খোলা বাজার ২৪. মঙ্গলবার ,১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮: অবশেষে ডাকসু নির্বাচনের জট খুলল। আসছে বছরের মার্চ মাসে নির্বাচন হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। বড় দুই ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন করার পক্ষে। অন্যদিকে বাম ছাত্রসংগঠনগুলো এ বছরের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছে। নির্বাচনের আগে ক্যাম্পাসে সব সংগঠনের সহাবস্থানের পরিবেশ তৈরির দাবি জানিয়েছে ছাত্রদল।
ক্যাম্পাসে ‘ক্রিয়াশীল’ ১৩টি ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে আলোচনার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জানিয়েছেন, আগামী বছরের মার্চের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন করার লক্ষ্য নিয়ে প্রশাসন কাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কমিটি, শৃঙ্খলা পরিষদ ও সিন্ডিকেট ডাকসু নির্বাচনের একটা লক্ষ্য এরই মধ্যে নিয়েছে বলেও জানিয়েছেন উপাচার্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি বড় প্রতিষ্ঠানের ভোটার তালিকা প্রণয়ন একটি বড় কাজ।
এরই মধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার কাজ শুরু হয়েছে। খসড়া ভোটার তালিকা হয়ে গেলেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের একটি বড় কাজ হয়ে যাবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদকে একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানই বলা যেতে পারে। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরের বছরই যাত্রা শুরু করে ডাকসু। ভাষা আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-আন্দোলনসহ বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামে ডাকসু ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতারা সব সময় ছিলেন সামনের কাতারে।
স্বাধীন বাংলাদেশেও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ডাকসু ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভূমিকা অনেক বড়। প্রতিবছর ডাকসু নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ভোট হয়েছে মাত্র ছয়বার। ২০০৯ সালের নির্বাচনের পর গত ২৫ বছর নির্বাচনের বাইরে রয়েছে ডাকসু।
ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাস নতুন করে মুখরিত হবে বলে আশা করা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রসংসদ অতি জরুরি। শিক্ষার্থীদের বিকশিত হওয়ার সুযোগ করে দেয় ছাত্রসংসদ। সাহিত্য-সংস্কৃতিচর্চায় আসে নতুন গতি।
ডাকসু নির্বাচনের পাশাপাাশি দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংসদেরও নির্বাচন অনুষ্ঠান এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। তার আগে দরকার নির্বাচনের পরিবেশ। অনেক ক্যাম্পাসেই কোনো কোনো ছাত্রসংগঠন ঢুকতে পারে না বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে।
তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গত রবিবার যে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল, তা আমাদের আশান্বিত করে। সভার পর একসঙ্গে সাংবাদিকদের সামনে আসেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ও ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসান।
কোলাকুলি করেছেন তাঁরা। এই সহাবস্থান ধরে রাখতে পারলে ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।