Wed. May 7th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪।সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৭: নরসিংদী প্রতিনিধি মো: রাসেল মিয়া: দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে নরসিংদী কারাগারে বন্দিদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সমাজ ও দেশের বোঝা নয়, কারামুক্ত হলেই তারা হবেন পরিবার ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ। ফেলে আসা অতীতের সব উশৃঙ্খল পথ ছেড়ে অলোর পথে ফিরিয়ে আনতে বন্দি এসব হাজতি-কয়েদির কারাভ্যন্তরে কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, বিনোদন, প্রশিক্ষণ ও জনহিতকর নানা কর্মসুচি।

শিশুদের বিনোদনের জন্য কারাগারে নির্মাণ করা হচ্ছে অভ্যন্তরিন পার্ক। মায়ের অপরাধে বিনা কারণে জেলে থাকা এসব শিশুদের জন্য রয়েছে ডে-কেয়ার (পরিচর্যা) সেন্টার। দু’জন শিক্ষক রোজ তাদের প্রাথমিক ও মৌলিক শিক্ষা দিয়ে চলেছেন। কারাভ্যন্তরে এসব কর্মসুচি বাস্তবায়নকারীদের বেশীরভাগই হচ্ছেন স্বশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত ও স্বেচ্ছাশ্রমে আগ্রহীরা।

জামিনে মুক্ত হয়ে স¤প্রতি জেল ফেরত কয়েক ব্যক্তি জানায় কারাগারটির বর্তমান ভেতরের অবস্থা। তারা বলছেন, প্রতিদিন কারাভ্যন্তর নবসাজে পাল্টাচ্ছে তার চিত্র। পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা, ধর্মীয় শিক্ষা, গণশিক্ষা, বৈদ্যুতিক শিক্ষা, সেলাইকাজ, হস্তশিল্প ও সবুজ শ্যামল কারাগারটির ভেতরের সৌন্দর্য এখন পর্যটক প্রিয় কোন অবকাশ ও বিনোদনের কেন্দ্রকেও হার মানাবে। পৃথিবীর সৌন্দর্য্যরে মাঝে আরেক নরসিংদী কারাগার কৃষিতেও ঘটাচ্ছে বিপ্লব। এখন সেখানে পুরোদমে চলছে শীতকালীন সবজি চাষ।

হাজতি-কয়েদিদের মতে, প্রতি বছর এখানে চাহিদার অতিরিক্ত সবজি উৎপাদন হয়। ফুলে ফলে ভরপূর কারাগারটিতে অনায়াসে মেলে ফুলকপি, বাঁধাকপি, মূলা, গাঁজর, খিরা (শশা), টমেটো, কাঁচা মরিচ, বেগুন ও নানা জাতের শাক। নিজেরাই উৎপাদন করে তরতাজা এসব নির্ভেজাল সবজিতে পরম সন্তুষ্ট মহিলা ওয়ার্ডে থাকা নাছিমা আক্তার নামক এক মহিলা জানান, আগের ছোট্ট পরিসরের অপরিচ্ছন্ন রান্নাঘরটি বর্তমানে স¤প্রসারিত হয়েছে। সেখানে নির্মিত হয়েছে বিশালাকারের শেড।

পর্যাপ্ত পানি ব্যবস্থার পাশাপাশি সংকট নিরসনে প্রতিটি ওয়ার্ডে এক হাজার লিটার পানি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন টাংকি বসিয়ে দিয়েছেন জেল সুপার মোঃ নজরুল ইসলাম উদ্যোগে। নরসিংদী কারাগারের জেল সুপার মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, সরকারের লক্ষ্য অপরাধ, ক্ষুধা, জঙ্গি, মাদক ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি সোনার বাংলা। কাজেই কারাগারের এসব উদ্যোগ বন্দিদের জীবনের পরতে-পরতে কাজে আসবে।

বের হলে তারাই হবেন আলোর পথের দিশারী। আরো বলেন-নরসিংদীর জেলা প্রশাসক মহোদয় ডাঃ সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস প্রতি মাসেই পরিদর্শন করায় আমরা কর্মকর্তা ও হাজতি কয়েদিদের সুন্দর এবং সফলতার সাথে এগিয়ে যাচ্ছে নরসিংদী জেলা কারাগার। আজকের হাজতি কয়েদি এভাবে সংশোধিত জীবন নিয়ে এরাই পারবেন দক্ষ জনশক্তিতে উন্নত বাংলাদেশের সহায়ক শক্তি।