রাজ্যের সংখ্যালঘুদের সঙ্গে যে ভাঁওতা দেওয়া শুরু হয়েছে তা যদি চলতে থাকে তাহলে বাম সরকারের মতো এই সরকারকেও গঙ্গায় ছুড়ে ফেলা হবে বলে রাজ্য সরকার সরাসরি হুঁশিয়ারি দিলেন ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম তীর্থ স্থান ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকী। এদিন কলকাতার রানি রাসমনি রোডে সভা করার কর্মসূচি থাকলেও সভার ৩৬ ঘন্টা আগে কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে উদ্দোক্তাদের জানিয়ে দেওয়া হয় চিঠি দিয়ে ওখানে সভা করা যাবে না। পুলিশের সেই নির্দেশকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে টিপু সুলতান মসজিদ থেকে মিছিল শুরু করেন সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন, ফুরফুরা শরীফ মোজদ্দেদীয়া অনাথ ফাউন্ডেশন, সারা বাংলা ইমাম মোয়াজ্জেন কাউন্সিল, জমিয়তে আইম্মাহ অল উলামা, নবচেতনা সহ বিভিন্ন সংগঠন। মিছিল রানি রাসমনি রোডে ঢোকার আগেই পুলিশ ব্যারিকেড করে মিছিল ঘুরিয়ে দেয়। কলকাতা প্রেস ক্লাবের সামনে দিয়ে হাজার হাজার জনতা মেয়ো ও ডাফরিন রোডের সংযোগস্থলে দাঁড়িয়ে পড়েন। এর ফলে কলকাতায় যানযটের সৃস্টি হয় ব্যাপক। যান চলাচল স্বভাবিক করতে পুলিশকে বেশ বেগ পেতে হয়। পুলিস মঞ্চ বাঁধতে না দেওয়ায় হুড খোলা গাড়ি থেকেই বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন বক্তারা। রাজ্যে অস্ত্র মিছিলের অনুমতি দেওয়া হলেও কার স্বার্থে এই সভা করার অনুমতি বাতিল করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকী ও ফারুক আহমেদ।
তাঁরা বলেন সংখ্যালঘুদের সঙ্গে ভাঁওতা দেওয়ায় বাম সরকারকে ৩৩ শতাংশ মুসলিম ভোটাররা গঙ্গায় ছুড়ে ফেলেছে, যদি তৃণমূল সরকার বিজেপির জুজু দেখিয়ে আমাদের দমিয়ে রাখতে চায় তাহলে ভুল করবে। তাঁরা পরামর্শ দিলেন সংখ্যালঘুদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে মমতা বন্দোপাধ্যায় আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসুন, তা না হলে বাম সরকারের মতো তৃণমূল সরকারকে গঙ্গায় ছুড়ে ফেলে দিতে তাঁদের সময় লাগবে না।
বিকল্প হিসাবে প্রদেশ কংগ্রেসের নয়া সভাপতি সোমেন মিত্রের নামও উচ্চারণ করেন পীরজাদা
ত্বহা সিদ্দিকী। এদিনের সভা থেকে দুর্গাপুজো কমিটিকে যে ভাবে সরকারি কোষাগারের টাকা দেওয়া হচ্ছে তা থেকে নয় ওয়াকফ সম্পত্তি থেকে ইমাম ও মোয়াজ্জেনদের ভাতা বাড়ানোর দাবি জানান সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন এর রাজ্য সম্পাদক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান। তিনি দাবি জানান রাজভবন, আকাশবাণী ভবন, সিপিএম এর রাজ্য সদর দপ্তর আলিমুদ্দিন ভবন সহ সমস্ত ওয়াকফ সম্পত্তি উদ্ধার করতে হবে। রাজ্য সরকার সংখ্যালঘুদের ভোটে ক্ষমতায় আসার সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সমস্ত ওয়াকফ সম্পত্তি উদ্ধার করবে। তাঁর কথায় রাজ্য সরকার পরিচালিত পশ্চিমবঙ্গ ওয়াকফ বোর্ড মারফৎ আমরা জানতে পেরেছি রাজভবন এর বর্তমান ভাড়া মাত্র ১ টাকা। অবিলম্বে বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী রাজভবন এর ভাড়া নির্ধারণ করার দাবি জানান তাঁরা।
