Mon. May 12th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪। রবিবার, ১১ মার্চ, ২০১৮ : বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো নিয়মিতভাবে টাকা পরিশোধের মাধ্যমে জ্বালানি তেল ক্রয় করলেও বাকিতে তেল নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ঋণের বোঝা তৈরি করেছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কাছে জ্বালানি তেল বাবদ ১৭৩০ কোটি টাকা পাবে। এদিকে, জ্বালানি তেলের দাম পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বিমানকে বাকিতে কোনো তেল দেবে না বলে হুমকিও দেয় বিপিসি। কিন্তু এত কিছুর পরও বিমান বাংলাদেশ দেনার টাকা পরিশোধ করতে গড়িমসি করছে।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) অর্থ দপ্তর থেকে জানা যায়, ‘২০১৮ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত সুদসহ বিমানের কাছে জ্বালানি তেল বাবদ ১৭৩০ কোটি টাকা পাবে বিপিসি। যা ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত ছিল ১৬৫০ কোটি টাকা।

সর্বশেষ পাওনার ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করা হলে বিমানের কাছে জ্বালানি জেট ফুয়েল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বুধবার ৭ মার্চ তারিখ পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী সুদ বাদে ১১৮৯ কোটি ৬৮ লাখ ৭৬ হাজার ৭৮৬ টাকা ৫০ পায়সা পাবে কোম্পানিটি। তবে সুদদসহ কত হবে সে বিষয়টি বলতে পারেননি ওই কর্মকর্তা।’

তিনি বলেন, ‘বিমান টাকা পরিশোধ করতে গড়িমসি করে থাকে। বিমানকে প্রতিদিন টাকার জন্য চিঠি-ই-মেল বা পার্সোনালি বলে থাকি। কিন্তু তারা বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে চায় না।’

বিপিসির অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বিমান বাংলাদেশকে বকেয়া টাকা পরিশোধের জন্য বার বার বলা হলেও তারা কর্ণপাত করে না। যার কারণে এ বছরের জানুয়ারিতে আমরা বিদ্যুৎজ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি দেই যে, জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে বিমানকে কোনো রকম বাকিতে জ্বালানি তেল সরবরাহ করব না।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের এই চিঠির বিষয়টি বিমান মন্ত্রণালয়কে জানানোর পর বিমান বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করে এবং বছরের শুরুতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, নিয়মিতভাবে টাকা পরিশোধ করে জ্বালানি তেল নিবে। কিন্তু তারা এক সপ্তাহ বা দুই সপ্তাহ পর থেকেই তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। তারপর আমরা বিষয়টি আবারো বিমান মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি।’

এদিকে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের শুধু বিপিসির কাছেই দেনা আছে তা নয়, এ ছাড়াও বিমানবন্দর ও আকাশ পথ ব্যবহারসহ বিভিন্ন সার্ভিস চার্জ বাবদ আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি পাবে বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। উভয় জায়গায় তারা দেনার টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। বলা চলে, রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থাটি যেন ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়েছে। অথচ বিগত তিন অর্থবছরে বিমান নাকি ৬০৬ কোটি টাকা নিট মুনাফা অর্জন করেছে বলে দাবি করছে।

টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ার পরও তাদেরকে জ্বালানি তেল দেওয়ার বিষয় জানতে চাইলে বিপিসির অর্থ বিভাগের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সরকারি প্রতিষ্ঠান। এখানে রাষ্ট্রের সম্মান জড়িত বলেও আমরা ছাড় দিতে বাধ্য হই।’

এ ব্যাপারে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বলেন, ‘আমরা এখন নিয়মিতভাবে টাকা পরিশোধ করেই ফুয়েল নিয়ে থাকি। আর পাওনা টাকাগুলো আস্তে আস্তে পরিশোধ করছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় আমাদের এখানে ফুয়েলের দাম অনেক বেশি। যার কারণে বিমাণ বাংলাদেশের প্রফিটের ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। আশা করি, সমস্যগুলো কাটিয়ে উঠব।’ সূত্র : পরিবর্তন ডটকম