিয়ায় হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি। পরদিন গতকাল মঙ্গলবার সিইসি বাসসকে বলেছিলেন, নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হয়নি।

নির্বাচন কমিশনারদের এ ধরনের বক্তব্যে তাদের মধ্যে বিভক্তি ফুটে উঠছে কি না এ ধরনের প্রশ্নের জবাবে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, বিভক্তির কারণ নেই। আপনারা (সাংবাদিক) নাছোড়বান্দা লোক। শুনতে চান, উনি (মাহবুব তালুকদার) হয়তো বলেছেন। উনি (মাহবুব) কিন্তু বলেছেন, এটা কমিশনের সিদ্ধান্ত না। নিজ সহকর্মীর বক্তব্যের সাথে একমত পোষণ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, মাহবুব তালুকদার মনে করেন, নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করার প্রয়োজন হবে, এটা তার ব্যক্তিগত মত। কমিশনের সভার বরাত দিয়ে তিনি একথা বলেননি, যোগ করেন সিইসি।

সংলাপের পর আপনারা রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন করতে যাচ্ছেন। জাতীয় নির্বাচনের আগে রংপুরের মধ্য দিয়ে জাতিকে কি কোনো বার্তা দেবেন- এ ব্যাপারে তিনি বলেন, অবশ্যই আমাদের প্রতিটি নির্বাচন সিটি করপোরেশন নির্বাচন তো বটেই, অন্যান্য নির্বাচনও আমরা একেবারেই নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করব। জাতীয় নির্বাচনে যাতে মানুষের মধ্যে, ভোটারদের মধ্যে আমাদের প্রতি আস্থার অবস্থান সৃষ্টি হয়, আমরা সেজন্য অবশ্যই কাজ করে যাব ও যাচ্ছি।

সেই বার্তাটা কি রংপুর দিয়ে আসবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেই বার্তা তো শুরু হয়ে গেছে। কুমিল্লা থেকে এসেছে। অন্যান্য নির্বাচন যেগুলো করেছি জাতীয় পর্যায়ে দুটি নির্বাচন করলাম এবং ভবিষ্যতে যে নির্বাচনগুলো করব, রংপুর সিটি করপোরেশনসহ সবগুলো নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা সেই বার্তাগুলো পৌঁছে দিতে চাই।

রংপুরে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে। প্রার্থীরা যাতে আচরণবিধি মেনে চলেন সেই ব্যাপারে কমিশন কী বার্তা দেবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু দলীয়ভাবে নির্বাচন হবে, সেহেতু দলের এবং দলীয় প্রার্থীদের আচরণ আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আচরণবিধি তারা মেনে চলবে এবং চলেছে। আমরা অত্যন্ত আনন্দের সাথে বলতে পারি যে, প্রার্থীগণ নির্বাচনী আচরণবিধি বিধান মেনে চলেছে এবং ভবিষ্যতে তারা মেনে চলবেন এটা আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন।

রংপুর নির্বাচন নিয়ে যাতে কোনো বিতর্কের সৃষ্টি না হয়, সেজন্য স্থানীয় এমপি, নেতা ও প্রশাসনকে আপনারা কী পরামর্শ দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ১৯ তারিখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেন্দ্রীয় পর্যায়ে যারা আছেন তাদেরকে নিয়ে একটা মিটিং করব। আমরা রংপুরে গিয়ে প্রার্থীদের সাথে কথা বলব। যারা নির্বাচন পরিচালনা করবেন তাদের সাথে সভা করব। একাধিকবার তাদের সাথে আমরা মিলিত হবে। এর মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনের যে বার্তা তা পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করব।