Tue. May 6th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪। বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৭: অর্থপাচারের অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে তদন্ত করছে সৌদি আরব। বৃহস্পতিবার একাধিক গণমাধ্যমে সৌদি আরবের তদন্তের কথা উঠে এসেছে। আর একই অভিযোগে আরও দুই সাবেক প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানের নওয়াজ শরীফ ও ইয়েমেনের সাদ আল হারিরির বিরুদ্ধে তদন্ত করছে সৌদি আরব।

এর আগে একাধিক প্রতিবেদনে সৌদি আরবে দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে জিয়া পরিবারের নাম এসেছে বলে জানা যায়। ১১ জন যুবরাজ সহ আটক ২০১ জনের মধ্যে বেশ ক’জন টাকার উৎস সম্পর্কে বিদেশি রাষ্ট্র থেকে আসা অবৈধ অর্থের কথা বলেছেন। তাঁরা বলেছেন, সৌদি আরবে বিনিয়োগ নিরাপদ ভেবে তাঁরা যুবরাজ বা ব্যবসায়ীদের কাছে বিনিয়োগের জন্য টাকা দিয়েছেন। বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদরাই মূলত তাঁদের অবৈধ অর্থ সৌদি প্রভাবশালীদের কাছে বিনিয়োগের জন্য গচ্ছিত রাখতেন। ওই অর্থ সৌদি প্রভাবশালীরা বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতো। যাঁরা তাঁদের কালোটাকা যুবরাজদের দিতেন, তাঁরা মাসিক ভিত্তিতে লভ্যাংশ পেতেন। যুবরাজ সহ সৌদি প্রভাবশালীদের আয়ের উৎস সম্পর্কে এতকাল প্রশ্ন করা হতো না। যেভাবে পারতো টাকা রাখতো। সম্প্রতি সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান সৌদি আরবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেন। ৪ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে ১১ জন সৌদি প্রিন্স সহ ২০১ জন প্রভাবশালীকে আটক করা হয়েছে। দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে এক হাজার ৭০০ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। এখন আটকদের জিঙ্গাসাবাদ চলছে। জিঙ্গাসাবাদে অন্তত দুজন বলেছেন, তাঁদের অন্তত ১০ কোটি রিয়াল (বাংলাদেশি টাকায় ২৩০ কোটি টাকা) জিয়া পরিবারের সম্পত্তি।

বিশ্বের অন্যতম ধনী, সৌদি প্রিন্স আল-ওয়ালিদ বিন তালাল বলেছেন, তাঁর সম্পদের অর্ধেকই বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদদের অবৈধ অর্থ। নিরাপদ ভেবে তাঁরা তাঁর কাছে বিনিয়োগের জন্য দিয়েছেন। তালাল বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানিতে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেছেন। ৪ নভেম্বর তাঁকে আটক করা হয়েছে। জিঙ্গাসাবাদে তালাল বলেছেন, পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ, বেনজির ভুট্টোর স্বামী আসিফ আলী জারদারি, নওয়াজ শরিফ, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, তাঁর ছেলে তারেক জিয়া, তাঁর ভাই শামীম ইস্কান্দার তাঁর কাছে বিনিয়োগের জন্য অর্থ দিয়েছেন। তিন মাস অন্তর অন্তর বেগম জিয়াকে বিনিয়োগের লভ্যাংশের টাকা দেওয়া হয়। তাঁর ছেলে তারেক রহমানকে বিনিয়োগের লভ্যাংশ দেওয়া হয়। জিয়া পরিবারের বাইরে বেগম জিয়ার সাবেক একান্ত সচিবেরও বিপুল অর্থ তালাতের অ্যাকাউন্টে জমা আছে।

আল-ওয়ালিদ বিন তালাল ছাড়াও পেট্রোক্যামিকেল ব্যবসায়ী ইয়াহিয়া লতিফের কাছেও জিয়া পরিবারের বিনিয়োগ ১০ কোটি রিয়াল বা ২৩০ কোটি টাকা। এই টাকারও লভ্যাংশ বেগম জিয়া ৩ মাস অন্তর অন্তর সৌদি আরব থেকেই গ্রহণ করেন। এছাড়া সদ্য পদচ্যুত মন্ত্রী আদেল বিন ফিকাহর কাছে জিয়া পরিবারের সদস্যরা বিনিয়োগের জন্য অর্থ দিয়েছেন।

সৌদি আরবে জিয়া পরিবারের গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। এ কারণেই সৌদি আরবে বেগম জিয়া আলাদা মর্যাদা পাান। বেগম জিয়ার লগ্নী করা অর্থের দেখভাল করেন তাঁর একজন সাবেক একান্ত সচিব। তারেক জিয়ার অর্থ তিনি নিজেই দেখভাল করেন।

সৌদি দুর্নীতি বিরোধী তদন্তে দেখা যায়, জিয়া পরিবার ২০০১ থেকে ২০০৬ এর মধ্যে এই অর্থ বিনিয়োগ করেছে।