পাশাপশি ২০১ বছরের ঐতিহ্যশালী হুগলী মাদ্রাসা কোন চক্রান্তে বন্ধ করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকী ও ফারুক আহমেদ। অবিলম্বে হুগলী মাদ্রাসায় পঠন পঠন চালু এবং পার্শ্ববর্তী মসজিদের তালা খুলে দিয়ে নামায পড়ার উপযোগী করে দেওয়ার দাবি জানান বিভিন্ন বক্তারা।
এছাড়া মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন পুনরায় চালু, আন এডেড মাদ্রাসার অনুমোদন, বেকারদের চাকরির ব্যবস্থার দাবি জানান ফারুক আহমেদ। আর এই সমস্ত দাবি না মানা হলে দুর্গা পুজোর পর কলকাতায় রাজ্যের সমস্ত সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তরো আন্দোলনে নামবেন তাঁরা। হুঁশিয়ারি দিয়ে বললেন পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকী। এদিনের সভা থেকে নাম না করে তৃণমূল নেতাদের এক হাত নেন বক্তরা। ত্বহা সিদ্দিকী বলেন তৃণমূলের বেশকিছু নেতা মন্ত্রী সাংসদ ও বিধায়করা সকালবেলায় তৃণমূল আর রাতের বেলায় বিজেপি-আরএসএস। এটা বাংলার রাজনীতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেন তিনি। পাশাপাশি এবিষয়ে মমতা বন্দোপাধ্যায় এর দৃস্টি আকর্ষন করেন পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকী।
অন্যদিকে ফারুক আহমেদ আগামী লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের ৪২ টি আসনের মধ্য থেকে যোগ্য মুসলিমদের ১৪ থেকে ১৫ টি আসনে মুসলিম প্রার্থী করার আবেদন জানান মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কাছে।
এছাড়াও বেকার যুবক যুবতীদের কর্মসংস্থানে নজর দেওয়ার কথা বললেন, সারা বাংলা সংখ্যালঘু ছাত্র কাউনসিলের রাজ্য সম্পাদক নাজমুল আরেফিন। তিনি বললেন, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন পাঠনে আরও জোর দিতে হবে। জেলার ছাত্র ছাত্রীদের জন্য কলকাতায় ওয়াকফ সম্পত্তির উপর হোস্টেল নির্মাণের দাবিও জানান নাজমুল আরেফিন। এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন জমিয়তে আইম্মা অল উলামার রাজ্য সম্পাদক হাফেজ সিদ্দিকুললা, সারা বাংলা ইমাম মোয়াজ্জেন কাউন্সিলের রাজ্য সম্পাদক মাওলানা আখতার হোসেন, ফুরফুরা শরীফ মোজাদ্দেদীয়া অনাথ ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় নেতা হাফেজ আজিজ উদ্দিন, জমিয়তে আহলে হাদীসের রাজ্য সম্পাদক আলমগীর সরদার, মাওলানা আনোয়ার হোসেন কাসেমী, মোহমদ কলিমুল্লাহ, আয়ুব আলি সহ বহি বিশিষ্টজন।
