খােলা বাজার২৪। মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮: অনুমতি সাপেক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাগারে সাক্ষাতের সুযোগ থাকলেও সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) তাকে দেখতে কেউই যাননি। তার মুক্তির দাবিতে সারাদেশে মানববন্ধন ও বিভিন্ন স্থানে দলের নেতাকর্মীরা আটক হলেও কারাগারে একাই কাটাতে হয়েছে খালেদা জিয়াকে। রাত ১০টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনও স্বজন বা নেতাকর্মী তার সঙ্গে দেখা করেননি।
কারা বিধি অনুযায়ী, সাজা হওয়ার পর ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দির সঙ্গে ১৫ দিনে একবার তার স্বজন বা আইনজীবীদের সাক্ষাতের সুযোগ রয়েছে। তবে মামলার প্রয়োজনে জেল সুপারের অনুমতি সাপেক্ষে একাধিকবার দেখা করা যাবে। সেটা নির্ভর করবে জেল সুপার কত বার অনুমতি দেন, তার ওপরে।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাগারে দেখা করার জন্য কেউ এসেছিলেন কিনা জানতে চাইলে বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘না, আজকে (সোমবার) কেউ দেখতে যাননি।’
মিডিয়া উইংয়ের আরেক সদস্য শামসুদ্দিন দিদার বলেন, ‘ম্যাডামের সঙ্গে কেউ দেখা করতে গিয়েছিলেন কিনা, আমার জানা নেই।’
এদিকে, খালেদা জিয়াকে প্রথমে কারাগারের একটি অফিস কক্ষে রাখা হয়েছিল। পরবর্তীতে তাকে কারাগারের ডে কেয়ার সেন্টারের দ্বিতীয় তলায় নেওয়া হয়েছে। তাকে সেখানে নেওয়ার পর কারা ফটক সংলগ্ন চারটি ব্যারিকেড সরিয়ে ফটকের আরও কাছে নিয়ে আসা হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। খুলেছে আশপাশের দোকানপাটও। তবে কোনও যানবাহন কারা ফটকের সামনের রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না।
সোমবার রাত ১০টা পর্যন্ত কারা ফটক এলাকায় খালেদা জিয়ার কোনও স্বজন বা নেতাকর্মীদের দেখা যায়নি। তবে বিচ্ছিন্নভাবে হাতেগোনা কয়েকজন স্থানীয় কর্মীকে সেখানে গেছে। তারা কেউই খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসেননি। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর তারা ফিরে যান।
কারাগার সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার সঙ্গে সোমবার সাক্ষাৎ করার জন্য কেউ অনুমতি নেয়নি বা নিতে আসেনি। এছাড়া, শাহবাগ ও তেজগাঁও থানার দুই মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জারি হওয়া ‘হাজিরা পরোয়ানা’ কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও পরোয়ানা পৌঁছানো হয়েছে কারাগারে।
কারা অধিদফতরের ঢাকা বিভাগের ডিআইজি (প্রিজন্স) তৌহিদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ডিআইজি প্রিজন্স বলেন, ‘‘২০০৭ ও ২০০৮ সালে রাজধানীর শাহবাগ ও তেজগাঁও থানার দুই মামলার ‘হাজিরা পরোয়ানা’ আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। মামলার ধার্য তারিখে খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করার জন্য আদালতের পক্ষ থেকে এই পরোয়ানা জারি করা হয়।’’ তবে পরোয়ানার মামলাগুলো কী কী নিয়ে সেটা তিনি জানাতে পারেননি।
উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে এ মামলার অন্য আসামি তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ বাকি পাঁচ জনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তাদের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। বাংলাট্রিবিউন