খােলা বাজার২৪। শুক্রবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮: সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম, বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ (মার্কসবাদী)-এর কেন্দ্রীয় নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয় জোনায়েদ সাকি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু ও সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক আজ এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, আমরা দুর্নীতিমুক্ত দেশ চাই এবং রাজনৈতিক ও দলীয় বিবেচনার ঊর্ধ্বে সকল দুর্নীতিবাজের শাস্তি চাই।
দুর্নীতির দায়ে বেগম খালেদা জিয়াসহ কয়েকজনের শাস্তি হয়েছে। দেশে শত শত কোটি টাকার আরও বড় বড় দুর্নীতি ঘটেছে। এসবের সঙ্গে সরকার ও সরকারি দলের অনেক হোমরা-চোমরাও জড়িত। খালেদা জিলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ যে নিছক দুর্নীতির অপরাধের জন্য দেয়া হয়েছে, তার পেছনে যে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই সেকথা প্রমাণ করতে হলে সরকারকে নিজ দলের দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, জনসম্মতিহীন অগণতান্ত্রিক সরকারের স্বেচ্ছাচারি শাসন, ক্ষমতার প্রবল দাপট, বিপুল লুটপাটের অভিযোগ ইত্যাদির কোনো সুরাহা না করে খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়ার ব্যাপারে সরকারের অতি উৎসাহের কারণে দেশবাসীর মধ্যে এই ধারণা সৃষ্টি হয়েছে যে এই রায়ের মধ্য দিয়ে সরকারের রাজনৈতিক ইচ্ছারই প্রতিফলন ঘটেছে। এ কথা ঠিক যে, বিএনপি আমলে বিপুল পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলেও অবাধে দুর্নীতি লুটপাট চলছে। শুধু ২/৪ কোটি টাকা নয়, ক্ষমতার ছত্রছায়ায় শত শত ও হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট এবং বিদেশে পাচারের খবর প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু ক্ষমতায় থাকায় অপরাধীরা দুর্নীতির সাজা থেকে দায়মুক্তি পাচ্ছে। এটি মেনে নেয়া যায় না। নানা কারণে জনগণ মনে করছে যে, খালেদা জিয়ার বিচার কার্যক্রমের পেছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধি কাজ করেছে। জনগণের মন থেকে সে সংশয় দূর করা এখন সরকারেরই দায়িত্ব।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে আরও বলেন, স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তার কথা বলে সরকারের নির্দেশে পুলিশ প্রশাসন ঢাকা শহরের সভা-সমাবেশ, মিছিল অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ করেছে। এর মাধ্যমে মানুষের সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে। নির্বিঘœ নাগরিক জীবন নিশ্চিত করার নামে গতকাল সব ধরনের পরিবহন বন্ধ করে দেয়া হয়। টেক্সিক্যাব সার্ভিসও বন্ধ করে দেয়া হয়। লাখ লাখ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীসহ ঢাকা শহরের নারী-পুরুষ চাকুরীজীবীদের দুর্দশা ও দুঃশ্চিন্তার মধ্যে নিক্ষেপ করা হয়েছে।
নাগরিক জীবনে স্বাভাবিক অবস্থা বজায় রাখার বদলে সরকারের পদক্ষেপ নাগরিকদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত করেছে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, সভা-সমাবেশ ও মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই পুলিশের উপস্থিতিতে এবং পুলিশের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় আওয়ামী লীগ, যুব লীগ, ছাত্র লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকর্মীরা মোটর সাইকেল মিছিল করেছে। মাইক বাজিয়ে সমাবেশ করেছে এবং বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান গ্রহণ করেছে। এসব কর্মকা- সরকারি নির্দেশের বরখেলাপ। আইনভঙ্গের এসব ঘটনার জন্য কোনো শাস্তি প্রদান না করায় পুলিশের দলীয় পক্ষপাতিত্ব প্রমাণিত হয়েছে। এ ধরনের কর্মকা- দেশে শান্তির পরিবর্তে অশান্তিরই জন্ম দেবে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, দলমত ও রাজনীতি নির্বিশেষে সকল দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। সরকারের আশ্রয়ে থেকে দুর্নীতিবাজরা যদি মনে করে তারা পার পেয়ে যাবে, তাহলে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে। জনগণ অবশ্যই একদিন তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে।