Tue. Apr 22nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements


খোলা বাজার ২৪,বৃহস্পতিবার ১১ অক্টোবর ২০১৮ঃ সিলেট,প্রতিনিধিঃ  বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি আবুল হারিছ চৌধুরী। সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার হারিছ চৌধুরী ওই সময়কার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব ছিলেন। তৎকালীন আলোচিত ‘হাওয়া ভবনের’ আশির্বাদপুষ্ট এই রাজনীতিবিদের দুর্দ- দাপট ছিল। তবে বিএনপি সরকার বিদায় নেয়ার পর থেকে উধাও হয়ে যান হারিছ চৌধুরী।

বিগত এক দশকে অন্তর্ধান রহস্যের কারণে আলোচিত হারিছ চৌধুরী এবার বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট সংঘটিত ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা মামলায় দ-িত হয়ে আলোচনায় এসেছেন। মঙ্গলবার ঘোষিত রায়ে হারিছ চৌধুরীকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছেন আদালত।

এরপর থেকে বিভিন্ন মহল থেকে দাবি ওঠছে, হারিছ চৌধুরীর অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হোক।

সাধারণ মানুষের মধ্যে হারিছ চৌধুরীর অবস্থান নিয়ে চলছে নানা কানাঘুষা। অনেকেই বলছেন, হারিছ চৌধুরী জীবিত নেই। তবে সূত্র মতে, হারিছ চৌধুরী জীবিত আছেন এবং ভারতের পাঞ্জাবে ব্যবসা করছেন।

বিএনপি ক্ষমতায় থাকালে সিলেট বিএনপির অন্যতম নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠেছিলেন হারিছ চৌধুরী। তার ইশারাতেই চলতো সবকিছু। ক্ষমতা পেয়ে ‘ধরাকে সরা জ্ঞান’ করতে শুরু করেন তিনি। তার বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগও ওঠতে থাকে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে ২০০৭ সালের ২৯ জানুয়ারি সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যান হারিছ চৌধুরী। ভারতের করিমগঞ্জে তার মামা বাড়িতে গিয়ে ওঠেন তিনি।

এরপর আর প্রকাশ্যে দেশমুখী হননি হারিছ চৌধুরী। ভারত, যুক্তরাজ্য, ইরান, মালয়েশিয়া এভাবেই ঘুরপাক করতে থাকেন তিনি। তবে ২০৫ সালে গোপনে দেশে এসে সিলেটে অবস্থান করেছিলেন তিনি, এমন গুঞ্জন রয়েছে। নিজের সহায়-সম্পত্তি বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের বুঝিয়ে দিয়ে তিনি ফের ভারতে ফিরে যান। হারিছ চৌধুরীর এই অন্তর্ধান রহস্য নিয়ে দেশের শীর্ষ সংবাদমাধ্যমে একাধিকবার সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও হারিছের অবস্থান নিশ্চিত করতে তৎপর রয়েছে।

হারিছ চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ সূত্রের তথ্য মতে, তিনি এখন ভারতের পাঞ্জাবে রয়েছেন। সেখানে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। ব্যবসা করতে গিয়ে নিজের মামা বাড়ি আসামের করিমগঞ্জের ঠিকানা ব্যবহার করেন হারিছ। তবে মাঝেমধ্যেই তাকে লন্ডনে ঘুরতে দেখা যায় বলেও সূত্রের খবর।

হারিছ চৌধুরীর স্ত্রী ও সন্তানরাও রয়েছেন দেশের বাইরে। তার স্ত্রী একমাত্র মেয়েকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে আছেন। সেখানে আইন পেশায় জড়িত মেয়ে। হারিছ চৌধুরীর ছেলে বর্তমানে নরওয়েতে একটি তেল কোম্পানিতে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত বলে জানা গেছে।