Wed. Mar 12th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

মিয়ানমার সেনাদের গুলিবর্ষণে জাতি আতঙ্কিতআব্দুল্লাহ আল শাহীন – খােলা বাজার২৪। বুধবার, ০৭ মার্চ, ২০১৮:  দেশের আভ্যন্তরীণ সমস্যার শেষ নেই। রাজনীতির মাঠে অস্থিতিশীল পরিবেশ। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের জনগণ দিন দিন ভীতিকর পরস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে। খাদ্যদ্রব্যের ঊর্ধ্বগতি, নিরাপত্তার ঘাটতিসহ সমস্যার যেন অন্ত নেই। সেই মুহূর্তে আমাদের সাথে এসে যোগ দিয়েছে মজলুম বিপন্ন আরাকান শরণার্থী। আমাদের সমস্যার চেয়ে তাদের সমস্যা আরো বিশাল। অকল্পনীয় জুলুমের শিকার আশ্রয়ের জন্য মাইলের পর মাইল পায়ে হেটে এসেছে নিপীড়িত জনগোষ্ঠী। আসার পথে ক্লান্ত রাস্তায় মৃত্যুবরণ করেছে শত আরাকানের বাসিন্দা। দাফন, কাফন ছাড়াই লাশ রাস্তায় পড়ে রয়েছে। নিজ দেশেই খুন হয়েছে হাজার হাজার আরাকান।

বাংলাদেশের মানুষ হৃদয়ের জানালা খুলে আপন করেছে মুহাজিরদের। সরকারের মানবিক দৃষ্টি এবং দেশের মানুষের ইচ্ছের প্রতি সম্মান জানিয়ে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশ আরাকানের শরণার্থীদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে। মানবিক দৃষ্টিতে আশ্রয়ের পর আন্তর্জাতিক পরিম-লে আরাকানের স্বাধীনতার পক্ষে জনমত তৈরি করার কাজ চলছে। আরাকানবাসীকে তাদের মাতৃভূমিতে নিরাপদে স্থানান্তর হবে আমরা বিশ্বাস করি।

রোহিঙ্গা সংকটের পর থেকেই নানা সময়ে বাংলাদেশের-মিয়ানমারের সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টি করা হয়েছে। মূলত এই উত্তেজনা কেবল মিয়ানমার একাই সৃষ্টি করেছে। গত বছর ২৭ ও ২৮ আগস্ট এবং পরবর্তীতে ১, ১০, ১২ ও ১৪ সেপ্টেম্বর পুনরায় একাধিক হেলিকপ্টার আকাশসীমা লঙ্ঘন করে বাংলাদেশের সীমানায় প্রবেশ করে। ঘটনাটি একবারই ভূল করে ঘটেনি। বরং ছিল ইচ্ছাকৃত এবং বারবার ঘটেছে। নতুন করে বৃহস্পতিবার সকাল মিয়ানমার বাংলাদেশের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তের জিরো পয়েন্ট ঘেঁষে সৈন্যসমাবেশ করে। এক পর্যায়ে তারা রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পূর্বের ন্যায় এবারো বাংলাদেশ কেবল পতাকা বৈঠক করেই নিভৃত থাকছে।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী আর উগ্রবাদীরা বৌদ্ধদের নির্যাতনের মুখে লাখো লাখো অসহায় রোহিঙ্গা যখন দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে, তখন এমন আচরণ কিসের ইঙ্গিত দেয়? মিয়ানমারের উস্কানিতে জাতি আতঙ্কিত। কারণ, এমন উস্কানিমূলক কর্মকা- অবশ্যই গভীর উদ্বেগের বিষয়। মিয়ানমারের যুদ্ধ বিমান আকাশসীমা লঙ্ঘিত করাকে স্বাভাবিক ভাবে নিলে চলবেনা। সীমান্তে গুলিবর্ষণ স্বাভাবিক নেওটা কি ঠিক হচ্ছে? আবার তাদের উস্কানিতে প্রভাবিত এমন অনাকাক্সিক্ষত কিছু করাও উচিৎ হবেনা। তবে চোখ কান খোলা রাখা জরুরি। বলা বাহুল্য মিয়ানমার যাই করছে চিন এবং ভারতের সহযোগিতায় করছে ।

আমরা দেখেছি বর্তমান সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ সাময়িক উস্কানির জবাবে দেশের অভ্যন্তরে সেনা সমাবেশ বা সেনা মহড়া দেয়। বাংলাদেশের সেনারা জাতিসংঘের শান্তি বাহিনী বিশ্বের অনেক দেশে কাজ করে চলছে। দেশের জনগণের দাবি, এবার মিয়ানমারের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নিজেদের শক্তি প্রদর্শনে দেশের অভ্যন্তর ভাগে শক্তি প্রদর্শন করা। সীমান্তে অতিরিক্ত বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনী নিয়োগ করা যায়।
লেখক : শারজাহ, ইউএই।