ইমাম-মোয়াজ্জেমদের প্রতিবাদ সভায় মূল্যবান ও বলিষ্ট বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সমাজকর্মী ও উদার আকাশ পত্রিকার সম্পাদক ফারুক আহমেদ।
এদিন ইমামাদের ডাকা মহা সমাবেশ ছিল ধর্মতলায় কিন্তু শেষ মুহূর্তে রানি রাসমণি এ্যাভিনিউতে সভা করার অনুমতি বাতিল করে দেন কলকাতা পুলিশ। তবুও হাজার হাজার ইমাম-মোয়াজ্জেম ও মাদ্রাসার শিক্ষকরা একগুচ্ছ দাবি নিয়ে প্রতিবাদে ফেটে পড়লেন রাজপথে। তাঁদের মূল দাবি নিয়ে রাস্তাতে নামেন ধর্মতলার টিপুসুলতান মসজিদ থেকে মিছিল পৌঁছাল মেয়ো রোডের গান্ধী মূর্তির সামনে। তাঁরা প্রতিবাদ সভা করতে সফল হলেন কলকাতা পুলিশের অফুরন্ত সহযোগিতায়।
ফারুক আহমেদ হাজার হাজার ইমাম-মোয়াজ্জেম ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের একগুচ্ছ দাবির কথা তিনি বক্তব্য রাখার সময় তুলে ধরলেন, তাঁদের বেতন বৃদ্ধি, মাদ্রাসায় শূন্যপদ পূরণ ও স্বচ্ছ ভাবে শিক্ষক নিয়োগ, ওয়াক্ফ সম্পতির জবরদখল মুক্ত করা, সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ মেনে মুসলিমদের চাকরি সুনিশ্চিত করণ করার বিভিন্ন দাবি জানান বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর নিকট।
ইমামরা এভাবে প্রতিবাদে ফেটে পড়বেন কলকাতায় তা বুঝতে পারেন নি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বহু মুসলিম সংগঠনের নেতৃত্বে এই মহা সমাবেশ সফল করতে হাজার হাজার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন কলকাতায়।
"তিন অক্টোবর ২০১৮ বুধবার ইমাম ও মুসলিম সংগঠন গুলির যৌথ উদ্যোগে ধর্মতলার রানি রাসমণি এ্যাভিনিউতে মহাসমাবেশ করার কথা ছিল। যদিও পুলিশের তরফ থেকে সভা করতে নিষেধ করা হয়েছিল কিন্তু উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল সভার ৩৬ ঘণ্টা আগে সভা বন্ধ করা বা বাতিল করা সম্ভব নয়। বিভিন্ন দূরবর্তী জেলাগুলি থেকে জনসভায় যোগ দেওয়ার জন্য মানুষ রওনা দিয়েছিলেন।
আর এটা যেহেতু কোনও সরকার বা দল বিরোধী সভা ছিল না তাই যথারীতি এই সভা অনুষ্ঠিত করতে পেরেছি। বহু মানুষ টিপু সুলতান মসজিদের নিকট সকাল সকাল জমায়েত হয়েছিল। আমাদের বহু কর্মীকে এই সভাতে আসতে দেওয়া হয়নি তাঁদেরকে আটকে দিল বাংলাট পুলিশ প্রশাসন।" জানিয়েছেন, আয়োজকদের মধ্যে অন্যতম নেতৃত্ব মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
বাংলার বিভিন্ন ইমাম-মোয়াজ্জেম ও মুসলিম সংগঠনের ডাকে রানি রাসমণিতে মহা সমাবেশের অনুমতি বাতিল করেছিল রাজ্য সরকারের পুলিশ প্রশাসন। কলকাতার রানি রাসমণি এ্যাভিনিউতে বিশাল সমাবেশের ডাক দিয়েছিল বিভিন্ন ইমাম ও মুসলিম সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
শরীয়তের উপরে হস্তক্ষেপ ও বিভিন্ন দাবী জানাতে এই প্রতিবাদ সভার আয়োজনের প্রস্তুতিপর্ব ছিল তুঙ্গে।
