খোলাবাজার২৪.শুক্রবার ৩১ আগস্ট ,২০১৮ : যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানিয়েছেন, ঈদুল আজহায় ১৩ দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ২৫৯ জন, আহত ৯৬০।
শুক্রবার বেলা ১১টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান। পাশাপাশি সড়ক মহাসড়কে পরিবহন দুর্ঘটনা রোধ ও দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু কমিয়ে আনতে ১০ দফা সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতি।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, বিআরটিএর সাবেক চেয়ারম্যান আইয়ুবুর রহমান খান, আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ও এফবিসিআই এর সাবেক পরিচালক আব্দুল হক প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে ঈদুল আজহায় দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর পরিসংখ্যান তুলে ধরেন মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, এবারের ঈদযাত্রায় সরকারের বিভিন্ন সংস্থার নানামুখী তৎপরতা ও মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করার কারণে ঈদুল ফিতরের তুলনায় দুর্ঘটনা ১৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ, প্রাণহানী ২৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং আহত ২৪ দশমিক ১১ শতাংশ কমেছে।
অপরদিকে জবাবদিহিতার অভাবকে- সড়কের মূল সমস্যা হিসেবে বর্ণনা করে হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনা পৃথিবীর সব দেশেই হয়। কিন্তু আমাদের এখানে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে বেশি কথা বলার কারণ আমাদের এখানে এমন কিছু দুর্ঘটনা ঘটেছে যেগুলোর অর্ধেক চাইলে এড়ানো যেত।
সরকারের দুজন মন্ত্রীর পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সমিতির শীর্ষ পদে থাকার বিষয়ে ইঙ্গিত করে সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে যারা নীতি নির্ধারণ করেন, তিনিই আবার মালিক শ্রমিক প্রতিনিধি। জবাবদিহিতার ব্যাপারে যে অনাগ্রহ এর মূলে রয়েছে এই কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট।
যাত্রীকল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ ১. ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী বহন করা ২. বিরতিহীনভাবে যানবাহন চালানো ৩. অপ্রাপ্তবয়স্ক ও অদক্ষ চালক-হেলপার দ্বারা যানবাহন চালানো ৪. নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মহাসড়কে অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, নসিমন-করিমন ও মোটরসাইকেলের অবাধ চলাচল ৫. বেপরোয়া গতিতে যানবাহন চালানো ৬. সড়ক-মহাসড়কে ফুটপাত না থাকা ও ৭. সড়ক-মহাসড়কে বেহাল দশা দুর্ঘটনার কারণ।
সড়কে দুর্ঘটনা রোধে যাত্রীকল্যাণ সমিতির সুপারিশ- ১. সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে রোড সেইফটি ইউনিট গঠন করে নিয়মিত দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করে প্রতিকারের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ ২. প্রশিক্ষিত চালক গড়ে তোলার জন্য সরকারি খরচে ‘চালক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ চালু ৩. নিয়মিত রাস্তার রোড সেইফটি অডিট করা ৪. ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধ করা ৫. ওভারলোড নিয়ন্ত্রণে মানসম্মত পর্যাপ্ত গণপরিবহনের ব্যবস্থা করা ৬. মহাসড়কে ধীরগতির যান ও দ্রুত গতির যানের জন্য আলাদা আলাদা লেইনের ব্যবস্থা করা ৭. মহাসড়কে নছিমন-করিমন, ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটোরিকশা বন্ধে সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্ত শতভাগ বাস্তবায়ন ৮. ভাঙা রাস্তার সংস্কার করা ৯. ফিটনেসবিহীন লক্করঝক্কর ও ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন চলাচল বন্ধে উদ্যোগ এবং ১০ জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে ফুটপাত, আন্ডারপাস, ওভারপাস তৈরি করে পথচারীদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করা।