খোলা বাজার ২৪.শনিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮: চট্টগ্রাম নগরীর লালদীঘি মাঠে ৪ অক্টোবর জনসভা করতে চায় বিএনপি। দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসা, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্র’ বন্ধ এবং নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে এই জনসভা করতে চায় দলটি।
শনিবার সকালে চট্টগ্রাম নগরীর নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে নগর বিএনপি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে নগর বিএনপির সভাপতি শাহাদাত হোসেন বলেন, “গত পাঁচ বছরে অনেক ছোট দলকেও লালদীঘিতে সমাবেশ করতে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিএনপিকে কোনো সমাবেশ করতে দেওয়া হয়নি। ৪ অক্টোবর বিকেল ৩টায় আমরা জনসভা করব।”
জনসভার জন্য নগর পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়ে শনিবারই আবেদন করা হবে বলে বিএনপি নেতারা জানান।
শাহাদাত সরকারের সমালোচনা করে বলেন, “অনুগত নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসনের সহায়তায় সরকার সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে দখল করে রেখেছে।
“প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ মহাসচিবকে বলেছেন, সব দলকে নির্বাচনের সুযোগ দেবেন। তাহলে সমান সুযোগ তো দিতে হবে। এভাবে গায়েবি মামলা দিয়ে তা সম্ভব না। নেতাকর্মীদের নামে নির্বিচারে মামলা দেওয়া হচ্ছে, যেন আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করি।”
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, “নির্বাচনের আগে এমপি-মন্ত্রীদের অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের কাহিনী প্রকাশ করতে না পারার জন্য গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতেই এই আইন করা হয়েছে।”
খালেদার মুক্তি দাবি করে শাহাদাত বলেন, “অসুস্থ দেশনেত্রীর সুচিকিৎসার ব্যবস্থা না নিয়ে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
“বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ২১ অগাস্টের গ্রেনেড হামলা মামলায় ফাঁসাতে অবরসপ্রাপ্ত ও দুর্নীতিগ্রস্ত সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা আব্দুল কাহার আকন্দকে চাকরিতে পুনর্বহাল করে সম্পূরক চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।”
বিদেশে থাকা কর্মীর বিরুদ্ধেও মামলা
গত ১০ দিনে ২১টি নতুন মামলায় বিএনপির মোট ১৫১ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেন, বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তি, মৃত, অসুস্থ এমনকি প্যারালাইসিস রোগীকেও মামলার আসামি করা হয়েছে।
“শেখ সেলিম পোর্ট কলোনির বাসিন্দা। তিনি গত দুই বছর ধরে বিদেশে। তার বিরুদ্ধে বন্দর থানায় একাধিক মামলা হয়েছে।”
শাহাদাত বলেন, আকবর শাহ থানার বিএনপি নেতা মীর জাহাঙ্গীর আলমকে বাসায় না পেয়ে তার কলেজ পড়ুয়া ছেলে মীর আবদুল্লাহ আল আরাফাতকে গ্রেপ্তার করে নাশকতা মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
“বাকলিয়া থানার সাধারণ সম্পাদক আফতাবুর রহমান শাহীন শুক্রবার বিকেল তিনটা পর্যন্ত আমার সাথে ছিলেন। ৪টার দিকে তিনি বাসায় গেলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। সকালে নাশকতা পরিকল্পনার বৈঠকে ছিলেন এমন অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
এছাড়াও বাকলিয়া থানার একটি মামলায় ১২ জন নেতাকর্মী উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে এলেও এখানকার আদালত থেকে জামিন মঞ্জুর হয়নি জানিয়ে শাহাদাত বলেন, তারা কোনো নিয়মই মানছে না।
ঢাকার চকবাজার থানায় ২০১৬ সালে মৃত আবদুল্লাহ নামের এক বিএনপি কর্মীর বিরুদ্ধে সম্প্রতি মামলা দেওয়া হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলন থেকে অভিযোগ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলন থেকে নগরীতে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম মাহবুবুর রহমান শামীম, নগর কমিটির সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান, কাজী বেলাল, আবদুল মান্নানসহ অন্যান্যরা।