Mon. May 12th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪। সোমবার, ০৫ মার্চ, ২০১৮: বাঁধা বিপত্তি নিয়ে পথ চলতে হয়।কেউ পথে কাঁটা বিছাবে বলে পথচলা বন্ধ করবো তা কি করে হয়!? ব্যক্তির পথে যেমন বাঁধা আছে তেমনি বাঁধা রয়েছে রাষ্ট্রের পথচলায়ও। পাট নিয়ে কাজ করছি প্রায় ১ দশক। ব্যবসার চেয়ে এই যাদুকরী পণ্যের প্রচার, প্রমোশন ও উন্নয়নেই নিবেদিত রয়েছি আজ অবধি। জানিনা কেন? তবে এটা জানি যে; পাটে শ্রম দিলে তাতে দেশের মঙ্গল, দশের মঙ্গল। সেজন্যই বলতে পারেন নিজের খেয়ে বনের মোষ চড়াচ্ছি। এতেই আমার তুষ্টি মেলে। আমি যা করি তা নিজের ভালো লাগা থেকেই নিজের বুদ্ধি বিবেচনা দিয়ে করে থাকি। প্রতিটি পদক্ষেপের পেছনে একটা সৎ উদ্দেশ্য ও ভালোবাসা অন্তর্নিহিত থাকে। তবে তা হয়তো আমার সরল উপস্থাপন কিংবা অতিমানবিকতার কারনে যথাযথভাবে প্রকাশ হয়না! সকলেই যে আমার মত করে ভাববেন তা নয়! সেজন্যই কেউ কেউ তাদের স্ব স্ব দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আমাকে কিংবা আমার উদ্যোগ সমূহকে জাজ করার চেষ্টা করেন। আমি সম্মান করি তাদেরও। দেশপ্রেম বলেন আর স্বপ্রেম বলেন; গত বছর একটি যৌথ উদ্যোগ নেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কয়েকজন সৃজনশীল উদ্যোক্তার সমন্বয়ে পাট নিয়ে একটি সামাজিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়বার লক্ষ্যে অনেকদূর এগিয়েছিলামও। তবে দু:খজনক হলেও সত্য যে, সীমাবদ্ধতা, প্রতিকূলতা আর বৈরী পরিবেশের কারনে তা থমকে যায়! এজন্য আমি কোন ব্যক্তি বিশেষকে দোষারোপ করবোনা। যা ঘটেছে তা বাংলাদেশের প্রচলিত সংস্কৃতির অংশ বলেই মনে করি। তবে সাহসের সাথে যেক’জন উদ্যোক্তা ঐ প্রয়াসের সাথে যুক্ত হয়েছিলেন তাদের প্রতি সাধুবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে আরও জানাচ্ছি যে, ঐ উদ্যোগে আপনারা যে যতসামান্য পরিমান অর্থনিতক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন তা যথযথভাবেই আমানত স্বরুপ গচ্ছিত রয়েছে। অচিরেই তা আলোচনাপূর্বক আপনাদের সাথে সমন্বয় করা হবে ইন শা আল্লাহ। ঝড়-বৃষ্টি, খড়া-বন্যা, শীত-বসন্ত, সাদা-কালো, আলো-আঁধার নিয়েই আমাদের জীবন। এ জীবন খুব সুদীর্ঘ্য নয়। তবে এ স্বল্প দৈর্ঘের জীবনের ’কর্ম’ ঐ জীবনকে সুদীর্ঘ্যতা দিতে পারে। সুতরাং মূল কথা হলো আমাদের কাজ করতে হবে তা যতই বৈরী বা চক্রান্তময় পরিবেশ বা বাস্তবতা হোক না কেন। আমি কাজ করছি, করেই যাবো। একথা জানি যে, পায়ে পড়ে, গায়ে পড়ে বিরক্ত করার মানব উপাদান এ সংসারে কম নেই। তবুও পাট নিয়ে আমার চিন্তা আমার লক্ষ্যে পৌঁছাতে সংগ্রাম অব্যাহত রাখবো।