Thu. Jun 19th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements


খোলা বাজার ২৪,শনিবার , ০৬ অক্টোবর ২০১৮:  কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে স্থানান্তরের তোড়জোড় শুরু হয়েছে

শনিবারই বিএনপি চেয়ারপারসনকে হাসপাতালটিতে নেওয়া হচ্ছে বলে ইঙ্গিত মিলেছে বিএসএমএমইউর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হারুন অর রশীদের কথায়।

তিনি সকালে বলেন, “উনাকে আজকেই আনা হবে বলে কারা কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছে। আমরাও প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।”

তবে এই বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।

পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের বাইরে কোনো তৎপরতাও সকালে চোখে পড়েনি।

পরিত্যক্ত এই কারাগারে একমাত্র বন্দি হিসেবে রয়েছেন ৭৩ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। জিয়া এতিমখানা দুর্নীতির মামলায় গত ফেব্রুয়ারিতে রায়ের পর থেকে তিনি বন্দি জীবন কাটাচ্ছেন।

কারাগারে যাওয়ার পর গত এপ্রিল মাসে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য একবার তাকে বিএসএমএমইউতে নেওয়া হয়েছিল।

এরপর তার অসুস্থতার কথা জানিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে স্থানান্তরের দাবি উঠলেও সরকারের পক্ষ থেকে বিএসএমএমইউতে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।

তবে বিএনপি যেমন এই প্রস্তাবে রাজি হচ্ছিল না, তেমনি খালেদা জিয়াও সেখানে যেতে অসম্মতি দেখিয়েছিলেন বলে কারা কর্তৃপক্ষ জানায়।

গত বৃহস্পতিবার হাই কোর্ট বিএসএমএমইউতে ভর্তির আদেশ দিলে তাতে রাজি হওয়ার আভাস আসে খালেদার অন্যতম আইনজীবী ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকনের কথায়।

তিনি বলেন, “ম্যাডামের অবস্থা খুবই খারাপ। আদালত দ্রুত ব্যবস্থা নিতে আদেশ দিয়েছেন।”

খালেদার চিকিৎসা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা চলছে বেশ কিছুদিন ধরে। বিএনপির দাবি, তাদের নেত্রীকে সুচিকিৎসা দিতে চাইছে না সরকার। অন্যদিকে সরকারের ভাষ্য, তার চিকিৎসা নিয়ে ‘রাজনীতি’ করছে বিএনপি।  

খালেদার পক্ষে তাকে বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বিশেষ বোর্ড গঠনের নির্দেশনা চেয়ে হাই কোর্টে আবেদন হয়েছিল।

তাতে বৃহস্পতিবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের বেঞ্চ দ্রুত ঢাকার বিএসএমএমইউতে খালেদাকে ভর্তি এবং তার চিকিৎসায় গঠিত পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড পুনর্গঠনের নির্দেশও দেয়।

খালেদার চিকিৎসায় গত সেপ্টেম্বরে সরকার যে মেডিকেল গঠন করে দিয়েছিল, তার তিন সদস্যকে বাদ দিয়ে নতুন তিনজনকে সেখানে দায়িত্ব দিতে বলেছে আদালত।

হাই কোর্টের আদেশ অনুযায়ী, বিএসএমএমইউর ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল জলিল চৌধুরী এবং ফিজিকাল মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বদরুন্নেসা আহমেদ বোর্ডে থাকবেন।

আর কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক হারিসুল হক, অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক আবু জাফর চৌধুরী এবং চক্ষু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তারেক রেজা আলীর বদলে নতুন তিনজনকে বোর্ডের সদস্য হিসেবে মনোনীত করে দেবে সরকার।

তবে এই তিনজনের কেউ কেন্দ্রীয় বা জেলা পর্যায়ে সরকারসমর্থক স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) বা বিএনপি সমর্থক ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) বর্তমান বা প্রাক্তন সদস্য কিংবা সমর্থক হতে পারবেন না।

হাই কোর্ট বলেছে, এই বোর্ডের অধীনে খালেদা জিয়া তার পছন্দমত ফিজিওথেরাপিস্ট, গাইনোলজিস্ট ও টেকনিশিয়ান নিতে পারবেন। বোর্ডের অনুমতি সাপেক্ষে বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আনতে পারবেন।