Tue. May 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements


খোলাবাজার২৪ মঙ্গলবার ২৪ জুলাই, ২০১৮ঃ  ছাত্রলীগের হামলায় আহত কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা নুরুল ইসলাম নুরু অভিযোগ করেছেন, তিনি চিকিৎসা করার জন্য হাসপাতাল পাচ্ছেন না। এখন পর্যন্ত তাকে পাঁচটি হাসপাতাল পাল্টাতে হয়েছে বলেও অভিযোগ তার।

গত ৩০ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিটুনিতে আহত নুরুকে প্রথমে নেয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখান থেকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু চাপের মুখে তাকে হাসপাতাল ছাড়তে বাধ্য করার খবর এসেছে গণমাধ্যমে।

ওই হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়ার পর নুরের স্বজনরা কোথায় তার চিকিৎসা হচ্ছে সেটা জানাননি গণমাধ্যমকে। তবে গাজীপুর জেলায় একটি হাসপাতালে ভর্তির তথ্য এসেছিল একটি জাতীয় দৈনিকে।নুরু গণমাধ্যমকে বলেন, এখন পর্যন্ত পাঁচটি হাসপাতাল পরিবর্তন করেছি। ফলে সঠিক ভাবে চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না।

হাসপাতাল থেকে কী বলা হয়- জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাসপাতালগুলো ভাবে গভর্নমেন্টের প্রেসার আসতে পারে বা অনেক সময় উপর থেকে চাপ আসে। তাই তারা ভয় পায়। ‘আপনাকে রাখলে আমাদের হাসপাতালের সমস্যা হবে’ জানিয়ে রিলিজ দিয়ে দেয়।

ভর্তি তারা ঠিকই করে কিন্তু বিভিন্ন জায়গা থেকে কল এলে তারা আর রাখতে চায় না-বলছিলেন নুরু।এই সমস্যার কারণে একটি হাসপাতালে নাম পাল্টে ভর্তি হওয়ার কথাও বলেন নুরু।

হাসপাতালে যে চিকিৎসা করাচ্ছি সেখানে নামটা পর্যন্ত চেঞ্জ করে চিকিৎসা করাতে হচ্ছে। নুরুল হক নুরু নাম শুনে চিনে ফেললেই কেউ চিকিৎসা করাতে চায় না।

প্রায় এক মাস আগের পিটুনির প্রভাব থেকে এখনও মুক্ত হতে পারেননি কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলন করা সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি জানান, তার হাতের জয়েন্টে এখনও ব্যথা আছে। কিডনির ব্যথাটাও রয়ে গেছে। কোমরে পেটানোয় কিডনিতে আঘাত লেগেছে বলে জানিয়েছে ডাক্তাররা।

নুরু বলেন, চিকিৎসকরা বলেছে নড়াচড়া ও স্বাভাবিক হতে বেশ কয়েক সপ্তাহ সময় লাগবে। এখনও তো হাসপাতালের বেডে ঘুমাতে পারি না, আমি মেঝেতে ঘুমাই।

কোন পাশ হয়ে ঘুমাতে পারি না। কোন সময় চেষ্টা করলেই বুকে ব্যথা করে। তাই সোজা হয়ে ঘুমাতে হয়। ওয়াশ রুমে একা এখনও যাওয়া সম্ভব হয় না কারও সাহায্য ছাড়া। তার ওপর সারা দিন টেনশনে থাকতে হয়।

নিম্ন আয়ের কৃষক পরিবারের সন্তান নুরের চিকিৎসা তার বাবার জন্য বিরাট চাপ হয়ে গেছে। জমি বিক্রি করে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে তার বাবা ঢাকায় এসেছিলেন। কিন্তু এখন অবধি তিন লাখের বেশি খরচ হয়েছে বলে জানান নুর।

তিনি বলেন, ফ্যামিলি এখন টেনশনে আছে খরচ বহনে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাহায্য করার কথা ছিল কিন্তু তারা কোন সহযোগিতা করেনি।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেমে ছাত্রলীগের হামলার মুখে পড়ার পেছনে আন্দোলনকারী নেতা রাশেদ খাঁনের একটি ভিডিও বার্তা কারণ। গত ২৭ জুন ‘রক্ত গরম হয়ে যাওয়া’ রাশেদ ১৮ মিনিটের বার্তার এক পর্যায়ে বলেছিলেন, ‘মনে হয় তার বাপের দেশ’। এই কটূক্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে করা হয়েছে এমন ধারণা থেকেই ক্ষুব্ধ হয় ছাত্রলীগ আর ৩০ জুন কোটা আন্দোলনকারী সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে হামলা হয়।