খোলা বাজার ২৪,মঙ্গলবার ২৩ অক্টোবর ২০১৮ঃ আব্দুল আউয়াল, বানারীপাড়া (বরিশাল)প্রতিনিধিঃ উজিরপুরের জেলেদের মারমুখি অবস্থানের মুখে বানারীপাড়া মৎস্য অফিস ও পুলিশের অভিযানকারীদল ফিরে আসতে হয়েরেছ। বানারীপাড়া ও উজিরপুর সীমান্ত এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। গতকাল মঙ্গলবার বানারীপাড়ার অভিযানকারী দল নিয়মিত টহলে নামে। বানারীপাড়া মিরেরহাট এলাকায় গিয়ে তারা খবর পায় দুই উপজেলার সীমান্ত এলাকা মিরেরহাট, লস্করপুর এলাকায় প্রচুর করছে। পুলিশ ওই এলাকায় অভিযান চালাতে গিয়ে দেখতে পায় শতাধিক মানুষ উজিরপুর এলাকাকা নদীর পারে অবস্থান করছে। এসময় নদীতে প্রচুর জাল ফেলানো দেখাযায়।
অভিযানকারীরা জাল টানতে গেলে নদীর পারে অবস্থানর জেলেরা পুলিশকে লক্ষ করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পরে পুলিশ বানারীপাড়া এলাকায় থেকে দুই জেলেকে আটক করে। নদীর অপর পারে উজিরপুরের জেলেদের বাধার মুখে অভিযান না চালিয়ে ফিরে যেে বাধ্য হয়েছে বানারীপাড়ার অভিযানকারীরা। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি এলাকার সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুসসহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে অভিযানকারীরা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো.জামাল হোসাইন সমকালকে জানান।
বানারীপাড়ায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সন্ধ্যা ও এর শাখা নদীতে ডিমওয়ালা মা ইলিশ নিধন বন্ধ করতে পারছেনা মৎস্য বিভাগ। বেপরোয়া জেলেরা জাল পেতে নদী থেকে ওঠে তীরে বসে থাকে যা খুজে পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়ে। সরেজমিনে বানারীপাড়ার কাজলাহার, বাইশালী জুদ্বীপ কালির বাজার, মিরেরহাট এলাকায় ঘুরে জানাগেছে নানা কথা। ব্রহ্মনকাঠি এলাকার ইউপি সদস্য সুমন ঘরামী জানান, ওই এলাকার জেলেদের মা ইলিশ নিধনে জাল পাততে দেখা যায় না। উজিরপুর উপজেলার কিছু জেলেরা গোপনে সীমান্ত এলাকায় জাল ফেলে মাছ ধরে। নদীতে জেলেদের দেখা না গেলেও পুলিশ নদীতে নোঙ্গ টেনে প্রতিদিন কমবেশি জাল উদ্ধার করে। ইতো মধ্যে ১৫ জন জেলেক ধরে জেল জরিমানা করা হয়েছে। কালিরবাজার এলাকার মো. শাহাবউদ্দিন জানান, এই এলাকার জেলেরা অত্যান্ত চতুর তারা ট্রলারে করে অত্যন্ত দ্রুত জাল ফেলে রশি নিয়ে নদী থেকে অনেক দুরে সরে বসে থাকে। ফলে অভিযান করে তাদের ধরতে পারছেনা কর্তৃপক্ষ।
অপর দিকে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ নিধনের ফলে স্থানীয সচেতন মহল ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষোভ প্রকাশ করে মিরেরহাট এলাকার বাসিন্দা মো. আফজাল হোসেন ও খলিল জানান সন্ধ্যা নদী থেকে ধরা বড় আকৃতির ইলিশ মাছ গোপনে স্বল্প মূল্যে বাড়ি বাড়ি ফেরী করে বিক্রির করছে ওইসব জেলেরা। এছাড়া অভিযানের নামে মাছ লুট, টাকার বিনিময়ের জাল ও নৌকা সহ জেলেদের ছেড়ে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। অবশ্য অভিযানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র গোলাম সালেহ মঞ্জু মোল্লা জানান তার কাছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন ফোন করে নদীতে ইলিশ নিধনের মহোৎসবের অভিযোগ করছেন। তিনি ওই অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি তাৎক্ষনিক ওসি ও ইউএনওকে অবহিত করেন বলেও জানান।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. জামাল হোসাইন জানান একটি ট্রলার দিয়ে এতো বৃহৎ আয়তনের সন্ধ্যা ও এর শাখা নদীতে অভিযান পরিচালনা করা দুঃসাধ্য। তিনি বলেন বানারীপাড়ার দুই দিকে দুটি উপজেলা এর মধ্যে স্বরূপকাঠি(নেছারাবাদ) অপর দিকে উজিরপুর। বানারীপাড়া এলাকায় অভিযান চলালেও উজিরপুর অঞ্চলে যে কি করে তা বোধ গম্য নয়।
অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. খলিলুর রহমান জানান রাত-দিন একাকার নদীতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।এছাড়া কোন এলাকা থেকে অভিযোগ এলেই তাৎক্ষনিক সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ আব্দুল্লাহ সাদীদ জানান এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে ১৫ জন জেলেকে আটক করে ভ্রাম্যমান আদালতে জেল ও জরিমানা করা হয়েছে।তিনি ইলিশ রক্ষায় অভিযান সফল করতে রাজনীতিক,জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিক সহ সবার সহযোগিতা কামনা করেন।###