Wed. May 7th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪। শুক্রবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৭: ঠান্ডা মানেই পিঠের ব্যথা। সঙ্গে জয়েন্ট পেন তো উপরি পাওনা। আর যদি আপনার বয়স ৫০ পরিয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে তা কথাই নেই! সেক্ষেত্রে ব্যথা যেন রোজের সঙ্গী হয়ে ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে এবং বাবা-কাকাদের বডি পেইন থেকে বাঁচাতে আদা খাওয়া শুরু করুন, দেখবেন দারুন ফল মিলবে!

কিন্তু বডি পেইনে সঙ্গে আদার কী সম্পর্ক মশাই? আছে বন্ধু সম্পর্ক আছে। তাই না এত কথা বলছি। আসলে বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে আদার অন্দরে উপস্থিত বেশ কিছু উপকারি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর প্রদাহ বা ইনফ্লেমেশন এত মাত্রায় কমিয়ে দেয় যে কোনও ধরনের ব্যথা কমতে সময়ই লাগে না।

শুধু তাই নয়, আর্থ্রাইটিসের ব্যথা কমাতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

প্রসঙ্গত, বেশ কিছু দিন আগে একদল বিজ্ঞানী আদার উপর একটি গবেষণা চালাচ্ছিলেন। সে সময় তারা খেয়াল করেছিলেন আদা খাওয়া মাত্র আমাদের শরীরে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড নামে একটি উপাদান তৈরি হতে শুরু করে, যা শরীরের প্রতিটি কোণায় পৌঁছে গিয়ে যন্ত্রণা কমাতে ব্যাপকভাবে সাহায্য করে থাকে। এই কারণেই তো আর্থ্রাইটিস রোগীদের নিয়মিত আদা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।

প্রসঙ্গত, নিয়মিত আদা খাওয়ার অভ্যাস করলে যে শুধু বডি পেইনই কমে, এমন নয়। সেই সঙ্গে আরও অনেক উপকার পাওয়া যায়। যেমন. . .

১. ব্রেন পাওয়ার বাড়ায়:

একাদিক গবেষণায় একথা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়ে গেছে আদায় উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং উপকারি ভিটামিন, সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে যাতে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমে না যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্মৃতিশক্তি বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে বুদ্ধিরও বিকাশ ঘটে চোখে পরার মতো।

২. ওজন হ্রাস করে:

অতিরিক্ত ওজনের কারণে যদি চিন্তায় থাকেন, তাহলে আজ থেকেই আদা খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন দারুন উপকার মিলবে!

আসলে আদার অন্দরে থাকা একাধিক উপকারি উপাদান ক্ষিদে কমিয়ে দেয়। ফলে খাওয়ার পরিমাণ কমতে থাকে। সেই সঙ্গে শরীরে জমে থাকা অতিরিক্তও মেদও ঝরতে শুরু করে। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে আসতে একেবারেই সময় লাগে না।

৩. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে:

বেশ কিছু কেস স্টাডি করে দেখা গেছে নিয়মিত সকাল বেলা যদি এক গ্লাস করে আদা জল পান করা যায়, তাহলে পাকস্থলির কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে পাচক রসের ক্ষরণ বেড়ে যেতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বদ-হজম এবং গ্যাস-অম্বলের সমস্যা কমতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, গর্ভাবস্থায় সকাল সকাল যদি এই পানীয়টি খাওয়া শুরু করতে পারেন, তাহলে মর্নিং সিকনেসের মতো সমস্যা একেবারে কমে যায়।

৪. ডায়াবেটিস রোগকে দূরে রাখে:

নিয়মিত আদার সঙ্গে অল্প করে লেবুর রস মিশিয়ে পান করার অভ্যাস করলে একদিকে যেমন কিডনির কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, তেমনি শরীরে জিঙ্কের ঘাটতি দূর হতে শুরু করে। এই খনিজটি ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা এত মাত্রায় বাড়িয়ে দেয় যে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না।

৫. ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়:

আদায় উপস্থিত রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন, যা ত্বকের অন্দের জমে থাকা টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়। সেই সঙ্গে কোলাজেনের উৎপাদনও বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বকের সৌন্দর্য বাড়তে শুরু করে। প্রসঙ্গত, এই মশলাটিতে থাকা ভিটামিন এ এবং সি চুলের সৌন্দর্য বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই ত্বকের উপর বয়সের ছাপ না পরুক, এমনটা যদি চান, তাহলে নিয়মিত আদা খেতে ভুলবেন না যেন!

৬. পেশীর কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়:

সারা সপ্তাহ দৌড়-ঝাঁপ করে কাজ করতে করতে সপ্তাহান্তে আমাদের শরীরের প্রায় প্রতিটি পেশীই বেশ ক্লান্ত হয়ে পরে। এই সময় তাদের চাঙ্গা করার জন্য কি করা যেতে পারে? কিছুই নয়, এমন পরিস্থিতিতে এক গ্লাস আদা জল পান করে ফেলুন। এমনটা করলে দেখবেন নিমেষে শরীর চাঙ্গা হয়ে উঠবে। আসলে আদা, পেশীর কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই কারণেই তো বডি বিল্ডারদেও আদা জল খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।