Tue. May 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলাবাজার২৪.মঙ্গলবার,৩১ জুলাই, ২০১৮ঃ ( ভারতরে আসাম থেকে ফারুক আহমেদ) ; মিশ্র সংস্কৃতিই আমাদের অর্জিত বৈভব তা আমরা ভুলে গেলে চলবে না। দেশের নাগরিকদের বিদেশী বানিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করছে কোন উদ্দেশ্যে বুঝতে হবে। এভাবে বাঙালি মুসলমানদের খেদিয়ে দিয়ে ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র বানাতে ওরা পারবে না। ভারত আমাদের মাতৃভূমী। ওরা যে ভাবে বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিচ্ছে তাতে ভারত গভীর সঙ্কটের মধ্যে আছে। চরম বিদ্বেষ ছড়ানোর কৌশল দেখে আমরা গভীর ভাবে চিন্তিত। আর লজ্জিত হই এই ভেবে আমার মহান ভারতকে আর কত নিচেয় নামাবে ওরা। প্রশ্ন ওরা কারা? মানুষ না মানুষের মতো অন্য কিছু?


"৪০, ০৭,৭০৭ জন বাঙালি অসমের প্রাথমিক খসড়া পঞ্জি থেকে বাদ পড়েছেন। শোনা যাচ্ছে, এর মধ্যে ৩৭ লক্ষ বাঙালি মুসলমান। 


টিভি চ্যানেলে ছিল একটা অনুষ্ঠান। জনৈক বিজেপি নেতা (অত্যন্ত ক্ষুদ্র), কী তার (তাঁর নয়, সরি) দাপট! সে প্রথমে বলে, হিন্দু-মুসলমান, বাঙালি-অবাঙালির বিষয় এটা নয়। শেষে বলে, আমি এখানে কথা দিয়ে গেলাম, কোনও হিন্দু বাঙালিকে তাড়ানো হবে না। বাকিটা বোধগম্য।  সে এমন কথাও বললো, তার পূর্বপুরুষকে মুসলমানরা নিগ্রহ করেছিল, তাই সে চায় না, এই দেশে মুসলমান থাকুক। 
বিরতিতে সে বলে, আপনারা তো একটা দেশ নিয়েছেন, আবার আর একটা? এই ভাবে চলছিল…আমি, হ্যাঁ ‘আমি’ শব্দ পছন্দ করি না, তবু বলতে বাধ্য হচ্ছি।


আমি দাড়িহীন মুসলমান। প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়েছি। মহাভারত নিয়ে গবেষণা করেছি। রামকৃষ্ণ মিশনে হিন্দু দর্শন পড়াই। আমাকে ওই সাম্প্রদায়িক বিজেপি ক্ষুদ্র নেতার কী রোষের মুখে পড়তে হল, অন স্ক্রিন এবং অফ স্ক্রিন ভাবতে পারবেন না। লোকটা (সচেতনভাবে ‘ভদ্রলোক’ লিখলাম না) মিথ্যে তথ্য দিয়ে গেল সমানে। কী ঘৃণা ওর! ও বিজেপি! ভাবি এখন, দাড়িটুপি মুসলমানরা এই দেশে তবে কতটা নিরাপদ! 


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কুর্ণিশ, তিনি ওই অনিকতেদের পাশে থাকবেন বলেছেন। তিনি তাঁর মানবিক মুখ দেখালেন। প্রণাম নেবেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী!" লিখেছেন প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক ও অধ্যাপক শামিম আহমেদ।

