খােলা বাজার২৪। মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর , ২০১৭:কুমিল্লার সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোয় বাড়ছে মানবপাচার এবং চোরাচালানসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের বড় একটা অংশ শিক্ষার সুযোগ থেকে ঝরে পড়া শিশু। আর নিজ গ্রামে স্কুল না থাকায় দূরের স্কুলের প্রতি আগ্রহ নেই এইসব ছাত্রছাত্রীদের। বরং বৈধ-অবৈধ পথে এক দুই পয়সা রোজগারে এসব কাজে জড়িয়ে যাচ্ছে তারা। সূত্র- যমুনা টিভি
সীমান্ত ঘেঁষা জনপদ ছয় গ্রাম। আর এই ওয়ার্ডে জনসংখ্যা প্রায় ৯ হাজার। এরকম প্রায় ৪টি ওয়ার্ডের শিক্ষার্থীদের জন্য সবচেয়ে কাছের যে স্কুল সেটিও প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে। আর এই দূরত্বের কারণে প্রতি বছরই ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। পাশাপাশি এই অঞ্চলে শিশু শ্রমিক এবং বাল্যবিবাহের সংখ্যাও বেড়ে যাচ্ছে।
গ্রামবাসীরা জানান, শিশুরা সারাদিন খেলাধুলা করে, স্কুলে যেতে চায় না। স্কুলগুলো দূরে হওয়ায় তারা আরও বেশি অমনোযোগী হয়ে পড়েছে লেখাপড়ায়। তাছাড়া এই কারণে তারা নানারকম অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে।
সীমান্ত এলাকা হওয়ায় নানা রকম উর্পাজনের সুযোগ পাচ্ছে শিশুরা এবং নিজের অজান্তে অনেকে পা রাখছে চোরাচালানের অন্ধ গলিতে। তাছাড়া মাদক হাত বদল আর সেবন দুইটিই নৈমেত্তিক ঘটনা। কিন্তু ঝরে পড়া শিশুরা ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়ছে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে।
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম টুটুল বলেন, শিশুরা যখন দেখে তার বাবা ফেন্সিডিলের ব্যবসা করে আর মা কোনো মতে সংসার চালায়, অথবা মা-বাবার মধ্যে প্রতিনিয়ত ঝগড়া হচ্ছে এগুলো দেখতে দেখতে শিশুরা খারাপ কাজে জড়িয়ে পড়তে বাধ্য হচ্ছে। কারণ তাদের পরিবারে সুস্থ পরিবেশ নেই।
কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রাশেদা আক্তার বলেন, মেয়ে শিক্ষার্থীরাও যারা সুবিধাবঞ্চিত ও শিক্ষাবঞ্চিত থাকে তারাও এক সময় মাদক চোরাচালানের কাজে জড়িয়ে পড়ছে।
কুমিল্লা জেলা শিক্ষা অফিসর মো. আব্দুল মজিদ বলেন, ড্রপ আউট ঠেকাতে নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলাসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। আর আমরা নির্দেশনা দিয়েছি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যখন পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করবে তখন যেন এই ফলাফলের কার্ডটি মায়েদের হাতে তুলে দেয়। আর এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জিপিএস হচ্ছে। আমাদের কুমিল্লায় জিপিএস কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। আমরা আশা করছি এর মাধ্যমে আমরা জানতে পারব কোথায় স্কুলের প্রয়োজন হবে।
সীমন্তে অপরাধ রোধে শিশু শিক্ষায় প্রণোদনামূলক উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ জনপ্রতিনিধি ও সচেতন নাগরিকদের।