খােলা বাজার২৪। শনিবার, ৬ জানুয়ারি, ২০১৮: মেহেদী হাসান : কমিটি গঠনের আড়াই মাসের মধ্যেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের নেতারা অর্ন্তদ্বন্দ্ব, চাঁদাবজি, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছেন নিজেদের মধ্যে। এ কারণে জবি ছাত্রলীগের ভাবমূতি ক্ষুন্ন হচ্ছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদেরও আহত হওয়ার খোঁজ পাওয়া যায় এ সংঘর্ষগুলোতে।
গত বছরের ১৭ অক্টোবর জবি শাখা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ। তরিকুল ইসলাম তূর্যকে সভাপতি এবং শেখ জয়নুল আবেদীন রাসেলকে সম্পাদক করে কমিটি দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে, ২৪ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের দশম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগকর্মী মিঠুনকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় অভিযুক্ত ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তৌহিদুল ইসলাম শান্ত গণমাধ্যমে নিজেকে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল ইসলাম গ্রুপের কর্মী হিসেবে পরিচয় দেন। তার বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শান্তকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে।
২৮ অক্টোবর শাখা ছাত্রলীগের তরিকুল গ্রুপের নেতাকর্মী জবি টিএসসিতে দোকান বসানো নিয়ে চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিশাদুল ইসলাম রিশাদ এবং ছাত্রলীগের আরও দুই কর্মীকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও ৪ জনকে সাময়িক বহিষ্কার করে।
এরপর ৫ নভেম্বর রবিবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সিনিয়র-জুনিয়র নিয়ে বাকবিতন্ডার জেরে সামি নামের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এক সাধারণ শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করেছেন সভাপতি তরিকুল ইসলাম গ্রুপের প্রথম বর্ষের কয়েকজন কর্মী।
৭ই নভেম্বর বিকাল সোয়া তিনটায় ক্যাম্পাসের মেইন গেটে অবস্থান করা একটি বাসের ভেতর আড্ডারত ফার্মেসি বিভাগের ১২তম ব্যাচের আল ইমরান অর্নব ও ফিন্যান্স বিভাগের দশম ব্যাচের রিয়াদ খানকে লোহার রড, খুর, হাতুড়ি ও অন্যান্য ধারালো দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে কোতোয়ালি থানায় ওই দিনই মামলা করা হয়েছে।
গত ১১ই ডিসেম্বর বিকেলে পুনরায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে সভাপতিÑসম্পাদক দুই গ্রুপ। শীতের ছুটি কাটিয়ে ক্যাম্পাস খোলার পরপরই গত ৩ জানুয়ারি নবীন শিক্ষার্থীদের নিজ গ্রুপের অর্ন্তভুক্তি নিয়ে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে দুই গ্রুপ। এতে স্বপন ও সোহান (উভয় ১২ ব্যাচ) নামের দুই শিক্ষার্থী মারাতœকভাবে জখম হয়। চার ও পাঁচ দফার মারামারিতে এদিন ক্যাম্পাস রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে ৪ জানুয়ারি জবির এক সাংবাদিকের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে তানভীর চৌধুরী শাকিল নামে সভাপতি গ্রুপের এক ছাত্রলীগ কর্মী।
এসব ব্যাপারে জবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল বলেন, ক্যাম্পাস ছোট হওয়ায় অনেক সময় ছোট ঘটনাকে বড় করে দেখা হয়। তবে যেসকল দ্বন্দ্বে ছাত্রলীগের কর্মীরা জড়িত সেসব ঘটনার সাপেক্ষে ছাত্রলীগের সেসব কর্মীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি আশ্ব^াস দেন। এসকল বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।