তালাকের মতো স্পর্শকাতর বিষয়কে কেন্দ্র করে উপরে হস্তক্ষেপ করার জন্য মোদী সরকার যে অর্ডিন্যান্স জারি করেছে তার বিরুদ্ধে রাজ্যের বিভিন্ন ইমাম ও মুসলিম সংগঠ ৩ অক্টোবর ২০১৮ বুধবার কলকাতায় মহা সমাবেশ করে যোগ্য জবাব দিল তাঁরা। জোরাল প্রস্তুতি নিয়েই মহা সমাবেশ সফল করতে তাঁরা বদ্ধপরিকর থাকায় অনুমতি না মিললেও সভা হল অশান্তিপূর্ণ ভাবে।
এই মহাসভা করার জন্য ৭ সেপ্টেম্বর অনুমতি চেয়ে পুলিশ প্রশানকে চিঠিয়ে দিয়ে আবেদন করা হয়েছিল।
বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃস্থানীয়দের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, মোদী সরকারের অগণতান্ত্রিক পন্থায় ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের প্রতিবাদ জানাতে রাজ্যের প্রায় সমস্ত জনসাধারণকে মোদী সরকারের ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি সম্পর্কে অবহিত করতে এই জনসভার আয়োজন করা হয়।
মহা সমাবেশ থেকে ইমাম-মোয়াজ্জেমনদের নানা সমস্যা, ইমাম ভাতা বৃদ্ধির দাবী, ওয়াকফ সম্পত্তি জবর দখল মুক্ত করা, মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ করা, মাদ্রাসা গুলির সাহায্য প্রদান করতে হবে এবং পরিদর্শন করে আন এডেড মাদ্রাসা গুলির অনুমোদন দেওয়ার আবেদন সহ বিভিন্ন দাবীতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি স্মারকলিপিও দেওয়ার কথা ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁরা শেষ পর্যন্ত স্মারকলিপি দিতে পারল না।
চলতি বছরের ৩ অক্টোবর ভারতের কলকাতার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউতে বিশাল সমাবেশের ডাক দিয়েছিল বিভিন্ন ইমাম ও মুসলিম সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এই সমাবেশ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরর সরকারের কাছে একগুচ্ছ দাবি জানানো ছিল মূল উদ্দেশ্য। জানান সভার একজন আয়োজক।
'ইমাম-মোয়াজ্জেমনদের ভাতা যথাক্রমে আড়াই হাজার এবং দেড় হাজার টাকা। এই ভাতা বাড়ানোর দরকার আছে। ইমাম-মোয়াজ্জেমনদের বাসস্থান তৈরী করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু আজও তা বাস্তবায়ন হয়নি', বলেছেন, ফারুক আহমেদ সর্বভারতীয় "নবচেতনা"র আহ্বায়ক। তিনি ওই সমাবেশের একজন অন্যতম বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
হায়দরাবাদে ইমাম সাহেবদের মাসে পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়া হয় বলেও জানান তিনি।
