Sun. May 11th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪। মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮: প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন বিনিময়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের বর্তমান ও ভবিষ্যতের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরি করতে ঢাকায় সোমবার শুরু হয়েছে বাংলাদেশ ফ্যাশনোলজিস্ট সামিট। এর আয়োজক বাংলাদেশ অ্যাপোরেল এক্সচেঞ্জের প্রধান মোস্তাফিজ উদ্দিন বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, এই সম্মেলনে বিশ্বের ১০টি দেশ থেকে মোট ২৬ জন ফ্যাশন ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ অংশগ্রহণ করছেন। পোশাক শিল্পের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনগুলো নিয়ে আলোচনা করছেন উদ্যোক্তরা।

ফ্যাশনোলজিস্ট সামিট বলতে মোস্তাফিজ বলেন, ফ্যাশন এবং টেকনোলজি দুটা মিলে যে সামিট সেটাকে ফ্যাশনোলজি নাম দিয়েছি। ফ্যাশনেবল টেকনোলজি সম্পর্কে ধারণা নিয়ে আমাদের এই সামিটটার নাম দেওয়া হয়েছে।

এই সম্মেলনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে মোস্তাফিজ বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন ফ্যাক্টরির মালিক, ডিসিশন মেকার, আমাদের দেশের বায়িং হাউজ, বায়িং রিপ্রেজেন্টেটিভ, আমাদের ডেভলপমেন্ট পার্টনার, এমডিসি, গভর্নমেন্ট অর্গানেশন যারা আইনজীবীর ওপর কাজ করেন। এই ধরনের প্রায় ৪’শ ৫০ জন নেতা এটাতে অংশগ্রহণ করবেন।

ভবিষ্যতে প্রযুক্তিগত পরিবর্তনে পোষাক শিল্পের ক্ষেত্রে যে ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে। এ প্রসঙ্গে মোস্তাফিজ বলেন, চ্যালেঞ্জ বলতে মানুষের মনের মধ্যে ভুল কিছু ধারণা আছে। তা হলো প্রযুক্তি বিপ্লবের ফলে অনেকে চাকরিহারা হয়ে যাবে। ওইটা কোন বিষয় না। বরং টেকনোলজিতে আপডেট হতে হবে। তাহলে আমরা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারব। আমরা নিজেদেরকে আগামী দিনের যে চ্যালেঞ্জটা আসবে সেগুলোর সঙ্গে যদি খাপ খাওয়াতে না পারি, তাহলে পাশের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলো এগিয়ে যাবে। আর আমরা বাজার হারাব। এখানে চ্যালেঞ্জ বলতে সেই ধরনের কোন চ্যালেঞ্জ নেই। একটাই চ্যালেঞ্জ আছে আমাদের টেকনোলজিকে আনতে হবে এবং মানুষকে পরিচয় করাতে হবে। টেকনোলজিটাকে এ্যাডাপশন করাতে হবে। এজন্য আমাদের এই সামিট।

বাংলাদেশে এখনো যে সমস্ত প্রযুক্তিগত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়, সেগুলো যথেষ্ট পরিমাণে আপডেটের নয় বলে জানান মোস্তাফিজ। তিনি আরো বলেন, আমরা তো এখন পর্যন্ত বেসিক প্রোডাক্টে কাজ করছি। বাংলাদেশের লো প্রোডাক্টই সেল পড়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা চাচ্ছি হাই প্রোডাক্টে যেতে। সরকার চাচ্ছে আমাদের এক্সপোর্টে ডাবল করতে ৩০ বিলিয়ন থেকে ৫০ বিলিয়নে যেতে। নিটল ডিপেন্স কমে আসছে। আমাদের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। ডাবল এক্সপোর্ট হাইলিং করা কখনো সম্ভব না। মধ্যম আয়ের দেশে কিভাবে যাব যদি আমরা উন্নত পোশাকের দিকে না যেতে পারি। উন্নত পোশাক উৎপাদনের একমাত্র উপায় হচ্ছে প্রযুক্তিগত বিপ্লব ঘটানো।

পোশাক শিল্পের উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ব্যাপকহারে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় তার ফলে শ্রমিকরা চাকরি হারানোর একটা আশঙ্কা আছে। এ ব্যাপারে মোস্তাফিজ জানান, চাকরি হারানোর কোন আশঙ্কা নাই।

মানুষের বিকল্প কর্মসংস্থান সম্পর্কে মোস্তাফিজ বলেন, আমাদের দেশে যখন স্মার্ট ফোন আসে তখন আমাদের প্রত্যেকে ঘুম থেকে উঠে স্মার্ট ফোন দেখে না এই রকম লোকের সংখ্যা খুব কমই পাবেন। প্রযুক্তির বিপ্লবের ক্ষেত্রে সেখানে কোন পরিবর্তন হয়নি। বিকাশের ক্ষেত্রে সবকিছু অনলাইনের মাধ্যমে কেনাকাটা করছে। চাকরি হারিয়েছে তা না বরং তারা চাকরি পেয়েছে। আমরা যদি প্রযুক্তির বিপ্লব ঘটাতে পারি তাহলে আমাদের আরো বেশি বেশি অর্ডার আসবে এবং ওই প্রযুক্তির মাধ্যমে আমাদের বাজারটা আরো বড় হবে। প্রতিযোগিতার বাজারে আমরা টিকে যাব। আমাদের আরো বেশি কর্মসংস্থান বাড়বে। কেউ চাকরি হারাবে না।

এই সম্মেলনের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো পোশাক শিল্পের বর্তমান এবং ভবিষ্যতের মধ্যে একটা সেতু বন্ধন তৈরি করা। সেটা তৈরির ব্যাপারে মোস্তাফিজ বলেন, ১১টা বিভাগের ১৬ জন ভোক্তাকে নিয়ে এসেছি। আমরা ৬টি দেশ থেকে ডিজাইনারও নিয়ে এসেছি। স্পেন, ইতালি, আমেরিকা, কানাডা, ফ্রান্স থেকে ডিজাইনারগুলো এনেছি। ডিজাইনারগুলো তাদের নিজস্ব উৎপাদন করা যে কাপড় সেগুলো নিয়ে এসেছে। সেগুলো তারা প্রদর্শন করা হচ্ছে। ক্যাটওয়ার্ক হবে। বাংলাদেশের ফার্স্ট টাইম প্রযুক্তি নির্ভর পোশাক শিল্প এটাই হবে। প্রযুক্তিগত বিপ্লব দেওয়া হবে এবং যেখানে যেতে হবে। সেটার মাধ্যমে বর্তমানের সঙ্গে ভবিষ্যতের একটা সেতুবন্ধন তৈরি করতে চাই।