Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪। শুক্রবার , ১৭ নভেম্বর, ২০১৭: গত তিন মাসে দীর্ঘদিনের বন্যার কারণে উৎপাদন কমে যাওয়ায় চালের দাম ভয়াবহ হারে বেড়েছে। এই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষজনকে। বিশেষজ্ঞরা জানান, এই উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাবে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বৃহস্পতিবার জানায়, বাংলাদেশে গত আর্থিক বছরের তুলনায় এই বছরে খাদ্য উৎপাদন ৯.৪৩ লাখ মেট্রিক টন কমে গিয়েছে।

হাওর অঞ্চলে অতিরিক্ত বন্যা হওয়ার ফলে বোরো ধানের ফলন নষ্ট হওয়াতে এই বছর চালের উৎপাদন ৯.০৪ লাখ মেট্রিক টন কমে যায়।

২০১৬ সালের তুলনায় এই বছরে গমের উৎপাদন ৩৭ হাজার টন কমে গিয়েছে।

রাজধানী ঢাকায় একটি সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য দেওয়ার সময় পরিসংখ্যান এবং তথ্য বিভাগের সচিব কেএম মোজাম্মেল হক জানান, গত আর্থিক বছরে ৩.৪৭ কোটি মেট্রিক টন চাল উৎপাদন করা হয়েছিল, তবে এই বছর এটি কমে ৩.৩৮ কোটি মেট্রিক টনে গিয়ে দাঁড়ায়।

এই ফলন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চাল সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেয়, এবং এর জন্যে স্থানীয় বাজারে চালের দাম প্রতি কিলোগ্রামে ২০ টাকা করে বেড়ে যায়।

এই অতিরিক্ত দাম কমাতে খাদ্য অধিদপ্তর সরবরাহ বাড়াতে প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছ থেকে চাল আমদানি করার সিদ্ধান্ত নেয়, এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চালের ওপর সকল কর উঠিয়ে নেয়।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, চালের দাম কমাতে এই পদ্ধতিগুলো তেমন কার্যকর নয়।

কৃষি অর্থনীতিবিদ জাহাঙ্গীর আলম খান এই চালের সরবরাহ ঘাটতির জন্যে সরকার কর্তৃক অকার্যকর খাদ্য ব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেন।

তিনি বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয় এই দুর্যোগের কারণে ফসলের ক্ষতির মূল সংখ্যা নির্ণয় করতে ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের কাছে যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্য মজুদ ছিল না যা দিয়ে তারা এই মূল্য বৃদ্ধি কমিয়ে আনতে সক্ষম হবে।

বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আব্দুল হামিদ বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি সাধারণ মানুষকে ক্ষতিগ্রস্থ করছে এবং ব্যবসায়ীদেরকে সাহায্য করছে।

বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছে, এই খাদ্য উৎপাদন কমে যাওয়ায় উচ্চ আয়ের মানুষরাও প্রভাবিত হতে পারে।

এই দাম বৃদ্ধির ফলে দারিদ্র বিমোচনের হারও কমে এসেছে। ২০১০ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ১.২ শতাংশ হারে দারিদ্র বিমোচন হচ্ছে, যেখানে ২০০৫-২০১০ সালে এই হার ছিল ১.৭ শতাংশ। এই উচ্চমূল্যের কারণে ধনী এবং গরীবের মধ্যকার তফাত আরও বেড়ে চলছে। এবং এই খাদ্য উৎপাদন কমে যাওয়ায় দরিদ্রাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। সূত্র : নিউ এইজ