ওই দিন মাদ্রাসাগুলোতে সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ করা, আরো সাহায্য প্রদান করা এবং আন এডেড মাদ্রাসা গুলোর অনুমোদন দেওয়ার আবেদনসহ বিভিন্ন দাবিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে একটি স্মারকলিপি দেওয়ার জন্য তারা তৈরী ছিলেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সমাবেশের রাজনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ ভারতের লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আসছে। মমতা ব্যানার্জির কাছে মুসলমান ভোট খুব জরুরী। কারণ পশ্চিমবঙ্গের ৩০ শতাংশ ভোটার মুসলমান। বিজেপি বিরোধিতা করার কারণে মমতা মুসলিম সম্প্রদায়ের বিশ্বাস অর্জন করেছেন এবং ২০১১ সালের পর থেকে একের পর এক নির্বাচনে তার সাফল্যের বড় কারণ মুসলমান ভোট। 'গ্রামের দিকে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের কথার অনেক গুরুত্ব। মমতা নিশ্চয়ই এই সমাবেশ থেকে ওঠা দাবিগুলো পূরণের চেষ্টা করবেন' বলে জানান একজন রাজনৈতিক পর্যবক্ষেক। তিনি আরো বলেন, যেহেতু মুসলমান ভোটের গুরুত্ব অপরিসীম, তাই হয়ত নির্বাচনের আগে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এই সমাবেশ আয়োজন করা হয়েছে।
ফারুক আহমেদ তাঁর মূল্যবান বক্তব্যে আরও বললেন, সামনে ২০১৯ লোকসভা ভোট বাংলা থেকে যোগ্য ১৪ জন মুসলিমকে লোকসভার প্রার্থী করতে হবে। তাঁদের জিতিয়ে সাংসদ করার দায়িত্ব নিতে হবে। বাংলার নাগরিক সমাজ এতে খুশি হবেন। আর ২০২১ বিধানসভাতেও যোগ্য ৯৫ জন মুসলিমকে প্রার্থী করতে হবে। যোগ্য মুসলিম বিধায়কদেরকে জিতিয়ে গুরুত্বপূর্ণ দফতরে মন্ত্রীও করতে হবে। এই দবী ফারুক আহমেদ রাখলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে।
মহা সমাবেশে ফারুক আহমেদ ইমামদের সঙ্গে রাজ্যের পুরোহিতদেরও ভাতা দেওয়ার দাবী জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে।
বিশিষ্ট সমাজকর্মী ও "নবচেতনা"র আহ্বায়ক ফারুক আহমেদ আরও বললেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার সহ সমস্ত রাজনৈতিক দল অনগ্রসর মানুষের কল্যাণে এগিয়ে এসে সঠিক পদক্ষেপ নিক। বাংলার জনপ্রতিনিধি হিসেবে মুসলিমদের সর্বক্ষেত্রে সম পলিসির বাস্তব রূপ দিয়ে সম সুযোগ দিক। রাজ্যের সরকার পরিচালিত মন্ত্রীসভায়, প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ সমস্ত দফতরেই মুসলিম প্রতিনিধিদেরকে গুরুত্বপূর্ণ পদে না দিয়ে চরম বঞ্চিত করছে মমতা সরকার। এর অবসান চাই। আজ পর্যন্ত কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে মুসলিম অধ্যাপককে কেন উপাচার্য করা হল না? ব্যতিক্রম আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া।
ডিজি বা পুলিশ কমিশনার করা হয়নি কেন, এবার ডিজি ও পুলিশ কমিশনার করা হোক মুসলিমদের মধ্য থেকে যোগ্য পুলিশ আধিকারিকদেরকে।
রাজ্যের ২৩ জেলাতে কোনও মুসলিম আধিকারিক এসপি বা ডিএম নেই। শুধমাত্র ঝাড়গ্রামের ডিএম আয়শা রানি। রাজ্যের প্রশাসনে এবং সরকারের কমান্ডিং পোস্টে কোনও মুসলিম নেই কেন?
