খোলাবাজার২৪. শুক্রবার ১৭ আগস্ট ,২০১৮ঃ কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও চান্দেরঘোনা এলাকায় শুক্রবার দুপুরে বনপ্রহরীদের সঙ্গে গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনায় এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। প্রহরীরা বন বিভাগের জমি দখলে বাধা দিলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তির নাম মোস্তাক আহমদ (৩৮)। তিনি ওই এলাকার মোহাম্মদের ছেলে। গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি ঘটনাস্থলে মারা গেছেন। হামলায় আহত হয়েছেন সাতজন বনকর্মী। এ সময় হামলাকারীরা বনকর্মীদের একটি অস্ত্র ভাঙচুর করে ও আরেকটি লুট করে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ পরিস্থিতিতে ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দীন খন্দকার বলেন, চান্দেরঘোনা এলাকায় বন বিভাগের জমি দখলকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষে গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মোস্তাক আহমদ মারা গেছেন। তবে তিনি কার গুলিতে মারা গেছেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। সংঘর্ষে আহত ৭ জন বনকর্মীকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত বন কর্মী ও পুলিশ সূত্র জানায়, শুক্রবার পৌনে ১২টার দিকে মোস্তাক আহমেদের নেতৃত্বে ৪০-৪৫ জন লোক চান্দেরঘোনা এলাকায় বন বিভাগের জমি দখল করে গাছকাটা শুরু করেন। খবর পেয়ে স্থানীয় মেহেরঘোনা বনবিট কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ খানের নেতৃত্বে একদল বনপ্রহরী ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাধা দিলে তাঁদের ওপর হামলা করা হয়। এ সময় বনকর্মীরা ফাঁকা গুলি ছুড়লে অপর পক্ষ থেকে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়া হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান মোস্তাক আহমদ। বনকর্মীদের গুলিতে মোস্তাকের মৃত্যু হয়েছে—এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তে কয়েক শ মানুষ (এলাকাবাসী) ঘটনাস্থলে এসে বনকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে সাতজন বনকর্মী আহত হন।
কক্সবাজার সদর হাসপাতাল পুলিশ বক্সের ইনচার্জ এসআই আপন হোসেন মানিক বলেন, বেলা সোয়া একটার দিকে আহত সাতজন বনকর্মীকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়েছে। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী বলেন, হামলা ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বনকর্মীদের শরীরের বিভিন্ন অংশ জখম হয়েছে।
কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ঈদগাঁও বনরেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মামুন মিয়া বলেন, বন বিভাগের জমি দখলে প্রহরীরা বাধা দিতে গেলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে সাতজন বনকর্মী আহত হয়েছেন। এ সময় বনকর্মীদের একটি অস্ত্র ভাঙচুর ও একটি অস্ত্র লুট করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে। বিকেলে পুলিশ লুণ্ঠিত অস্ত্র উদ্ধার ও হামলাকারীদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চান্দেরঘোনা এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ডিএফও হক মাহবুব মোর্শেদ বলেন, দায়ের কোপে আহত তিনজন বনকর্মীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর চেষ্টা চলছে।