খোলাবাজার২৪. বুধবার,০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ : মোঃরাসেল মিয়া,নরসিংদীপ্রতিনিধিঃ আগে জেলার বিভিন্ন জায়গায় সারি সারি বাগানে এ কলা চাষ হলেও এখন হাতে গোনা কয়েকজন কৃষক এ কলার চাষ করেন ।
চাষাবাদের খরচ বৃদ্ধি ও পুঁজির স্বল্পতা সেই সাথে রোগে আক্রান্ত হওয়ার ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে নরসিংদীর ঐতিহ্যবাহী ‘অমৃত সাগর’ কলা।জেলার কলাচাষীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূলত নদীবেষ্টিত হওয়ায় এ জেলার মাটি পলি ও দোআঁশ যুক্ত।
আর অমৃত সাগর কলার ফলন এ ধরনের মাটিতেই বেশি হয়। তবে বর্তমানে এ অঞ্চলের মাটির গুণগত মান নষ্ট, বৈরী আবহাওয়া এবং ঝড় বৃষ্টির কারণে এ কলার চাষ কমে গেছে।
এছাড়া অতিমাত্রায় রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে মাটি শক্ত হয়ে যাওয়ায় দেশি জাতের সাগর কলা চাষ ব্যাহত হচ্ছে।বর্তমানে জেলার ছয়টি উপজেলার কিছু অংশে সুস্বাদু ‘অমৃত সাগর’ কলা চাষ করা হলেও এক সময় মনোহরদী উপজেলা ছিল এ কলার জন্য খুবই বিখ্যাত ।তবে সম্প্রতি এ কলার ঐতিহ্য আবার ফিরিয়ে আনতে কাজ করছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। ।
খরচ বাড়ার কারণে দিন দিন কমে যাচ্ছে অমৃত সাগর কলার বাগান।জেলা কৃষি বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে জেলায় ২ হাজার হেক্টরের অধিক জমিতে কলা চাষ হয়।
তবে শুধু মনোহরদী উপজেলায় এক হাজার হেক্টর জমিতে কলা হয়। যার মধ্যে ‘অমৃত সাগর’ কলার চাষ হয় মাত্র ৫০ হেক্টর জমিতে।বেশ কয়েক বছর ধরেই বিভিন্ন রোগের কারণে ফলন ভাল না হওয়ায় কৃষকরা এ কলা চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন বলে জানালেন কয়েকজন কৃষক।তারা জানান, এখন তারা বারি-১ জাতের সাগর কলা চাষ করছেন।
তবে ফলন ভাল হলেও স্বাদ না থাকায় এ কলার দাম অনেক কম। তাছাড়া অমৃত সাগর কলা চাষে খরচ বেশি হওয়ায় তা চাষ অনীহা তাদের।সৈয়দের খোলা গ্রামের কলাচাষী আবুল হোসেন বলেন, আগে ৫ বিঘা জমিতে অমৃত সাগর কলার চাষ করলেও মাটির গুণগত মান নষ্ট, বৈরী আবহাওয়া ,ঝড় বৃষ্টির, সার ও কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তাকে কয়েক লাখ টাকা লোকসান দিতে হয়েছে।
তাই কম সময়ে বেশি ফলনের আশায় এখন বারি জাতের কলা চাষ করছেন তিনি।আর সৈয়দের খোলা গ্রামের কলাচাষী হুমায়ন গাজী বলেন, সরকারি সহায়তা পাওয়া গেলে আবারও এ জাতের কলা চাষের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এখন বাজারে যে সব সাগর কলা পাওয়া যায় তা আমাদের দেশিয় জাত নয়।
হাই ব্রিট জাতের এ সকল সাগর কলায়
সেই স্বাদ বা গন্ধ কোনটাই নেই।’এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক লতাফত হোসেন বলেন, ‘মাঠ দিবসসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষকদের উৎসাহ দিয়ে এ জাতের কলা চাষের গৌরব আবারও ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
’এছাড়া কলা চাষীদের মাঝে সার ও কীটনাশকসহ সরকারি ঋণ সহযোগিতা দেওয়ার পরিকল্পনাও করা হচ্ছে বলে জানান তিনি ।