"এই ভারতের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার চেয়ে জর্ডান, আমেরিকা, ব্রিটেন, তুরস্ক প্রভৃতি দেশের রাষ্ট্রীয় পলিসি কিছুটা ভালো বলেই সেখানে শরণার্থীদের জায়গা হয়, দুনিয়াকে নেতৃত্ব দেয়। সেখানে লক্ষ লক্ষ ভিনদেশি মানুষকে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়। ভারতের হাজার হাজার মানুষ ওইসব দেশের বাসিন্দা হয়েছেন। যদি অসমের মতো সেখানে এনআরসি করা হয় তবে সব ভারতীয়কে এই দেশে ফিরতে হবে। অবশ্য, এমন জাতপাত কেন্দ্রিক সাম্প্রদায়িক ও নোংরা রাজনীতি সেখানে হয়না। যে যাই করুক, দেশের স্বার্থে সবাই এক।
এটা এমন একটি দেশ যেখানে এক সাথে ব্রিটিশের বিরুদ্ধে লড়াই করে দেশ স্বাধীন হলো। দেশভাগ হয়েছে। আবার সাধারণ মানুষকে বারবার উদ্বাস্তু হতেও হয়েছে। অসমের এই লক্ষ লক্ষ মানুষ বিদেশি? তাহলে কোন দেশের? দশকের পর দশক বাস করেও তারা বিদেশি? যে শিশুটি এই মাটিতে জন্মগ্রহণ করলো, বড়ো হলো সেও বিদেশি? এইসব আইন নাকি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস? 
ভারতীয় বংশোদ্ভূত বলে  গর্ব করেন? কেন করেন? আপনার ভারতে যে মানুষটি খ্যাতি পেলোনা বিদেশের মাটিতে সে যখন হিরো হয়ে যাচ্ছে তখন আপনারা 'ভারতীয় বংশোদ্ভূত' বলে গর্ববোধ করছেন। এতে আমাদের লাভ কী? ব্যর্থতা ঢাকতে এই সব কথা? কে গর্জে উঠবে সেই আশায় বসে না থেকে চলুন পথে নামি। আমরা এর ওর মুখের দিকে তাকাচ্ছি। কেন? আমরা কি পারিনা প্রতিবাদ করতে? কেউ পথে নামুক আর না নামুক, আমাদের কবিতা, গান গল্প আর স্লোগান দিয়ে ভারতকে মুক্ত করতে হবে।" বলছিলেন, সাংবাদিক মোকতার হোসেন মন্ডল।

"অধ্যাপক তপোধীর ভট্টাচার্য-এর নতুন করে পরিচয় দেওয়ার কিছুই নেই। আসামে বাঙালির এই চরম সংকটকালে তিনি যেভাবে দক্ষ সেনাপতির মতো লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন দুনিয়ার সমগ্র বাঙালি সমাজ তার জন্য গর্বিত। ২৯, ৩০, ৩১ জুলাই ২০১৮ কলকাতার পুবের কলম পত্রিকায় তিন কিস্তির তাঁর সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। আজ প্রকাশিত হয়েছে শেষ কিস্তি। আসাম থেকে বাঙালি বিতাড়নে নীলনকশা ও সংশ্লিষ্ট বহু বিষয় এই সাক্ষাৎকারে আলোচিত। আসুন, এই আলোচনাটি অনুধাবন করি।" লিখেছেন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক একরামূল হক শেখ।

"বাংলার বাঙালিরা সাবধান। বাস্তবিক একজন নির্ভেজাল বাঙালি হিসাবে আমি সমগ্র বাঙালি যার যে দেশে বাড়ি হোক কিংবা যে প্রান্তে থাকুক আমরা কিন্ত বাঙালি। আমাদের মূল ভূখন্ডটা বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গ বর্তমানে বাংলা হতে চলেছে।দেশ ভাগের দায় তো রাজনীতি ও গদির স্বার্থে, এখানে সাধারণ বাঙালি কিম্বা ভারতীয়র কিছু করার ছিলনা।বাঙালিরা দুই বাংলায় ছাড়াও অসম ও ত্রিপুরা সহ জীবন জীবিকার তাগিদে ভারত সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আছেন।

দেশ ভাগের যন্ত্রনা যেমন হিন্দু বাঙালির আছে তেমনি মুসলিম বাঙালিরও আছে।বাংলাদেশের হিন্দুরা যেমন অনেকেই সম্পদ, বাস্তু ভিটা হারিয়ে এবং ত্যাগ করে ভারতে এসেছেন তেমনি সংখ্যায় কম হলেও অজস্র মুসলিম বাঙালিও বাংলা ভাগের একই রকম লাঞ্ছনার শিকার।

