Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪। শনিবার , ২৫ নভেম্বর, ২০১৭: সারা পৃথিবীতে প্রতি সেকেন্ডে দুইজন মানুষের মৃত্যু হয়। আর একদিনে মৃত্যু হয় দেড় লাখেরও বেশি মানুষের। সেই হিসাবে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি মানুষ মারা যায় ১ বছরে। আর এইটুকু বলতে বলতে প্রায় বহু মানুষের মৃত্যু হয়ে গেছে। সূত্র- বিবিসি বাংলা

সম্প্রতি চালানো এক গবেষণায় দেখা গেছে, এসব মৃত্যুর অর্ধেক অর্থাৎ বছরে প্রায় আড়াই কোটি মানুষের মৃত্যু হয় শুধুমাত্র ব্যথানাশক ঔষুধ মরফিনের অভাবে।দরিদ্র দেশগুলোতে এই মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। বৃটেনে বিজ্ঞান বিষায়ক সাময়িকী ‘দ্যা ল্যান সেট’র উদ্যোগে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়। সেখানে দেখা গেছে ধনী দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে মরফিনের অপব্যবহার খুব বেশি। আর নাইজেরিয়ার মতো দেশে এই ব্যাথানাশক খুবই দুঃষ্প্রাপ্য।

ব্যথানাশক ঔষধ মরফিনের ব্যবহার সম্পর্কে বিবিসি বাংলার এক সাক্ষাৎকারে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিন্সিপাল ও মিডিসিন বিভাগের প্রধান প্রফেসর খান আবুল কালাম আজাদ বলেন, মরফিন একটা প্রধান ওষুধ যাকে আমরা নারকোটিক এনালজেটিক বলি। যা নার্ভস সিস্টেমে কাজ করে এবং অপিয়ন থেকে তৈরি হয়। তাই এটাকে আমরা অপিয়ড বলে থাকি। পপিকার্সে যে সমস্ত নির্যাস থাকে সেগুলোর জুস থেকে মরফিন তৈরি হয়।

কী ধরণের চিকিৎসায় মরফিন ব্যবহার করা হয়?

এই প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, মরফিন যখন প্রথম আবিষ্কার হয় তখন এটি দুইভাবে ব্যবহৃত হতো। একটি হচ্ছে স্বল্পমেয়াদী ব্যথানাশক এবং দীর্ঘমেয়াদি ব্যথানাশক ওষুধ। এটি অপারেশনের সময়ও ব্যবহার করা হয় এবং অপারেশনের বাইরেও ব্যবহার করা যায়। এখন বর্তমান পৃথিবীতে যে কয়েকটি কাজে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে তারমধ্যে হার্ট-অ্যাটাক বা মায়ো কার্ডিয়ান ইনফেকশন নিয়ে যখন রোগীরা যায় তখন এই ব্যথানাশক মরফিন সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে লিভারপেইন এর জন্যও মরফিন ব্যবহার করা হয়। ক্যান্সারে ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী ব্যাথানাশক হিসাবে যখন পেলিয়িটিক কেয়ারে কথা বলা হয় যাকে আমরা নিরাময় করতে পারবো না কিন্তু তাকে একটু আরাম দিতে পারবে- সে সময় মরফিন ব্যথানাশক হিসাবে ক্যান্সার পেইনে ব্যবহার করা হয়।

সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, সারা পৃথিবীতে বছরে আড়াই কোটি মানুষের মৃত্যু হয় ব্যাথার কারণে আর এর জন্য দায়ী করা হচ্ছে মরফিনের দুষ্প্রাপ্যতা। এটার কারণ কী?

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কিছু কিছু ওষুধ রয়েছে যেগুলো মানুষের ভালোর জন্য আবিষ্কার হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর অপব্যবহার ও অপপ্রয়োগ হয়। এটা এমন একটা ইন্ড্রাস্টটিজে চলে গেছে যেটা মানুষের জন্য একটা ক্ষতিকারক দিক তৈরি করেছে। মরফিন খাওয়ার পরে ৩-৭ ঘন্টা যে ঘুমাচ্ছন্নভাব প্রথমে একটু আনন্দ অনুভাব করে পরে একটা ঘোরের ভিতরে চলে যায়। আর মরফিন দিয়ে মানুষ যেন নেশা না করতে পারে এইজন্য মরফিন দুঃষ্প্রাপ্য হয়ে গেছে। বাংলাদেশে সরকারিভাবে ওষুধটি তৈরি করা হয়। পরে সরকার যে ফার্মেসিগুলো ঠিক করে দেয় শুধুমাত্র সেগুলোতে মরফিন দেয়া হয়। রেজিস্ট্রি ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী মরফিন কেনা যাবে। অন্যথায় কেউ কিনতে পারবে না।

খরচের দিক থেকে এটা কী ব্যয়বহুল?

এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার এটি স্বল্পমূল্যে বিক্রি করে। এটা ইনজেকশন ও টেবলেট ছাড়া সাপোসিটার ফর্মেও পাওয়া যায়।

মরফিনের যেহেতু ক্ষতিকর দিক আছে তাহলে বিকল্প হিসাবে অন্যকোন ব্যথানাশক ওষুধ কী বিজ্ঞানে আবিষ্কার হয়নি?

এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মরফিনের যে ম্যাকানিজম এ্যাকশন অত্যন্ত কার্যকরী।