Sun. May 11th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪। সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮: সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার পাগনার হাওর উপপ্রকল্পের আওতায় ভীমখালী ইউনিয়নে ডুবন্ত বাঁধ পুনরাকৃতিকরণ কাজে চারটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) মাধ্যমে কাজ করা হচ্ছে। এসব প্রকল্পে গ্রামীণ সড়ক ও হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও সংশ্লিষ্ট পিআইসি। তবে নীতিমালা উপেক্ষা করে কম ঝুঁকিপূর্ণ এসব জায়গায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থের অপচয় করা হচ্ছে বলে দাবি স্থানীয় উপকারভোগীদের।

জানা যায়, বিগত সময়ে ওই ইউনিয়নে পাউবোর কোনো প্রকল্প ছিল না। সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মন্নানের মেয়াদে পাউবো অনুমোদিত উজ্জলপুর থেকে সন্তোষপুর পর্যন্ত একটি মাত্র প্রকল্পে সাড়ে ছয় লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। আর এই বরাদ্দ দিয়েই গত বছর দুর্যোগ মোকাবেলা করা হয়েছে। এ বছর সরকারের উদারতার সুযোগে ব্যয়ের পরিমাণ বাড়িয়ে প্রায় ৮২ লাখ টাকা বরাদ্দ নেওয়া হয়েছে। এসব স্থানে চারটি প্রকল্প করে দুই দফা প্রাক্কলন বরাদ্দ রদবদল ও বৃদ্ধি করা হয়েছে।

পিআইসি সূত্রে জানা, প্রাথমিক প্রাক্কলনে চার নম্বর পিআইসিতে সাত লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ বাড়িয়ে চূড়ান্ত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। পাঁচ নম্বর পিআইসিতে ১৪ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ২০ লাখ ৯১ হাজার টাকা, ছয় নম্বর পিআইসিতে ১৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ২০ লাখ ৩৯ হাজার টাকা, ৫০ নম্বর পিআইসিতে ১২ লাখ টাকা বরাদ্দের স্থলে ২১ লাখ ৬৩ হাজার টাকা করা হয়েছে। অথচ এসব স্থানে বিগত বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে বহুবার একাধিক প্রকল্প দিয়ে রাস্তার উন্নয়ন করা হয়েছে। গত বছর হাওরে দুর্যোগ দেখা দিলে তড়িঘড়ি করে চার ও পাঁচ নম্বর পিআইসি এলাকায় পাউবোর নিয়োজিত ঠিকাদার এস্কেভেটর দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করেছিল। আর অক্ষত এসব বাঁধের ওপর এ বছরও দ্বিগুণ বরাদ্দ বৃদ্ধি করে বাঁধের নামে পাউবোর কাজ করানো হচ্ছে।

হাওর বাঁচাও আন্দোলনের ভীমখালী ইউনিয়নের সভাপতি বাবুল মিয়া এবং সাধারণ সম্পাদক মজিদ মিয়া জানান, বিগত কোনো সময়ে আমাদের এলাকা দিয়ে হাওরের ফসল তলিয়ে যায়নি। গ্রামের সড়ক ও উঁচু কান্দা অতিক্রম করে ঢলের পানি প্রবেশের সম্ভাবনা নেই। যদিও বর্ষাকালে নৌকা চলাচল ও হাওরের পানি নিষ্কাশনে দুই একটি ছোট খাল রয়েছে।

আরাফাত উল্লাহ নামে এক কৃষক বলেন, ‘বিগত সময়ে এই রাস্তায় ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দে পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকার কাজ হতো। কিন্তু এবার এসব গুরুত্বপূর্ণ সড়কে হাওরের বাঁধের নামে ৮০ লাখ টাকার ওপরে কাজ চলছে। আব্দুল আখের নামে আরেক কৃষক উপহাস করে বলেন, ‘হাওরের বাঁধের টাকায় বাঁধ না হলেও রাস্তা হওয়ায় আমরা খুশি। ফসল গেলে যাক রাস্তায় তো চলাচল করতে পারব!’

জামালগঞ্জ উপজেলা পাউবো কর্মকর্তা নিহার রঞ্জন দাস বলেন, ‘জরিপ ও ডিজাইন অনুযায়ী কাজ হচ্ছে।’ তিনি সড়কের ওপর কাজ বাস্তবায়ন হওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘আমাদের কাছে হাওরের ম্যাপ আছে। হাওরের ম্যাপ অনুযায়ী, কাজ হচ্ছে।’ বরাদ্দের ব্যাপারে তিনি বলেন, কাজ ভালোভাবে করতে হলে বরাদ্দ একটু বেশি লাগবেই।’ সূত্র : পরিবর্তন ডটকম