Tue. Jun 17th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements


খোলাবাজার২৪বৃহস্পতিবার.১৮ অক্টোবর ২০১৮ঃ বৃহস্পতিবার সকালে জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চু ইন্তেকাল করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর।

আইযুব বাচ্চুর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ রাজনৈতিক অঙ্গনের অনেকেই শোক প্রকাশ করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার এক শোক বার্তায় রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান।

পৃথক এক শোক বার্তায় আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন সৌদি সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গভবন ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে বিষয়টি জানানো হয়।

 দেশের বরেণ্য কন্ঠশিল্পী আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান।
এক শোকবার্তায় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “এদেশের সঙ্গীত জগতে আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন এক উজ্জল জ্যৈতিস্ক। একজন জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী হিসেবে আইয়ুব বাচ্চু’র গাওয়া গান এদেশের তরুণ ছেলে-মেয়েদের যেভাবে উদ্বেলিত করতো তা অতুলনীয়। তার গান তাকে গণমানুষের নিকটজন করে তুলেছিল। তাঁর মৃত্যু সঙ্গীতপ্রিয় মানুষদের জন্য অত্যন্ত মর্মস্পর্শী ও বেদনার। তাঁর মৃত্যুতে দেশ হারালো অসাধারণ একজন গুনী শিল্পীকে যার অভাব সহজে পূরণ হবার নয়। সংগীত শিল্পী হিসেবে তাঁর অবদান জাতি চিরদিন স্মরণ রাখবে।”


বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শোকবার্তায় কন্ঠশিল্পী আইয়ুব বাচ্চু এর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবারের সদস্য, গুনগ্রাহী, অসংখ্য ভক্ত ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা জানান।

অপর এক শোকবার্তায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কন্ঠশিল্পী আইয়ুব বাচ্চু এর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দু:খ প্রকাশ করে বলেন, “আইয়ুব বাচ্চু গানের জগতে ছিলেন একজন কিংবদন্তি। এই প্রতিভাবান শিল্পীর মঞ্চে উপস্থাপিত গানে তরুণদের মধ্যে সৃষ্টি হতো উন্মাদনা। সংগীতপ্রেমী মানুষের মাঝে তিনি ছিলেন বিপুল জনপ্রিয়। আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন গণমানুষের শিল্পী। তার গানের সুরমূর্ছনা সঙ্গীতপ্রেমীদের আবেগাপ্লুত করতো। তার গানের আবেদন তাকে চিরস্মরণীয় করে রাখবে। তাঁর মৃত্যুতে দেশ একজন বহুমূখী প্রতিভার কন্ঠশিল্পীকে হারালো। আইয়ুব বাচ্চু’র অকাল মৃত্যুতে আমি খুবই বেদনাহত। আমি তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যবর্গ, গুনগ্রাহী, ভক্ত-অনুরাগী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।”

খ্যাতিমান এ সংগীতশিল্পীর  মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গাজী মাজহারুল আনোয়ার, বিএনপি’র সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক চিত্রনায়ক আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জল, জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাস এর সভাপতি ড. মামুন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক হেলাল খান প্রমুখ। নেতৃবৃন্দ মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। এক যৌথ বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন সংগীত জগতের এক উজ্জল নক্ষত্র। তার মৃত্যুতে সংগীত অঙ্গনে যে শুন্যস্থানের সৃষ্টি হলো তা কোনদিন পূরণ হবার নয়। সংগীত জগতে তার অবদান মানুষ চিরদিন স্মরণ রাখবে।

 

জানা গেছে  আজ বৃহস্পতিবার সকালে শরীর খারাপ লাগলে আইয়ুব বাচ্চুর ব্যক্তিগত গাড়িচালক তাঁকে নিয়ে স্কয়ার হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন। গাড়িতে তোলার সময়ই তাঁর মুখ থেকে ফেনা বের হচ্ছিল। সকাল সোয়া নয়টার দিকে তাঁকে স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

স্কয়ার হাসপাতালের মেডিকেল ডিরেক্টর ডা. মির্জা নাজিমুদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, জরুরি বিভাগে কার্ডিয়াক কনসালট্যান্ট মুনসুর মাহবুবের উপস্থিতিতে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ধরে আইয়ুব বাচ্চুর হৃৎস্পন্দন ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে আইয়ুব বাচ্চুকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মির্জা নাজিমুদ্দিন বলেন, ‘আমরা আইয়ুব বাচ্চুকে মৃত অবস্থাতেই পাই। তার পরেও আমাদের স্পেশাল টিম তাঁকে ফিরিয়ে আনার সব রকমের চেষ্টা করে। তিনি বহুদিন ধরে হৃদ্‌রোগে ভুগছিলেন। তাঁর হার্টে কার্ডিয়োমাইপ্যাথি ছিল। ২০০৯ সালে তাঁর হার্টে একটি স্টেন্ট পরানো হয়।’

মির্জা নাজিমুদ্দিন জানান, তিন সপ্তাহ আগে আইয়ুব বাচ্চু স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তাঁর হৃদ্‌যন্ত্রের কার্যকারিতা ছিল ৩০ শতাংশ, যেখানে একজন সুস্থ মানুষের থাকে ৭০ শতাংশ। এ জন্যই বারবার তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হতো। হার্টের কার্যকারিতা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে তাঁর মুখ থেকে পানির মতো ফেনা বের হচ্ছিল।

বাংলা ব্যান্ডসংগীতের ইতিহাসের এই কিংবদন্তি শিল্পী ১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বামবার নেতারা।

ব্যান্ডতারকা লাবু রহমান বলেছেন, আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন একজন শিক্ষক। আমাদের দেশে ব্যান্ডসংগীতে এ রকম শিক্ষক নেই বললেই চলে। তাঁর মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। আমরা সবাই তাঁকে মিস করব।’