Mon. Apr 21st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

 

খোলা বাজার ২৪, বুধবার, ০৩ অক্টোবর ২০১৮: র লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নে জমি বিরোধকে কেন্দ্র করে ভাড়াটিয়া অস্ত্রধারী এনে একই পরিবারের ৪ জনকে কুপিয়ে জখমসহ ১৭ বছর বয়সী মেয়েকে গাছের সাথে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে।

স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ফাইতং ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্যাতিত মাদরাসা ছাত্রীসহ আহতদের উদ্ধার করে এবং পাশ্ববর্তী চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাদের ভর্তি করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ২ জন হামলাকারীকে গ্রেফতার করেছে।

মঙ্গলবার (২ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নের ফাদুরছড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

অভিযোগে জানা গেছে, ফাইতং ফাদুর ছড়া গ্রামে মৃত তফুর আলীর পুত্র আবদুল করিম এর সাথে একই এলাকার নুরুল ইসলামের পুত্র মো. ফারুক পক্ষের মধ্যে দীর্ঘ ৭ বছর যাবৎ জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।

উক্ত বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সালিস বৈঠকে ও থানার বিচারে আবদুল করিম এর পক্ষ রায় পায়। স্থানীয় বিচার সালিস না মেনে ফারুক বান্দরবান জেলা জজ আদালতে মামলা করে অসহায় কৃষক পরিবারকে হয়রানি করে আসছিল। এতে ক্ষান্ত না হয়ে মঙ্গলবার (২ অক্টোবর) দুপুরে চকরিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে অস্ত্রধারী ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী এনে আবদুল করিম এর জমি জোর পূর্বক জবর দখলে নেয়ার চেষ্টা করে।

এক পর্যায়ে প্রকাশ্য দিবালোকে হামলাকারী ফারুক ও তার ভাই সাইফুল, বারেকসহ ভাড়াটিয়া শতাধিক সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। হামলাকারীরা গৃহকর্তা আবদুল করিম, তার স্ত্রী ছফুরা খাতুন (৫০), মৃত আলী আহমদের পুত্র নুর মোহাম্মদ (৪০) কে হাত বেঁধে মারধর করে এবং করিমের মাদরাসা পড়ুয়া মেয়ে জোহাইরা বেগম (১৭) কে গাছের সাথে হাত-পা ও মুখ বেঁধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে।

এ সময় ফারুক ও তার সঙ্গীরা করিমের বাড়িতে রক্ষিত স্থানীয় ফাইতং বায়তুল মামুর মসজিদের ১ লাখ টাকাসহ বাড়ির নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার এবং মালামালসহ মোট ৫ লক্ষাধিক টাকার জিনিসপত্র নিয়ে যায়।

ফাদুরছড়া এলাকার ওয়ার্ড মেম্বার থোয়াই হ্লা মার্মা বলেন, এই ধরণের নির্যাতন মানুষ করতে পারে না। ফারুক ও তার সঙ্গীরা অমানুষ। এলাকার লোকজন এগিয়ে না গেলে তারা করিমের পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলত। তার মেয়েকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের বিষয়টি মর্মান্তিক।

লামা থানায় দায়ের করা মামলার তদন্তকারী অফিসার পুলিশের উপ-পরিদর্শক জয়নাল আবেদীন বলেন, হামলাকারীরা মাদরাসা ছাত্রী জোহাইরা বেগমকে রশি দিয়ে গাছের সাথে প্রকাশ্যে বেঁধে নির্যাতনের এক পর্যায়ে মাদরাসা ছাত্রীকে শ্লীলতাহানীরও চেষ্টা চালায়। নির্মম এই দৃশ্য সহ্য করতে না পেরে স্থানীয় লোকজন ফাইতং পুলিশ ফাঁড়িকে খবর দিলে পুলিশ আহত ও নির্যাতিতদের উদ্ধার করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত ফারুক ও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাদশাকে গ্রেফতার করে এবং অন্যান্য হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।

লামা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অপ্পেলা রাজু নাহা জানিয়েছেন, ফাইতংয়ে জমি জবর, হামলা ও নির্যাতনের খবর পেয়ে ফাইতং পুলিশ ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ঘটনাস্থল থেকে ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে থানায় মামলা নেওয়া হয়েছে।