আপনারা অনেকেই জানেন এবং যারা জানেননা কলকাতা চত্বরে নাকতলা, বাঁশদ্রোনী, টালিগঞ্জ, সেলিমপুর, কসবা, যাদবপুর সহ এরকম অজস্র জায়গার মুসলমানরা প্রবল অত্যাচার ও জীবন হানির আশংকায় ভিটে মাটি ত্যাগকরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। বর্তমানে অনেক মুসলমান ঘর ভাড়া পান না।

মুসলিমদের এই জায়গাগুলি বেদখল হয়ে এখন কলোনি বা নতুবা ফ্লাট গড়ে উঠেছে, এই সব জায়গা গুলিতে বেশিরভাগই বাংলার মুসলমান বসবাস করতেন। দেশ ভাগ হওয়ার আগে।

নায়করাজ রাজ্জাক সাহেব নাকতলার মানুষ, উনিও ওনার সম্পদ ত্যাগ করে বাংলাদেশে সেটেল হয়েছেন। পারিবারিক সূত্রে আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনি ও জানি বলে ঘটনাটা জানি। রাজ্জাক সাহেবের মত এরকম অনেক ভুক্তভোগী মুসলমান আছেন যারা বাংলাদেশে চলে গেছেন। চলে যেতে তাঁদের বাদ্য করা হয়েছিল চরম অত্যাচার করে।

উল্লেখিত বিষয়টা উল্লেখ করলাম কারণ অনেক মানুষ মনে করেন দাঙ্গায় কেবল ওপার বাংলার হিন্দুদের ক্ষতি হয়েছে। দাঙ্গায় এপার বাংলার মুসলিমদেরও সমূহ ক্ষতি হয়েছে।

বিজেপি এখন পশ্চিমবঙ্গে যে হিন্দুত্বের জিগির তুলছে এবং এই বাংলার হিন্দুরা যদি এতে মেতে উঠে বিজেপির হাতকে শক্তিশালী করে, তাহলে মুসলমানদের থেকে অনেক বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হবে ১৯৭০ সালের পর যেসব বাংলাদেশি ভারতে এসে বসবাস করছেন তারাই।

আমি ব্যক্তিগত ভাবে এমন অজস্র হিন্দু পরিবারকে বেশ ঘনিষ্ট ভাবে চিনি ও জানি যারা নানান কারনে বাংলাদেশ থেকে ১৯৭০ এর পর পশ্চিমবঙ্গে বসবাস করছেন। এরকম পরিবার গোটা পশ্চিমবঙ্গের আনাচে কানাচে বসবাস করছেন। এদের অনেকেই সরকারি চাকরিও করেন।

৩০ বছর চাকরি করে অসমের মুসলমান যদি বিজেপি ও আরএসএস এর সৌজন্যে বিজেপির গাইড লাইন মেনে নাগরিকত্ব প্রমাণের অভাবে বাংলাদেশী হয়ে যান, এই বাংলার হিন্দু ভাইবোনদের একই পরিনাম হবে।

এক ঘোর অনিশ্চয়তা ও চরম অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে শান্ত ও সাধের বাংলা দাউ দাউ করে জ্বলবে আর এই আগুনের লেলিহান শিখায় আমি, আপনি, আমাদের প্রিয় প্রতিবেশী ও পরিজনরা পুড়ে মরবে, কারণ গাঁয়ে আগুন লাগলে পীর কিম্বা সন্ত-সাধুরাও পুড়বে, এটাই স্বাভাবিক নিয়ম।

সুতরাং এখন থেকে পশ্চিমবঙ্গের অর্থাত এপার বাংলার হিন্দু মুসলিম সহ আর সব বাঙালি বিজেপি ও আরএসএস কে আমরা নির্বাচনে পরাজিত করতে না পারি তাহলে প্রত্যেক বাঙালির কপালে সমূহ দুর্দশা অপেক্ষা করছে।ভাবো ও জাগো বাঙালি জাগো।" লিখেছেন, মির্জা আজাদ।