মমতা সরকার প্রতিষ্ঠা করতে মুসলিমদের অবদান সব থেকে বেশি তবু তাদের কেন গুরুত্ব নেই। এই চরম বঞ্চনার অবসান চাছেন বাংলার মানুষ।
আগামী ২০২১ বিধানসভা ভোটে ৯৫ জন যোগ্য মুসলিমদেরকে বিধায়কের টিকিট দেওয়ারও দাবী জানুয়েছেন ফারুক আহমেদ।
কলকাতা শহরে আরও ১৯ টি মুসলিম গার্লস ও বয়েজ হোস্টেল গড়ে তুলতে মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্যোগ নিতে হবে। সংখ্যালঘু দফতর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের হাতে রেখেছেন। চারিদিকে আওয়াজ উঠেছে সংখ্যালঘু কল্যাণে বাংলার মমতা সরকার চরম ভাবেই ব্যর্থ হয়েছে। যার প্রভাব পড়বে আগামী লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে। এখনও সময় আছে মমতা সরকার সজাগ না হলে আগামীতে বামাদের মতো হাল হবে এই সরকারের। তাই এখনও সমায় আছে সকলের জন্য সম পলিসি নিয়ে উন্নয়ন করার। সম সুযোগ ও সম পলিসির বস্তব রূপান করতে হবে দিদিকে।
৮২ টির মতো স্বশাসিত সংস্থার কমান্ডিং পোস্টে কোনও মুসলিম নেই এই সরকারের আমলে আমরা তা ভুলে যায়নি। ৭ টি পুলিশ কমিশনারেট আছে কোথাও মুসলিমকে পুলিশ কমিশনার করা হয়নি। মমতা সরাকারের আমলে সব থেকে মুসলিমরাই বঞ্চিত হচ্ছে সর্বত্র। চাকরি পাওয়া থেকে সরকার পরিচালিত সমস্ত দফতর ও প্রশাসনে এখন দেখছি এই সরকারের আমলে সব থেকে মুসলিমরা পরিত্যক্ত। কেন এমন চিত্র বারবার উঠে আসছে। সবাই জানেন এখন বেসরকারি উদ্যোগে কিছু ছাত্র-ছাত্রী ভাল ফল করে এবং সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতায় সফল হয়ে মূল স্রোতে উঠে আসছে। মিশন স্কুল গড়ে এই সফলতা অর্জনের মুখ দেখিয়েছেন বাংলার প্রখ্যাত সমাজসেবী মোস্তাক হোসেন। তাঁকে পদ্মশ্রী পুরস্কার দেওয়া উচিত বলে মনে করি। এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকার মোস্তাক হোসেনকে কোনও সম্মাননা দিয়ে সম্মানিত করতে পারে নি এটা আমাদের বড় লজ্জিত করে। বলছিলেন ফারুক আহমেদ।
অবশ্য আমাদের মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, মুসলিমদের জন্য তিনি সব কাজ করে দিয়েছেন। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের দিদিকে বলছি, একটু সজাগ হয়ে প্রকৃত কল্যাণকর কাজ করে মানুষের মন জয় করুন। নইলে ভোটব্যাঙ্ক ঘুরে যেতে বেশি সময় লাগবে না। ওবিসি-এ এবং ওবিসি-বি সকল চাকরি প্রার্থীদের বঞ্চিত না করে প্রকৃত যোগ্যদের চাকরি দিন।
বিজেপি জুজু দেখিয়ে সচেতন মুসলমানদের আর বোকা ও লেঠেল বাহিনি বানানো যাবে না এটা মনে রাখতে হবে। আমরা বাংলাতে শান্তিতে থাকতে চাই তাই বিজেপিকে একটাও ভোট দেব না। বিভেদকামী শক্তিকে রুখতে আমরা বদ্ধপরিকর। আপনার দলকেই ভোট দিয়ে দিদি আপনাকেই প্রধানমন্ত্রী করতে চাই। তার জন্য চাইছি দিদি আপনার একটু সুদৃষ্টি আমাদের প্রতি।
"মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী আপনি উৎসব পালন করার জন্য পুজো কমিটি গুলিকে অনুদান দিন সমর্থন না করলেও বিরোধিতা করব না। কিন্তু ইমাম-মোয়াজ্জেমনদের ক্ষুধার্ত রাখবেন এটা কাম্য নয়। আপনি বলেছিলেন যদি একটা রুটি হয় অর্ধেক অর্ধেক ভাগ করে খাব। আপনি বোধহয় সেই বক্তব্য ভুলে যাচ্ছেন। তাই আপনাকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য ৩ অক্টোবর ২০১৮ বুধবার বেলা ১২ টায় ধর্মতলার মহাসমাবেশ করেছি আপনাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।
