খােলা বাজার২৪। সোমবার, ২২ জানুয়ারি, ২০১৮: কাওরান বাজারের দখলদার আর জুয়ারীরা পদায়িত, মাদক সন্ত্রাসীরা সামনের সারিতে! সংগঠন পরিনত দোকানদারীতে! প্রকাশ্যে কেনাবেচা হচ্ছে পদ! পদবঞ্চিত ত্যাগী আর পরিক্ষিত নেতা কর্মীগন। মাঠ পর্যায়ে অসোন্তোষ!
খামারবাড়ির ক্যান্টিন ব্যাবসায়ী মঞ্জু, শাহবাগের শাহিন, মনিপুরি পাড়ান চন্দনসহ একাধিক হত্যা মামলার আসামী, যার টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজিতে অতিষ্ট হয়ে একাধীক প্রকল্পের পরিচালক জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের কাছে অনেক অভিযোগ করেছেন! সরকারি ভবন নির্মাণে রডের বদলে বাঁশ ব্যবহারের মতো জঘন্য অপরাধে ১০ বছরের জন্য কালো তালিকাভুক্ত হওয়া সেই জয় ইন্টারন্যাশনালের মালিক কালী মনি ওরফে কালামনি এবার ঢুকে পড়ল তেজগাঁও থানা আওয়ামী লীগের কমিটিতে। তার কমিটিতে পদ নেওয়ার বিষয়টি গত ৩ জানুয়ারি একাধিক সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হয়।
এখন প্রশ্ন উঠেছে?
যে অর্থলোভী, অমানুষ, রডের পরিবর্তে বাশ দিয়ে সরকারি ভবন নির্মানের মতো জঘণ্য অপরাধ করেছে (সূত্রঃ ইত্তেফাক ৯ এপ্রিল ২০১৬), রডের পরিবর্তে বাশ দেয়ার অপরাধে যার নামে মামলা করা হলো (সূত্রঃ ঢাকাপোষ্ট ১২ এপ্রিল ২০১৬, দৈনিক জনকন্ঠ-১১ এপ্রিল ২০১৬, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন ১০ এপ্রিল ২০১৬), যেখানে সরকার প্রচলিত আইনে তাকে ১০ বছরের জন্য কালো তালিকাভুক্ত করলো, সয়ং রাষ্ট্রপতি যাকে অবাঞ্চিত ঘোষনা করলেন! (সূত্রঃ যায়যায় দিন ৮ মে ২০১৬), আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যাকে গ্রেফতার করলো! (সূত্রঃ সমকাল ৭ মে ২০১৬, bdnews24.com ৬ মে ২০১৬, ) সে কিনা আওয়ামী লীগ এর মতো গণমানুষের সংগঠনে পদায়িত হলো?
স্থানীয় আওয়মী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কয়েকজন সিনিয়র নেতা নাম প্রকাশে অনিশ্চুক ঢাকা নিউজ এক্সপ্রেসকে জানান, পুলিশের তালিকায় খূনী শীর্ষ সন্ত্রাসী, নিরক্ষর কালী মনি কীভাবে তেজগাঁও থানা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ পদে পদায়ন পেল? তাও আবার খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এর নিজ এলাকায়। আমরা বিশ্বাস করতে চাই না তিনি এ জাতীয় শীর্ষ সন্ত্রাসী খূনী অর্থলোভী কালী মনি ওরফে বাঁশ মনিদের রাজনৈতিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত করবেন। আমরা দেখতে চাই না বাঁশ মনিদের মতো কুলাঙ্গারেরা আওয়ামীলীগ এর মোড়কে আপনার ছত্রছায়ায় কায়েম করুক তাদের সন্ত্রাস আর অপরাধের রাজত্ব। আমরা চাই না বাঁশ মনিরা কলঙ্কিত করুক আওয়ামীলীগ তথা শেখ হাসিনার আদর্শ ও নৈতিকতাকে। আমরা চাই না বাঁশ মনিদের প্রভাবে আমরা আগামী নির্বচনে ভোটারের অবহেলার শিকার হই! আমরা চাই না দেশ-বিদেশে সমাদৃত, সুখ্যাত ও সফল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী কালী মনিদের কালী গায়ে মাখুক, আমরা চাই না বাঁশ মনিদের বাঁশ প্রয়োগ মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মহোদয়ের পশ্চাদে! আমরা চাই না বাঁশ মনিদের দায় পড়ুক আওয়ালীগের গায়ে।
সরজমিনে খামারবাড়ী, প্রানী সম্পদ অধিদপ্তর, মৃত্তিকা, তুলা উন্নয়ন বোর্ড এলাকা পরিদর্শনে দেখা যায়, ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের নিয়ে মিছিল করে জানান দিচ্ছে তার পদায়নের খবর। বীরের বেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সকল ডিপার্টমেন্টে যেখান থেকে তাকে কালো তালিকা ভূক্ত করা হয়েছে ।
এদিকে তার মতো অপরাধীরা আওয়ামী লীগের পদ পাওয়ায় হতাশ হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। জনশ্রুতি আছে, থানা কমিটিতে মোটা অংকের টাকার লেনদেন করেই নিরক্ষর কালী মনি তেজঁগাওয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ থানায় পদায়িত হয়েছে। কতিথ আছে তেজগাঁও থানা আওয়ামীলীগ সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদ এর জনবিচ্ছিন্নতা ও নড়বরে অবস্থা সামাল দিতেই বাঁশ মনিদের দলে টেনেছেন। চাঁদাবাজি আর টেন্ডারবাজিরর ভাগ নিশ্চিত করতেই তাকে রাখা। নিয়েছেন মোটা অংকের নগদ টাকা আর আগামী নির্বাচনে আব্দুর রশীদ এর নির্বাচনী ব্যায় জোগান দেয়ার প্রতিশ্রুতি।
পুলিশের তালিকায় খূনী শীর্ষ সন্ত্রাসী যখন তেজগাঁও থানা আওয়ামীলীগ সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদ এর সাথে রাজপথে মিছিলে দেখা যায় তখনি অনুমান করা যাচ্ছিল যে বাঁশ মনিরা এবার আওয়ামীলীগ কে বাঁশ দিতে চলে এসেছে। প্রয়োজন ছিলো তখনি তাদের প্রতিহত করা। দরকার ছিলো দলীয় হাই কমান্ড তথা নীতি নির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা । তার ওই পদটি নেওয়ার পর অনেকেই সাংবাদিককে প্রশ্ন করেছেন, কত টাকার বিনিময়ে একজন অপরাধী মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ঐতিহ্যবাহী এই দলটিতে এমন পদ নিতে পারে? সে তো একাধিক মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলো, কত টাকার বিনিময়ে সে মুক্তি পেলো? কিভাবে পদ নিলো?
এ বিষয়ে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, নামের কালী, কামেও কালী। বলা যায় সে এখন বাঁশ হাতে নিয়ে আওয়ামী লীগে প্রবেশ করেছে। এখন শুধু দেখার অপেক্ষা কখন বাঁশ দিবেন আওয়ামী লীগকে। যাই হোক আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন। আর কোটি কোটি নেতাকর্মীর আস্থার আশ্রয় ঠিকই অনুধাবন করেছেন ক্ষোভ ও দুঃখে ভারাক্রান্ত আওয়ামী প্রেমীদের আক্ষেপ। তাৎক্ষনাত স্থগিত করেছেন এইসব কমিটি। আমরা বিশ্বাস করি এবার যে কমিটি আমরা পাবো তা অবশ্যই আমাদের প্রত্যাশার প্রতিফলন।