ধীরে ধীরে এগিয়েছি অনেকটা দূর। আরো কিছুটা সময় লাগবে। আল্লাহ যেন সহায় থেকে আমাকে ধৈর্য্য দেন সেই প্রার্থণা প্রতিদিনের। ১৭ কোটি মানুষ বাংলাদেশের ‘বোঝা’ একথার সাথে আমি এক মত নই। আমি মনে করি এ জনগোষ্ঠি দেশের সম্পদ। লক্ষ্য করে দেখুন, সারা দুনিয়ার নজর বাংলাদেশের দিকে। কি পাট, কি চাি, কি চামড়া। সর্ব ক্ষেত্রেই বিদেশী বেনিয়াদের আগ্রহ বাংলাদেশকে ঘিরেই। সস্তা শ্রম আর বস্ত্র খাতের কথাতো সকলেরই জানা। সুতরাং এদেশের বিশাল তরুণ জনগোষ্ঠিকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা কৈশোর থেকেই নিশ্চিত করা সম্ভব যদি রাষ্ট্র কর্তৃক যথাযথ সমন্বিত উদ্যোগ গৃহীত হয়। বিশেষ করে যদি পাট নিয়েও হয়। তবে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোকেও আরও গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে সেসব খাতগুলোর সংকট, সীমাবদ্ধতা চিন্হিত করে আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অনেকটা হয়েছেও যা স্বীকার করা আমাদের কর্তব্য। পাটশালা নিয়ে আমার পথচলা, প্রতিদিনের সংগ্রাম অবিরাম চলবে। আল্লাহ সাহায্য করলে অতি শীঘ্রই একটি ইন্ডাস্ট্রি প্রতিষ্ঠা করতে পারবো। বেশ কিছু অগ্রগতি হয়েছে এব্যাপারে। পূর্বে যারা পাটশালা’র সাথে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন তাদেরকে পাশে চাই। সহযোগিতা চাই তাদেরও যারা পাটকে, পাটশালাকে ভালোবাসেন কোন না কোনভাবে। পাট নিয়ে কাজ করতে গিয়ে অনেকের সাথেই পরিচিত হয়েছি। খুব কাছের থেকে মিশে তাদের বুঝতে চেষ্টা করেছি। একটি বড় বিষয় অনুধাবন করেছি যে, এখাতে ’ইন্ডিয়া এবং কয়েকটি বিদেশী সংস্থা বিশেষ করে বিশ্ব ব্যাংক এর এজেন্টরা’ প্রতিটি বাঁকে বাঁকে শিকড় গেড়ে আছে। বাংলাদেশের পাটখাতকে পঙ্গু করে দিতে তারা কেউ কেউ দরবেশের লেবাসেও ঘাপটি মেরে থেকে উদ্দেশ্য হাসিল করছে। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের অতি ব্যবসার লোভ দিয়ে বিভ্রান্ত করছে। মাঠ পর্যায় থেকে খোদ সরকারের অর্থাৎ পাট, অর্থ, কৃষি এবং পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ে তারা শিকড় বিস্তৃত করে বসে আছে। যা আজ (৫/৩/১৮) শ্রদ্ধেয় পাট প্রতিমন্ত্রীও (বিশ্ব ব্যাংক’র ষড়যন্ত্র নিয়ে) সিরডাব মিলনায়তনের সভার সু উচ্চ কন্ঠে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আমরা যারা পাট সংগঠক কিংবা নিবেদিত পাটকর্মী তাদেরকে নানান ভাবেই এই বিদেশী এজেন্টরা বিব্রত করার চেষ্টা করে। সংগঠকদের বিরুদ্ধে নানান প্রপাগান্ডা ছড়াতেও দ্বিধা করে না। যার ফাঁদে কখনও কখনও সাধারন উদ্যোক্তরাও পরেছে। ফলে এদেশে সে অর্থে এখনও কোন এসএমই রিলেটেড পাট সংগঠন দাঁড়াতে পারেনি। যা হোক এতো কিছুর পরেও পাট এগিয়ে যাবে, বাংলাদেশ সমৃদ্ধ হবে সেই প্রত্যাশা করছি। আর বিশেষ অনুরোধ রাখছি সবার প্রতি যে, লোভে বা টোপে পা না দিয়ে, বিভ্রান্ত না হয়ে ভালোর সাথে থাকুন, আলোর সাথে থাকুন। যে আলো পথ হারাতে দেবেনা। জাতীয় পাট দিবস ২০১৮ সর্বোতভাবে সফল হোক। লেখক: কৃষি ও গণমাধ্যমকর্মী। প্রতিষ্ঠাতা, পাটশালা।