খােলা বাজার২৪। সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৭: আজ বিশ্ব অভিবাসী দিবস। বাংলাদেশেও দিনটি পালন করা হচ্ছে। সরকারি হিসেবে পৃথিবীর নানা দেশে কাজ করছেন প্রায় দেড় কোটি বাংলাদেশি শ্রমিক। বাংলাদেশের প্রায় ৮৫ শতাংশ অভিবাসী শ্রমিকই আরব দেশগুলোতে যায়। কিন্তু বাণিজ্যিক অভিবাসীর জন্য বাংলাদেশ সম্প্রতি নতুন গন্তব্যের খোঁজ করছে। দক্ষিণ কোরিয়া, হংকং, জাপান ও রাশিয়াকে তেমনই গন্তব্য হিসেবে দেখা হচ্ছে।
নতুন গন্তব্য দেশে পৌঁছাতে কোন ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ? এ প্রসঙ্গে বিবিসি বাংলার সাথে কথা বলেছেন সুমাইয়া ইসলাম। যিনি অভিবাসন নিয়ে কাজ করছেন।
তিনি বলেন, নতুন গন্তব্য দেশের জন্য বাংলাদেশের সরকার নিজেও গবেষণা করছে। এনজিও এবং বিভিন্ন সংস্থা থেকে নতুন গন্তব্য দেশের জন্য গবেষণা করা হয়েছে। এখন এ গবেষণার ফলাফলের প্রেক্ষিতে দেখা যাচ্ছে, রাশিয়াতে নতুন করে লোক পাঠানো শুরু হয়েছে। জাপানও আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ইতোপূর্বে অল্প কিছু শ্রমিক ওখানকার ভাষা শিখে কাজ করতে গিয়েছে এবং তাদের কাজটা শুরু হয়েছে।
শুরু করা কাজের তরাণ্বিত করার জন্য বাংলাদেশ কোন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে?
এমন এক প্রশ্নের জবাবে সুমাইয়া ইসলাম বলেন, এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য প্রথমত আমাদের কারিগরি প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। সেটা সরকারি, বেসরকারি সেক্টর এবং এনজিওতে যারা আছেন তারা প্রত্যেকে কারিগরি প্রশিক্ষণ বৃদ্ধির জন্য এবং গন্তব্য দেশে পৌঁছানোর লক্ষ্য পর্যায়ান্বিত ব্যবস্থা করার কাজগুলো চলছে। আর সে সঙ্গে আরেকটা দেখা যাচ্ছে সেক্টর ডাইভারসিফাইড সেক্টরগুলোতে খোঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। শুধুমাত্র আগে লো স্কিল শ্রমিকদের পাঠানো হতো আর এখন হাই স্কিল শ্রমিক পাঠানোর চেষ্টা করা হচ্ছে এবং যে যে পেশায় যাবে সে পেশায় তাকে দক্ষতার সঙ্গে তৈরি করে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের জন্য সম্ভাব্য দেশ হিসেবে রাশিয়া ও জাপান ছাড়াও এ রকম নতুন দেশ বাংলাদেশের জন্য আর কোনগুলো হতে পারে?
এমন এক প্রশ্নের জবাবে সুমাইয়া ইসলাম বলেন, ইউরোপ দেশগুলোর জন্য কেয়ার ডিপার্টমেন্টের দরকার সেক্ষেত্রে কেয়ার ডিপার্টমেন্টে এ প্রশিক্ষণ ও প্রাইভেট নাসিং হোমগুলোকে বৃদ্ধি করা হয়েছে অলরেডি এবং নার্সদের ডিমান্ডও আছে। সেক্ষেত্রে নার্সদের আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড করার জন্য যে কারিকুলাম উন্নয়ন করার কথা সেটার কাজও চলছে। আর পাশাপাশি হংকং এবং সিঙ্গাপুরে মার্কেটে মেয়েদের এবং ফ্যাক্টরিগুলোতে কাজ করার জন্য। নতুন বাজার খোঁজা হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার নিজেও ৫২ টি দেশে ডেসক্রিপশন কান্ট্রি তারা মার্কেট খোঁজার বড় একটা গবেষণার কাজ করছে। আর আমাদের সংগঠন বলেছে নিজেও ইউনিও এর সাথে মার্কেট কাজ করছে। ডাইভারসিফাইট স্কিল এবং অন্যান্য নতুন বাজার দেখার কাজ করছে।
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত যত শ্রমিক আছে তারমধ্যে ৮৫ শতাংশ শ্রমিক মধ্যপ্রাচ্যে দেখা যায়। এর বাইরে বাজারটা অন্যদিকে সরিয়ে নেয়াটা বা নতুন দেশ খোঁজা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
এমন প্রশ্নের জবাবে সুমাইয়া ইসলাম বলেন, গত নভেম্বর মাসে মেক্সিকোতে যে প্রোগ্রামটা হলো গ্লোবাল কমপ্রোটারমাইন্ড মাইগ্রেশন প্রোগ্রামটা হলো সেখানে ডেসটিনেশন কান্ট্রি ছাড়াও অনেকগুলো দেশ এসেছিল। তারা বলেছিল যে, আগে শুধুমাত্র আনস্কিল ওয়ার্কার দরকার ছিল কনস্ট্রাকশন বিল্ড আপ করার জন্য। আমাদের দেশগুলোর কনস্ট্রাকশন হয়ে গেছে। এখন এগুলো মেইনটেইন্স করার জন্য স্কিল লোক দরকার। এ জায়গাতে কনস্ট্রাকশনের কাজে প্রচুর শ্রমিক গিয়েছে। এখন সেক্ষেত্রে তাদের স্কিল লোক দরকার। যদি ওসব দেশে আনস্কিল লোক না যায় তাহলে অন্য দেশ থেকে তারা লোক নিচ্ছে। সেগুলো দেখতে গেলে দেখা যাচ্ছে নার্সিং, কেয়ার ডিপার্ট একটা সেক্টর, হোটেল ম্যানেজম্যান্টে রয়ে গেছে, শপিং সেন্টার গুলো রয়ে গেছে সেখানে মেয়েরা কাজ করতে পারে। এ সেক্টরগুলোতে ছেলে মেয়েরা সবাই কাজ করতে পারে।
সূত্র – বিবিসি বাংলা