খােলা বাজার২৪। বুধবার, ১০ জানুয়ারি, ২০১৮: সামগ্রিকভাবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে (এসএমই) ঋণ বিতরণ বাড়লেও এই খাতে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে নারী উদ্যোগতাদের মধ্যে ঋণ বিতরণের পরিমাণ। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত করা হয়েছে নতুন নারী উদ্যোক্তাদের। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) নারী উদ্যোক্তাদের ৪০ হাজার ৫১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এসএমই ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৪৬০.৩৫ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে নারী উদ্যোক্তাদের ৩২ হাজার ৮৪১ প্রতিষ্ঠানের মাঝে এসএমই ঋণ বিতরণ করা হয়েছিল ৪ হাজার ১৫৬.৬২ কোটি টাকা।
এই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে নারী উদ্যোক্তাদের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়লেও ঋণ বিতরণের পরিমাণ কমেছে ৬৯৬.২৭ কোটি টাকা।
কারণ হিসেবে জানা যায়, ঋণপ্রাপ্তিতে নানা জঠিলতা ও হয়রানির কারণে ব্যাংক থেকে ক্ষুদ্রঋণ গ্রহণে আগ্রহী নয় নারীরা। তবে এনজিও থেকে বিনা জামানত ও ঋণ প্রাপ্তিতে সহজ হওয়ায় ব্যাংকের চেয়ে চড়া মুনাফায় লোন নিচ্ছেন একই ব্যক্তিরা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগের উপ-পরিচালক শাখাওয়াত হোসেন বলেন, দেশে চলমান বিনিয়োগ মন্দার মধ্যেও এসএমই খাতে ঋণ বিতরণে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। ফলে এই খাতে ঋণ বিতরণের পরিমাণ বাড়ছে। তবে নারী উদ্যোক্তাদের প্রতিষ্ঠান কাঙ্খিত হারে ঋণ পাচ্ছে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার অনুযায়ী, ব্যাংকের প্রতিটি শাখায় কমপক্ষে পাঁচ জন নারী উদ্যোক্তাকে ঋণ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু ব্যাংকগুলো এই নির্দেশনা মানছে না। এ বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে তদারকি বাড়ানো জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে নারীরা ৬৯৬.২৭ কোটি টাকার ঋণ কম নিয়েছেন। সেই সাথে কমেছে নারীদের ঋণ আদায় পরিমাণও।
নারী উদ্যোগতারা মনে করছেন, অনেক ক্ষেত্রে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের রক্ষণশীল আচরণ নারীদের পিছিয়ে দেয়। তারা ঋণের প্রক্রিয়াটি অনেক বেশি কঠিন করে ফেলে। সরকার থেকে নির্দেশনা থাকলেও বাস্তবিক ক্ষেত্রে ঋণ নেওয়ার বিষয়টি নারীদের জন্য সহজ হয় না।
নারীদের ক্ষেত্রে ঋণ গ্রহণের প্রক্রিয়া আরো সহজ করলে নারী উদ্যোগতার সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি ঋণ গ্রহণের পরিমাণও বাড়বে বলে মনে করছেন তারা।