ফুরফুরা শরিফ এর প্রধান পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকী সাহেব ও দলিত ও সংখ্যালঘু কল্যাণে তরুণ তুর্কি নেতা ফারুক আহমেদ মহা সমাবেশ ও ধিক্কার মিছিলে জোরাল বক্তব্য রাখেন।"
ফারুক আহমেদ বলছিলেন, আপনারা জানেন চল্লিশ লক্ষ মানুষ রাতারাতি রাষ্ট্রহীন, নিজের পাড়ায় নিজের বাড়িতে শরণার্থী। তাদের নাম নেই জাতীয় নাগরিক পঞ্জিতে। তাঁরা কোথায় যাবেন, কোন দেশে যাবেন কেউ জানে না। এই ভয়ঙ্কর অমানবিক ঘটনার জন্য যাঁরা দায়ী তাঁদের জবাব দিতে হবে। এবার সময় হয়েছে পথে নামার। রাস্তাতেই একমাত্র রাস্তা। তাই রাস্তাতে নেমেই প্রতিবাদ জানাতে কলকাতার মেয়ো রোডে হাজার হাজার মুসলিম জোটবদ্ধ হয়ে এর প্রতিকার চেয়ে সোচ্চার হলেন মহা সমাবেশে।
মহান ভারতকে পবিত্র রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর। ওরা কারা মানুষ নয় মানুষের মতো অন্য কিছু। বিভেদকামী শক্তিকে রুখতে হবে আমাদের দেশকে রক্ষা করতে।
সম্প্রীতির পক্ষে, বিভাজনের বিরুদ্ধে এবং অস্তিত্ব রক্ষায় বিশিষ্টজনের সভা ও আলোচনার আয়োজন করতে হবে সর্বত্র। দলমত নির্বিশেষে সবাই এক হয়ে রুখে দুতে হবে বিভেদকামী শক্তিকে।
ভারতের আসমের ধাঁচে পশ্চিমবঙ্গে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) কার্যকর করে অনুপ্রবেশকারীদের বিতাড়নের দাবি জানিয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তারা অবশ্য হিন্দু শরণার্থীদের বিতাড়নের কোনও প্রশ্ন নেই বলে জানিয়েছেন এবং তাদের নাগরিকত্ব দেয়ার পক্ষে সাফাই দিয়েছে।
সম্প্রতি সংগঠনটির রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে এনআরসি ছাড়াও ‘ঘর ওয়াপসি’, ‘লাভ জিহাদ’ ‘ল্যান্ড জিহাদ’ ইত্যাদি বিতর্কিত ইস্যুতে মাঠে নামার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তাদের দাবি, রাজ্য সরকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে, এভাবে তারা গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি জম্মু-কাশ্মীরেও তারা পৌঁছে গেছে। রাজ্য সরকার আগুন নিয়ে খেলা করছে।‘ঘর ওয়াপসি’ (বিভিন্ন কারণে যারা হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে অন্য ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন, তাদেরকে পুনরায় হিন্দু ধর্মে ফিরিয়ে আনা) বা 'ঘরে ফেরানো কর্মসূচি' রূপায়ণের জন্য দুর্গাবাহিনী ও বজরং দলের সদস্যদের নিয়ে একটি মঞ্চ গঠন করা হবে। এর পাশাপাশি কাজে লাগানো হবে মঠ-মন্দির ও ধর্মীয় সংগঠনগুলোকে।তাদের অভিযোগ, এখানে হিন্দুদের দেবত্তর সম্পত্তি ও হিন্দুদের সম্পত্তি জোর করে দখল করে নেয়া হচ্ছে এবং কম দামে কিনে নেয়ার মধ্য দিয়ে ‘ল্যান্ড জিহাদ’ চলছে।অন্যদিকে, তারা কথিত ‘লাভ জিহাদ’ (হিন্দু নারীদের ভালবাসার ছলে ধর্মান্তরকরণ) রুখে দিতে মানুষজনকে বোঝাতে বাড়ি বাড়ি প্রচার চালাবে।এইসব বিভাজন করে ভারতের ও বাংলার সম্প্রীতি নষ্ট করতে পারবে না বিজেপি ও আর.এ.এস।
