খােলা বাজার২৪। রবিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৭: বাংলাদেশের ২য় রপ্তানি আয়ের খাত চামড়া শিল্প। বর্তমানে এই শিল্পটি ক্রান্তিকালীন সময় পার করছে। যদিও এই শিল্পকে ঘিরে রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা। সংশ্লিষ্টরা বলছে, কারখানার আধুনিকায়ন ও সরকারের সহযোগীতায় বিশ্বের অন্যতম চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির দেশ হতে পারে বাংলাদেশ।
চামড়া বাজার নিয়ে গবেষণায় দেখা যায়, বর্তমানে বিশ্ববাজারে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের বাজার প্রায় ২২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২১ সালে যা বৃদ্ধি পেয়ে ২৭১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছাতে পারে। আর এই শিল্পের বড় যোগানদাতা দেশ চীন। এছাড়া, মিশর, তুরস্ক, আর্জেন্টিনা, পাকিস্তান ও ভারত এই পণ্যের বৃহৎ যোগানদাতা হিসেবে পরিচিত।
চামড়া গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, এই শিল্পটি বাংলাদেশের ২য় রপ্তানি আয়ের উৎস হলেও বিশ্ববাজারে তার দখল মাত্র .৪৬ শতাংশ। এর অন্যতম কারণ, অদক্ষ জনবল, নতুন পণ্য উদ্ভাবনের অভাব, পণ্যের গুণগত মান না থাক এবং প্রধান কাঁচামাল ‘কাঁচা চামড়া’ পাচার হওয়া। এছাড়া ক্রেতা দেশগুলোর সাথে বাণিজ্য সম্পর্কের ঘাটতির কারণে এগোতে পারছে না দেশটি। প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে পারলে এই শিল্পটি বাংলাদেশের জন্য বড় রপ্তানি আয় এনে দিতে পারবে।
গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশের চামড়া শিল্পের উপর থেকে একটা ঝড় বয়ে গেছে। এতে রপ্তানিতে সাময়িক কিছু সমস্যা হলেও আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে চামড়া শিল্পকে এগিয়ে নিলে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা আরো বাড়বে। এছাড়া প্রধান যোগানদাতা দেশ চীন চামড়া শিল্প থেকে সড়ে আসায় অন্য দেশগুলো এই বাজার লুফে নিবে। বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ও সরকারের যৌথ প্রচেষ্টায় নতুন বাজার দখল করা সম্ভব বলে মনে করে তারা। বর্তমানে এই শিল্পের জন্য রপ্তানি ভর্তূকি দিচ্ছে সরকার। ইতিমধ্যে জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জাপানের মত দেশে বাংলাদেশের চামড়া সমাদৃত হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের মতে, বর্তমানে দেশের চামড়া শিল্পের আধুনিকায়নের জন্য সকল কারখানাকে হাজরীবাগ থেকে সাভারে স্থানান্তর করায় অনেকই এখনো প্লট পায়নি। সময়ের অভাবে অনেকেই এখনো উৎপাদনে যেতে পারেনি। এর প্রভাব রপ্তানিতে পরেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৪ মাসে এই খাতে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে অর্থবছর শেষে আশানুরুপ প্রবৃদ্ধি হবে।
চামড়া ব্যবসায়ী টিপু সুলতান ভুঁইয়া জানান, দেশের চামড়া শিল্প ক্রান্তিকাল সময় পার করলেও সামনে উজ্জল সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। বিশ্বের ব্যবসায়ীদের সাথে নেটওয়ার্ক তৈরি জন্য দেশে চামড়া নিয়ে এক্সপো হচ্ছে। এছাড়া আমরাও বিভিন্ন দেশের এক্সপোতে অংশগ্রহণ করে অভিজ্ঞতা ও বাজার ধরার চেষ্টা করছি। বর্তমানে এই খাতের প্রবৃদ্ধি অনেক ভালো। প্রধানমন্ত্রী আরো ২ টি চামড়া শিল্প নগরী করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এভাবে কারখানার আধুনিকায়নের ফলে সামনে রপ্তানি কয়েকগুণ বাড়বে।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফয়েল আহমেদ বলেন, চামড়া শিল্পের জন্য অর্থনৈতিক জোনে আলাদা প্লট বরাদ্ধ দেয়া হবে। আমাদের লক্ষ্য ২০২১ সালে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি আয়। সরকার সেই অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছে।