খােলা বাজার২৪।রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৭: ভারতের ঝাড়খন্ড প্রদেশের গ্রাবান্দা জেলার হাজারো বিবাহিত কৃষক এক বিশেষ ফসল উৎপাদনের সময় স্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক মিলন থেকে দূরে থাকেন। কয়েক প্রজন্ম থেকে ওই এলাকায় এ প্রথা চালু রয়েছে। তাদের বিশ্বাস, এ সময় স্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক মিলন থেকে বিরত থাকলে এ বিশেষ ফসল উৎপাদনে সহায়ক হবে । বিবিসি উর্দুর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রাবান্দা জেলার বিবাহিত কৃষকদের মাঝে প্রতি বছর দুই দুই মাস করে স্ত্রী সহবাস থেকে থাকার প্রথা চালু রয়েছে। এসময় তারা রেশম পোকার উদ্ভিদ উৎপাদন করে থাকেন। এসময় স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকলে ফলন ভালো হয় বলে তারা মনে করেন সেইসঙ্গে রেশম পোকাও পিঁপড়া ও কীটপতঙ্গ থেকে নিরাপদ থাকে।
বিবিসি উর্দুর প্রতিবেদককে ওই কৃষকদের একজন সুরেশ মাহাতো বলেন, রেশম পোকার প্রজনন বৃদ্ধির জন্য এর গাছগুলো উৎপাদনের সময় আমরা স্ত্রী সহবাস থেকে দূরে থাকি। স্ত্রীরা আমাদের স্পর্শও করতে পারে না। আমরা তাদের হাতে পাকানো খাবারও খাই না। ফসলকে রোগ বালা থেকে বাঁচাতেই আমরা এমনটা করে থাকি।
এ সময় স্ত্রী সহবাস ছাড়াও আরও অনেক নিয়ম মেনে থাকেন কৃষকরা। অপর একজন কৃষক নিত্যানন্দ মাহাতো বলেন, রেশম পোকার জন্য উৎপাদিত ফসলের কাছে যাওয়ার আগে আমাদের গোসল করাও আবশ্যক। ফসল দেখবালের সময় যদি কারও প্রাকৃতিক চাপ অনুভব হয় তাহলেও পরবর্তীরে আসার জন্য গোসল আবশ্যক। যদি ফসলে ক্ষতিকারক কীট লেগে যায় তাহলে পুঁজাও বেড়ে যায় ও পাঠা বলি দেওয়ার প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
এ সফল উৎপাদনে এপ্রথা কয়েক প্রজন্ম ধরে চলে আসছে। সুরেশ বলেন, আমাদের দাদাজি এ বিধান মেনে চাষ করতেন করতেন। আমরাও এ বিধান মেনে চলছি। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মও এ বিধান পালন করবে। এ ফসল উৎপাদনের সময় আমরা ডিম ও গোশত খাই না। জঙ্গলে ঝুপড়ি বানিয়ে থাকি।
তবে এ প্রথা অনেকটাই কমে এসেছে রেশম চাষে প্রশিক্ষণদাতা সেন্টারের সহযোগিতায়। তাদের প্রচেষ্টায় কৃষকদের এমন ভুল ধারণা গত কয়েক বছর যাবত ভাঙ্গতে শুরু করেছে। তারা বুঝতে শিখছেন যে, নারীদের দ্বারা ফসলের কোনো ক্ষতি হয় না।