পশ্চিমবঙ্গে ওরা কখনও সফল হবে না, এসব প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ‘উদার আকাশ’ পত্রিকার সম্পাদক, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষা বিভাগের সহ অধিকর্তা ও সর্বভারতীয় নবচেতনার আহ্বায়ক ফারুক আহমেদ সংবসদ মাধ্যমকে বললেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে ওরা একবিন্দুও সফল হতে পারবে না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য ছোটখাট দাঙ্গার মধ্য দিয়ে মানুষকে বিভক্ত করার চক্রান্ত করেও ওরা চরমভাবেই বাংলায় ব্যর্থ হয়েছে। বিভাজনের রাজনীতি করে সম্প্রীতির বাংলায় কখনও সফল হবে না বিজেপি। বাংলার মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রাখতে বদ্ধপরিকর। দেশের বৈধ নাগরিকদের অন্যায়ভাবে বিদেশি বানিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে দেশবাসী সোচ্চার হচ্ছেন, এটাই আশার আলো। আমরা আগে দেখেছি বিজেপি সাম্প্রদায়িক সুড়সুড়ি দিয়ে বিভাজন করে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চেয়েছে। আসমে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি থেকে লাখ লাখ বৈধ নাগরিকদের নাম বাদ দেয়ার ষড়যন্ত্র কোন উদ্দেশ্যে তা আমরা বুঝতে পারছি। এভাবে আসম থেকে বাঙালি মুসলিম ও হিন্দুদের খেদিয়ে দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না কেন্দ্র ও অসম সরকার।’তিনি আরও বললেন, ‘আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস ভারতকে ওরা ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ বানাতে পারবে না। ভারতের সংবিধান, ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান। সংবিধানকে কলঙ্কিত করার উদ্যোগ সুস্থ নাগরিকরা মেনে নেবেন না। মিশ্র সংস্কৃতির দেশ ভারত। ভারতীয় সংবিধানের অমর্যাদা প্রকৃত ভারতবাসীরা মেনে নিচ্ছে না। ভারতকে যারা অপবিত্র করছে তারা মানুষ নয়, মানুষ নামের অন্য কিছু। ভারত আমাদের মাতৃভূমি। যেভাবে ওরা বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিচ্ছে তাতে ভারত গভীর সঙ্কটের মধ্য দিয়ে দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে অন্য দেশের থেকে।’ ফারুক আহমেদ বললেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে কোনোরকমভাবে ওরা দাঁত ফোটাতে না পেরে এখন একেকটা ইস্যু তোলার চেষ্টা করছে। এখানে সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বদা সব ধর্ম, সব বর্ণের মানুষের পাশে থেকে কাজ করছেন। যেজন্য গোটা ভারতের বিরোধীশক্তি মমতা বন্দোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী করতে চাইছেন। সেই ভয়ে বিজেপি এখন পশ্চিমবঙ্গে আশান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। মহান ভারতকে ওরা আর কত নীচে নামাবে! আশা করি ভারতবাসী আগামী লোকসভা নির্বাচনে যোগ্য জবাব দেবেন।"২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে দেশের সুনাগরিকরা বিজেপির পতন সুনিশ্চিত করবেন বলেও মন্তব্য করেন ফারুক আহমেদ।বাংলার প্রতি প্রান্তে নবচেতনা ফিরিয়ে সকল সম্প্রদায়ের সঙ্গে দলিত ও সংখ্যালঘুদের কল্যাণে ফারুক আহমেদরা নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করছেন।
ফারুক আহমেদ আরও বললেন, "বিজেপির পতন সুনিশ্চিত করতে পারবেন বিরোধী শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধী।