খােলা বাজার২৪। মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৭: দি ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ ও নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন মহীউদ্দীন খান আলমগীর। ঋণ কেলেঙ্কারি ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে চাপের মুখে থাকা আওয়ামী লীগের এই নেতা ও সাবেক মন্ত্রী পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন। বাংলাদেশ ব্যাংক তাঁর পদত্যাগের বিষয়টি এক বিজ্ঞপ্তিতে নিশ্চিত করেছে।
এছাড়া অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতীও পদত্যাগ করেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তাদের পদত্যাগপত্র পরিচালনা পর্ষদ গ্রহণ করেছে।
সোমবার রাতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ফারমার্স ব্যাংকে বেশ কিছুদিন ধরে তারল্য ঘাটতি বিরাজ করায় এবং আর্থিক সূচকসমূহের অবনতি ঘটায় জনগণের মধ্যে দ্বিধা/সংকোচ তৈরি হয়। লক্ষ্য করা যাচ্ছে, বেশ কিছু আমানতকারী ব্যাংক থেকে অর্থ উত্তোলনের চেষ্টা করার ফলে ব্যাংকটির সমস্যা ঘনীভূত হচ্ছে। বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরে আসার পর প্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রকমূলক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ও নিরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান পদত্যাগ করেছেন। তাঁদের পদত্যাগপত্র পর্ষদ কর্তৃক গৃহীত হয়েছে। নতুন চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে। সব কমিটি পুনর্গঠিত হয়েছে। ব্যাংকটির এমডির বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা লঙ্ঘনের জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। পুনর্গঠিত পর্ষদ ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা উন্নয়নে সর্বাত্মক পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন মর্মে নিশ্চয়তা প্রদান করেছে।’
এর আগে রবিবার রাতে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে এম শামীমকে অপসারণে নোটিশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৬ ধারা অনুযায়ী তাঁকে এ চিঠি দেয়া হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, নিয়মের বেশি ঋণ দিয়েছে ফারমার্স ব্যাংক। এসব ঋণ এখন আদায়ও হচ্ছে না। এতে ব্যাংকটিতে বড় ধরনের তারল্যসংকট তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে, সাধারণ গ্রাহকের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করতে গিয়ে খুব বেশি সাড়া পাচ্ছে না ব্যাংকটি। উল্টো আমানত তুলে নেয়ার চাপ বাড়ছে দিন দিন।
এ পরিস্থিতিতে ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করা নতুন এ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে। গত সেপ্টেম্বর শেষে ফারমার্স ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ৩৭৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ, বিতরণ করা ঋণের ৭ দশমিক ৪৫ শতাংশই খেলাপি। মার্চ-জুন সময়ে ব্যাংকটি খেলাপি গ্রাহকদের থেকে মাত্র সাত কোটি টাকা আদায় করেছে। শীর্ষ ১০ খেলাপি গ্রাহকের কাছেই ব্যাংকটির পাওনা ১৩৪ কোটি টাকা।