খােলা বাজার২৪। মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৭: নরসিংদী প্রতিনিধি মো: রাসেল মিয়া: নরসিংদী এখন দূষিত ভর্তি এক সিলিন্ডার। অথচ, ক্ষমতাসীনদের চোখে কখনই নরসিংদীর যন্ত্রণাদায়ক এ দৃশ্যগুলো চোখে পড়ে না, যা অতি দুঃখজনক। বর্তমানে বায়ূ দূষণে ঢাকা থেকে কোন অংশে কম নয় নরসিংদী। সারা বছর সড়ক মেরামত, নির্মান সামগ্রী, ইটভাটার ধোয়া আর ধুলা এর মূল কারণ। এ ছাড়া আছে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা।
বণ্যপ্রাণীর চেয়েও মানুষের জীবনের নিরাপত্তা এখন ৮০ শতাংশ কম। নানাভাবে মানুষ মরছে। জীবন- বিনাশক কষ্ট কাকে বলে সেটা ভুজনদেরই উপলদ্ধি করা সম্ভব। মাঝে মধ্যে আমার মতো অনেকেই বাস থেকে নেমে বাসার পথে হাটি। বায়ু দুষণের বহুমাত্রিক যন্ত্রণায় ইনহেলার ব্যবহার করি শাস যন্ত্রটাকে ঠিক রাখার জন্য। অধিকাংশ মানুষের পকেটেই থাকে- এই বিশেষ যন্ত্রটি। বাংলাদেশের জলবায়ূ তথা প্রকৃতির যে পরিবর্তন তা মানব সৃষ্ট।
ছয় ঋতু বইপুস্তকে আছে বাস্তবে পলাতক মানুষের অত্যাচারের কারণে। ¯্রষ্টার সৃষ্টির ওপর এমন নির্যাতন অতীতে এতটা বিধ্বংসী রূপে দেখা যায়নি। নরসিংদীতে এখন জীবন্ত প্রবাহমান খাল চোখে পড়ে না। খাল নদী পুকুর জলাশয় না থাকলে ধুলোবালি বাড়বে। প্রকৃতির বিরুদ্ধে কর্মযজ্ঞ যত বেশি চলতে থাকবে, তত বেশি প্রকৃতি রিভোল্ট করবে অর্থাৎ বিরূপ রূপ ধারণ করবে। এটা প্রকৃতির স্বভাবধর্মী আচরণ বা চরিত্র। পানির স্বাভাবিক গতিকে রুদ করলে বর্ষা মৌসুমে শহর বন্দর নগর ডুবিয়ে দিবে। নদী ছোট হচ্ছে, শুকিয়ে যাচ্ছে, দখল হয়ে যাচ্ছে।
মরুময় ইট-পাথরের দেশে ধুলা, ধোয়াঁ এসব বাড়বে- প্রকৃতি বিজ্ঞান তাই বলে। পরিবেশ নিয়ে দীর্ঘ বছর ধরে কাজ করতে গিয়ে এসব বিষয়ে প্রত্যক্ষ জ্ঞান অর্জন সম্ভব হয়েছে। বায়ু দূষণ কী পরিমান জীববৈচিত্রের জন্য হুমকি হয়ে দাড়াবে তা ইতোমধ্যে আমরা অনুধাবন করছি। নরসিংদীর চেহারা কিছুদিন আগেও এরকম দূষণীয় অবস্থায় ছিল না, যে চেহারা আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি। দূষণের বিষক্রিয়া বায়ু, পানি, মাটি, আলো এবং খাদ্যকে কীভাবে প্রাণী জগতের জন্য সর্বনাশের পথে ঠেলে দিচ্ছে- হাসপাতালের আধিক্য এবং রোগীর ভিড় দেখে তা সহজেই বোঝা যায়না আমরা বিষের সাথে বসবাস করছি।
একটি দেশের গাছপালা, প্রাণিকুল, পাহাড়-পর্বত, রাস্তাঘাট, ঘর-বাড়ি, চিকিৎসা, আবহাওয়া ও জলবায়ু থেকে শুরু করে যা কিছু রাষ্ট্রে বিদ্যমান রয়েছে সবকিছুরই একটি সুশৃংখল ব্যাধিমুক্ত পরিবেশ থাকা একান্ত প্রয়োজন। পরিবেশের মধ্যে অনিয়ম যত বেশি থাকবে রাষ্ট্র তত বেশি পিছিয়ে থাকবে।