খােলা বাজার২৪। বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০১৮: নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার যশোর ইউনিয়নের দেবালেরটেক গ্রামে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে গ্রাম্য শিল্পীরা। আগামী বাংলা নববর্ষের প্রস্তুতিতে । বাঙালি মেতে উঠবে নিজস্ব ঐতিহ্যের মেলায়। তাই গ্রামের কুমাররা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন শখের হাঁড়ি, হাতি-ঘোড়া, পুতুল বানানোর কাজে। বৈশাখী মেলা শহর থেকে গ্রামথ সবখানেই এখন মহাসমারোহে আয়োজন করা হয়। তাই তাদের তৈরি এসব শিল্পের চাহিদাও বাড়ছে। শিপুর উপজেলার যশোর ইউনিয়নের দেবালের টেক গ্রামের কারুশিল্পী শিতা রানী এবার ঢাকা বিভাগে কয়েকটি মেলায় অংশ নেবেন। তাই তার বাড়িতে চলছে এক বিরাট কর্মযজ্ঞ। শখের হাঁড়ি, মাটির হাতি-ঘোড়া ও বিভিন্ন পুতুল তৈরিতে ব্যস্ত তার পরিবারের সদস্যরা। রঙতুলির আলতো ছোঁয়ায় সেগুলো হয়ে উঠছে আরও আকর্ষণীয়। ইতিমধ্যেই শিতা রানী নিজের নাম ছড়িয়েছেন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও। কারুশিল্পে বিশেষ অবদানের জন্য তার ঝুলিতে আছে বাংলাদেশ কারুশিল্প পরিষদ, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন, জাতীয় জাদুঘরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অন্তত ৫ থেকে ১০টি সনদ। শীতা রানী স্বর্ণ পদকও জিতেছেন ২০০৯ সালে। এবার বৈশাখীতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিতব্য মেলায় নিজের পসরা নিয়ে হাজির হবেন ৪৫ বছর বয়সী এ মৃৎশিল্পী। এ জন্য তাদের বাড়িতে এখন চলছে শখের হাঁড়িসহ মাটি দিয়ে তৈরি বৈশাখী নানা পণ্য বানানোর কাজ। দম ফেলার ফুরসত নেই তাদের। শীতা রানীর বাড়িতে যেতেই চোখে পড়ল বাড়ির উঠানে কয়েক ধরনের শখের হাঁড়ি, যা রোদে শুকানো হচ্ছে। হাঁড়ি তৈরির চাকা বিরামহীন ঘুরিয়ে যাচ্ছেন সঙ্গীয় শিল্পীরা। শীতা রানী রঙতুলি নিয়ে। সুনিপুণ হাতের ছোঁয়ায় তিনি রাঙিয়ে তুলছিলেন শখের হাঁড়িগুলো। শীতা রানী বলেন, এসব হাঁড়ির চাহিদা ছিল বেশি। দিন দিন চাহিদা কমছে। এখন এগুলো বিক্রি হয় শুধু মেলায়। তাই মেলার আগে তাদের ব্যস্ততা বাড়ে। বৈশাখী মেলায় পসরা সাজাতে তিন মাস ধরে চলছে তাদের কর্মযজ্ঞ। শুধু মেলার ওপর নির্ভর করেই তাদের আয়ের পথ খুঁজতে হয়। তবে অনেক সময় মেলায় তাদের মাটির পণ্যসামগ্রী নিয়ে যেতে পরিবহন খরচ অনেক বেশি লাগে। সরকারিভাবে মেলার আয়োজন করা হলে তারা কিছুটা আর্থিক সুবিধা পান।