খোলা বাজার ২৪. বৃহস্পতিবার,২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮: মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো ভিডিও কনফারেন্স করে দুটি প্রকল্প উদ্বোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে নতুন মাত্রা যুক্ত হলো। গত ১০ সেপ্টেম্বর এক ভিডিও কনফারেন্সে বিদ্যুৎ ও রেল সংযোগ প্রকল্প উদ্বোধন করা হয়। মঙ্গলবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীরা উদ্বোধন করলেন মৈত্রী পাইপলাইন ও ঢাকা-টঙ্গী-জয়দেবপুর রেলওয়ে প্রকল্প। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্ব ছাড়া সম্পর্কের এই অগ্রগতি সম্ভব ছিল না বলে উল্লেখ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। আগামী দিনগুলোতে ভারত ও বাংলাদেশের মানুষ উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য কাজ করবে, এমন বিশ্বাসের কথাও উচ্চারণ করেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়নে ভারতের অব্যাহত সহযোগিতা চেয়েছেন। মঙ্গলবার যে দুটি প্রকল্প উদ্বোধন করা হয়েছে সেগুলোর একটি হচ্ছে, শিলিগুড়ি থেকে পার্বতীপুর পর্যন্ত ১৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ আন্তর্দেশীয় পাইপলাইন। ২২ ইঞ্চি ব্যাসের এই পাইপলাইন দিয়ে ভারত থেকে তুলনামূলক কম দামে ১০ লাখ টন জ্বালানি তেল সরবরাহ করা যাবে। ৫২০ কোটি টাকার এই প্রকল্পে ভারত ৩০৩ কোটি রুপি মঞ্জুরি সহায়তা দেবে। একই অনুষ্ঠানে ভারতীয় ঋণের টাকায় ঢাকা-টঙ্গী সেকশনের তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েলগেজ লাইন ও টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েলগেজে ডাবল লাইন নির্মাণ প্রকল্পও উদ্বোধন করা হয়।
বাংলাদেশ ও ভারত প্রতিবেশী দুই দেশ, তবে সম্পর্কটা শুধুই প্রতিবেশীর নয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যথার্থই বলেছেন, ভৌগোলিকভাবে আমরা প্রতিবেশী হলেও চিন্তায় আমরা পরিবার। ১৯৭১ সালেই পারিবারিক সম্পর্কের উদাহরণ সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের সব ধরনের সাহায্য দিয়েছে ভারত। অন্যদিকে ভারতীয় সেনাবাহিনী এ দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছে। রক্ত দিয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক রক্তের বন্ধনে আবদ্ধ। এই সম্পর্ক সাম্প্রতিক সময়ে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাচ্ছে, যোগ হচ্ছে নতুন মাত্রা। প্রতিবেশী দুটি দেশ হাতে হাত রেখে চললে এই উপমহাদেশের রাজনীতিতেই শুধু নয়, আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতির ক্ষেত্রেও তা উদাহরণ সৃষ্টি করবে। বলার অপেক্ষা রাখে না, দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত ভূ-রাজনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারত এখন বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ভবিষ্যতে এই সম্পর্কের নতুন নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। প্রতিবেশী দুই দেশ আন্তরিক সম্পর্ক বজায় রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।
ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খুলে দেবে বলে আমাদের বিশ্বাস। অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলাসহ ভারতের এই সহযোগিতা বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক আরো দৃঢ় ও গভীর হবে বলে আমরা মনে করি।