খােলা বাজার২৪। শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর , ২০১৭:ট্রানজিটের আওতায় প্রথমবারের মতো আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভোজ্যতেল গেল ভারতের ত্রিপুরায়। গতকাল প্রথম চালানে দুটি গাড়িতে সরাসরি ২৭.৫৭৬ মেট্রিক টন ভোজ্যতেল ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছে। প্রতি মেট্রিক টন ভোজ্যতেল থেকে মাশুল আদায় হয়েছে মাত্র ১৯২ টাকা।
আখাউড়া স্থলবন্দর কাস্টমস জানায়, গতকাল সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ আন্তর্জাতিক নৌবন্দর থেকে সড়কপথে দুটি গাড়িতে করে ট্রানজিট পণ্য ভোজ্যতেল আসে আখাউড়া স্থলবন্দরে। প্রয়োজনীয় কার ছাড়পত্র নিয়ে দুপুর সাড়ে ১২টায় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে গাড়ি দুটি সরাসরি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে চলে যায়। নির্ধারিত মাশুল আদায় হয় আশুগঞ্জ নৌবন্দরে। ভোজ্যতেল পরিবহনের দায়িত্বে থাকা মেসার্স আদনান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মালিক আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ভোজ্যতেলের প্রথম চালানে ৯ কেজি ওজনের ১৩৩৯টি কার্টন ও ১৫ কেজি ওজনের ১০৩৫টি টিন ভর্তি দুটি ট্রাকে করে মোট ২৭.৫৭৬ মেট্রিক টন ভোজ্যতেল গেছে ভারতে। আগামীকাল ভোজ্যতেলের দ্বিতীয় চালান যাবে ভারতে। পরে পর্যায়ক্রমে সব চালান চলে যাবে। আখাউড়া কাস্টমস সুপার এস কে বিশ্বাস জানায়, এই প্রথম ট্রানজিটের মাধ্যমে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভোজ্যতেল গেল ভারতে। আখাউড়া স্থলবন্দর কাস্টমস অফিস থেকে কার ছাড়পত্র নেয়ার পর ভোজ্যতেলবাহী দুটি গাড়ি সরাসরি চলে যায় ভারতের অভ্যন্তরে। আশুগঞ্জ নৌবন্দরে মাশুল আদায় হওয়ায় খুব সহজেই কারপাস নিয়ে ট্রানজিট পণ্য চলে যায় ভারতে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ট্রানজিটের আওতায় ইমাম গ্রুপ কলকাতার খিদিরপুর থেকে ২২০.৫৬৮ মেট্রিক টন ভোজ্যতেল নিয়ে ভারতের উইন্সশিপ সিপিং (রিহমংযরঢ় ংরঢ়রহম) এর এমবি শান্তিপুরী ডব্লিউডি-১৫৫৭ নামে একটি জাহাজ গত সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ আন্তর্জাতিক নৌবন্দরে নোঙর করে। বুধবার শুরু হয় এই পণ্যের লোড-আনলোড। ২২০.৫৬৮ মেট্রিক টন ভোজ্যতেলের মধ্যে প্রথম চালানে গতকাল গেল আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ২৭.৫৭৬ মেট্রিক টন। শুল্ক কর, সড়ক ও নৌবন্দর ব্যবহার খ্যাতে প্রতি মেট্রিক টন ভোজ্যতেল থেকে মাত্র ১৯২.২২ টাকা পেয়েছে বাংলাদেশ।
খরব নিয়ে জানা গেছে, ট্রানজিটের আওতায় আগামী ডিসেম্বর মাসে প্রথমবারের মতো টাটা লবণের একটি জাহাজ আসবে আশুগঞ্জে। লবণ থেকেও এই নিয়মে মাশুল আদায় হবে। ১৯৭২ সালে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তিতে ট্রানজিটের বিষয়টি উল্লেখ্য ছিল। এরপর ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় ট্রানজিটের বিষয়টি আবার আলোচনায় আসে। তবে ফি নির্ধারণ, অবকাঠামো দুর্বলতাসহ নানা সমালোচনার কারণে ট্রানজিট নিয়ে কেউ আর এগোয়নি। পরে ২০১৫ সালের জুনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরে এলে এই চুক্তি সংশোধন করে বাংলাদেশ। এরপর মাশুল নির্ধারণের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়।