খোলাবাজার২৪ঃ রবিবার ২০মে, ২০১৮ঃ মেহেদী হাসান (জবি প্রতিনিধি):নারী শিক্ষায় অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এর চেয়ে তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে আছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)।
বাংলাদেশের প্রক্ষাপটে, উচ্চশিক্ষায় অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের বেশ বড় অংশ এখন নারীদের দখলে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দিকে তাকালে তা অনায়াসে যে কেউ বলতে পারবে। কিন্তু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) এর ক্ষেত্রে তুলনামূলক কম দেখা যায় নারী শিক্ষার্থী। তার কারণটাও সহজেই দৃষ্টিগোচর হবে। সেটা হল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) এর আবাসন সংকট।
এক সমীক্ষায় এটা দেখা যায় যে, প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এর মোট শিক্ষার্থীর ৯০৪৫ জন নারী শিক্ষার্থী, যা শতকরা ৪৩%, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) তে ৬৮০৩ জন যা গিয়ে দাড়ায় ৪০%, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) তে ১৫০৭ যা, মোট শিক্ষার্থীর ৪৩% এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) এর ক্ষেত্রে ৪১৭১ জন যা ৪৩% এর মত।
কিন্তু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় যখন অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এর সাথে তাল মিলিয়ে দেশের উন্নতিসাধনে নিজেদের ধারা অব্যহত রাখতে সক্ষম অথচ সেখানে নারী শিক্ষা নিতান্তই কম, যা ২৪% এর মত (৪৭৮৩জন)। আবাসন সুবিধা না থাকায় অবিভাবকগণ অনেকটাই দ্বিধাদ্বন্দে ভোগে তাদের মেয়েদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) তে ভর্তি করানো নিয়ে। এসব মেনে নিয়েও অনেক অবিভাবকই তাদের শিক্ষার্থীদের ভর্তি করায় এবং প্রতি মাসে তাদের বাসা বা মেস ভাড়া ও একাডেমিক খরচসহ সর্বনিম্ন ৮০০০ টাকা গুণতে হয়।
তাই তাদের মনে ছাত্রী হলের আকাঙ্খাটা অতিমাত্রার। আর সেদিকে লক্ষ্য রেখেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করছে "বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল"। যার কাজ সম্পন্ন হতে আর মাত্র ৪০% বাকি। প্রশাসনিক দফ্তর হতে জানা যায়, ২০১৮ সালের জুনের মধ্য শিক্ষার্থী উঠানো সম্ভব এ হলটিতে।
বিশ্ববিদ্যালয় মণ্জুরী কমিশন ২০১৪ সালের ২০শে অক্টোবর এটিতে স্বাক্ষর করেন। যদিও হল নির্মাণের প্রস্তাব ১৫ই আগস্ট ২০১৩ সালে উত্থাপন করা হয় বলে জানা যায়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মারফত এটাও জানা যায় যে, ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে লিয়াকত শিকদার এভিনিউতে বাংলাবাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় ২৩ কাঠা জমি অবৈধ দখল হতে মুক্ত করা হয়। আর ঠিক তখনই আবাসন সংকট নিরসনের লক্ষ্যে ১০০০ আসনবিশিষ্ট ১৬তলা ভবন নির্মাণের চিন্তা করা হয়। অবশেষে ২০১৫ সালে কাজটি শুরু করা হয়। যদিও এর আগে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করেও কাজ তিন বার বাধাপ্রাপ্ত হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে প্রকল্প ম্যানেজার জানান, জায়গার সীমাবদ্ধতা অনেক বড় কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। ভবনটির কাজের জন্য আনা রড, ইট ইত্যাদি রাখাটাও সমস্যা হিসেবে দেখা দিচ্ছে। এছাড়াও এখানে অনেকবার পুলিশি ঝামেলার কারনেও কাজ বন্ধ রাখা হয়েছিলো। তবে তিনি আশ্বাস দেন, কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন হওয়ার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড.মিজানুর রহমান বলেন, জুন মাসেই হলের কাজ সম্পন্ন করে দেওয়ার কথা দিয়েছে কন্স্ট্রাকসন কোম্পানি এবং কতৃপক্ষের তদারকিতে কাজের গতি বাড়ানো হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, খুব দ্রুতই হলে শিক্ষার্থী উঠানো সম্ভব।