প্রসঙ্গ আসাম ফেসবুকে মুসলমানের আরো মুসলিম হওয়া আর হিন্দুর আরো হিন্দু হওয়া দেখছি- মানুষ থেকে আরো উন্নত মানুষ হওয়া দেখতে পাচ্ছি না। এই বিষয় নিয়ে কলম ধরছেন প্রখ্যাত চিকৎসক ডা: রেজাউল করীম তিনি লিখেছেন, "আসামে যা ঘটছে তা নিয়ে অনেকেই লিখছেন। মনে রাখতে হবে দেশের সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে এন আর সি তৈরী হয়েছে।শুধু বিজেপি দায়ী বলে দিলে তা সত্যকথন হবে না। দ্বিতীয় তালিকায় শুধু মুসলিম আছেন এই বক্তব্য ও সঠিক নয়। বহু গণ্যমান্য বাঙালির নাম এই তালিকায় নেই, তাদের একটা বড় অংশ জন্মসূত্রে  হিন্দু। এই যে একটি রাজনৈতিক দল বলছে মোল্লাদের তাড়িয়েছে- এ হল 'ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে'র উজ্জ্বল উদাহরণ। আজ যদি ৭১ সালকে ভিত্তিবর্ষ ধরে বাংলায় এন আর সি হয়, তাহলে ওপার বাংলা থেকে বিতাড়িত ও আশ্রয় প্রার্থী বহু মানুষের জীবনে বিপর্যয় নেমে আসবে। 


ইতিহাসে জনতত্ত্ব নিয়ে আমরা যত চিন্তা করি, নরতত্ত্ব নিয়ে তা করি না বলে নীহাররঞ্জন আক্ষেপ করেছেন। বস্তুত: জনতত্ত্ব দ্রুত পরিবর্তনশীল কিন্তু নরতত্ত্ব পরিবর্তনে সহস্র বছর ও কম। তাই, বাঙালী বলে চিহ্নিত মানুষের ধর্মীয় পরিচয় যাই হোক নৃতত্ত্বের দৃষ্টিতে তারা ঘনিষ্ঠ। হয়ত, কয়েক শত বৎসরের ব্যবধানে আজকের শত্রুর সাথে একাসনে আহার না করতে পারলে জীবন মরুভূমি হয়ে যেত। নীহাররঞ্জন লিখেছেন- "দুর্ভিক্ষ, রাষ্ট্রবিপ্লব, দেশচ্ছেদ, প্রান্তীয় দ্বেষ ও হিংসা, চারিত্রদৈন্য, আর্থিক দুর্গতি প্রভৃতি সকল শত্রু মিলিয়া আজ বাংলাকে ও মূঢ়, আশাহত বাঙালী জাতিকে চরম দুর্গতির মধ্যে আনিয়া ফেলিয়াছে।" তাঁর মতো আমাদের সকলের এই মনস্তাপ এখন শারীরিক যন্ত্রণার কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে।


ধর্ম বা বর্ণ যাই হোক এই বিপর্যয়ের শিকার বাঙালী। মনে হয় পৃথিবীর একমাত্র জাতি যারা শুধু মাতৃভাষার জন্য একের পর এক বিপর্যয়ের শিকার হয়েছে। বাঙালী বৌদ্ধ নেড়ে থেকে মুসলিম নেড়ে হয়েছে, ব্রাহ্মণ্যবাদের ঠেলায় অন্তঃজ ব্রতচারী বাঙালী চতুর্বর্ণের আশ্রয় নিয়েছে কিন্তু ভোগান্তির শেষ হয় নি। ভাঁড়ু দত্তরাই আমাদের ডেস্টিনির মালিক। রাজনৈতিক ওয়াহাবি ইসলামের ফাঁদে পড়া বাঙালির সব গিয়েছে। আমাদের সপ্তডিঙা নেই,  সহজিয়া আদর্শকে ছুঁড়ে ফেলে, আমাদের অতীত গৌরব আর সম্ভ্রমবোধ কে খুন করেছি। অবলীলায় একদল ধর্মের নামে জবাই করছে, আরেক দল বদলা নিতে জবাই করতে পারছে না বলে ইংরেজ-নির্মিত বাঙালী স্টাইলে ' তোকে পারি নি তোর ছাকে ছাড়বো না বলে' হুঙ্কার ছাড়ছে। তাহলে পাঁচ সহস্রাব্দ প্রাচীন এই জাতি কি শুধু যদুবংশের মত বিনাশ হওয়ার প্রহর গুনছে? 
হিন্দু মুসলিমের বিভেদ যেভাবে খুঁচিয়ে তোলা হচ্ছে তা কারো জন্য ভালো হবে না। ঐতিহাসিক কারনে এই দেশে ধর্ম ভিত্তিক রাষ্ট্র সম্ভব নয়- মোদিবাবুরা যাই বলুন হিন্দুর নয়া  সংজ্ঞা বেশির ভাগ হিন্দুর পছন্দ হবে না। তারা জোরে জোরে চিৎকার করলেই নিরব গরিষ্ঠ মানুষ তা মেনে নেবে এটা ভাবার কোন কারন নেই। শুধু ক্ষমতার জন্য দেশের সর্বত্র মুসলিম-হিন্দু, ছোটজাত-বড়জাত এই বিভেদে যে সামাজিক অস্থিরতা তৈরী করবে, ফেসবুকে র জানালা দিয়ে তা দেখা না গেলেও সর্বত্র তার ছাপ পড়বে।


বৈচিত্র আছে বলেই এই দেশ সুন্দর ও নিরাপদ। এই বৈচিত্র ও নিরাপত্তা না থাকলে ফেসবুকে গুড মর্নিং বা খাবারের থালার ছবি পোস্ট করার বদলে "দেখ আমি এখনো বেঁচে আছি" স্টান্স দিতে হবে। কাজেই, নিজের ব্যক্তিগত তিক্ত স্মরণ থেকে ব্যক্তি, সমাজ, রাজনীতি বা ধর্ম নিয়ে সাধারণীকরন না করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। মাইক্রোস্কোপের তলায় ফেলে দেখলে, প্রতিটি মানুষের ত্রুটি খুঁজে পাওয়া যাবে। নতুন বউয়ের প্রতিটি খুঁত ধরে তার বাপের বাড়ির গঞ্জনা যেমন শুধু দাম্পত্যকে তিক্ত ও কলুষিত করে তেমনি একজনের ত্রুটি তুলে ধরে কোন সমাজকে দোষী করলে তিক্ততা বাড়বে। কারো কিছু লাভ হবে না।ফেসবুকে মুসলমানের আরো মুসলিম হওয়া আর হিন্দুর আরো হিন্দু হওয়া দেখছি- মানুষ থেকে আরো উন্নত মানুষ হওয়া দেখতে পাচ্ছি না। ধরুন, মোদিকে দানব বানিয়ে দিদিকে জিতিয়ে আনলেন, কাল থেকে আপনার জীবনে বসন্ত আসবে? ধরুন চটি জুতো নিয়ে নোংরা রসিকতা করে মমতার বাপান্ত করলেন, কাল দিলীপ ঘোষ আপনার মুখ্যমন্ত্রী তাহলে আপনার জীবনে স্বর্গ নেমে আসবে? 


নিজের ভবিষ্যত একা একা স্থির করার দিন গিয়েছে। সমাজের সুস্থিতি আর সমাজের সাম্য ও শান্তির উপর নির্ভর করছে আমাদের ভালোমন্দ। ব্যক্তিগত হতাশা, না পাওয়ার দুঃখ, তিক্ততা, অন্যের প্রতি রাগ-দ্বেষ-ঘৃণা-অপমান কোন কিছুই আমাদের অস্তিত্বের ব্যক্তিগত সঙ্কটের মহৌষধ নয়। ভবিষ্যতে আমরা সবাই মৃতদেহের স্তূপ- আজ কাল বা পরশু। দ্বিজেন রায় ধার করে বলতে চাই- বাংলা শুধু হিন্দুর নয়, বাঙলা শুধু মুসলমানের নয়, মিলিত হিন্দু মুসলমানের মাতৃভূমি গুলবাগ এই বাংলা। এ যদি না বুঝতে পারি আমার সাজানো বাগান শুকিয়ে গেল বলে শুধু কাঁদতে হবে।"