Wed. Jun 18th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements


খোলা বাজার ২৪,বুধবার .২৪ অক্টোবর ২০১৮ঃ  রাজধানীর চাঁনখারপুলে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট ‘শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট’ উদ্বোধন করা হয়েছে।

বুধবার (২৪ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) সংলগ্ন চাঁনখারপুল এলাকায় গিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

১৮ তলাবিশিষ্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে নামকরণ করা এ হাসপাতালটির উদ্বোধনের ফলে আগুনে পোড়াসহ বিভিন্নভাবে দগ্ধদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে দেশে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে। বিশ্বের সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতিসহ উন্নততর চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকবে এই বার্ন ইনস্টিটিউটে।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন চাঁনখারপুলে নির্মিত এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট। সরকারি খরচে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পাওয়ার জন্য বিশ্বের কোথাও এমন বার্ন ইনস্টিটিউট নেই, এটিই প্রথম।

এ বিষয়ে বার্ন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেনাবাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে দুই একর জমির উপর ৯১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বিশ্বের সর্ববৃহৎ অত্যাধুনিক এ বার্ন হাসপাতালটি উদ্বোধনের ফলে হাজার হাজার পোড়া রোগীর সুচিকিৎসার নবদিগন্ত উ্ন্মোচিত হলো। শুধু রোগীরা নন, তাদের পাশাপাশি চিকিৎসক ও নার্সদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে এ প্রতিষ্ঠান।

বার্ন ইউনিটটি নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির চিফ কো-অর্ডিনেটর ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, এ ইনস্টিটিউট থেকে রোগীদের সর্বোত্তম সেবা দেওয়া হবে। অধিক পোড়ার রোগীকে চিকিৎসা দেওয়ার সুযোগ হবে এবং এখানকার প্লাস্টিক সার্জনরা দেশের চাহিদা পূরণে সক্ষম হবেন।

তিনি আরও জানান, নতুন বার্ন ইনস্টিটিউট উদ্বোধনের পর আগের মতোই বাকি কার্যক্রম চলতে থাকে। তবে রোগী ভর্তি শুরু হবে আগামী জুন মাস থেকে। এছাড়া নতুন বার্ন ইনস্টিটিউট হেলিপ্যাড ও স্কিন ব্যাংকসহ রোগীদের চিকিৎসার সব অত্যাধুনিক সরঞ্জাম থাকবে।

এর আগে ২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ ইনস্টিটিউট নির্মাণের অনুমোদন পায়। ২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাঁনখারপুলে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২৭ এপ্রিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর নির্মাণ কাজ শুরু করে।

উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে খুবই সীমিত পরিসরে ৫ শয্যার বার্ন ওয়ার্ড চালু হয়। তবে আশির দশকের প্রথম ভাগেও দগ্ধ রোগীদের জন্য ঢাকা মেডিকেলে কোনো ইউনিট ছিল না। পোড়া রোগীদের জায়গা হতো হাসপাতালের বারান্দায়।

এরপর ১৯৮৬ সালে ছয়টি শয্যা নিয়ে দেশে প্রথম বার্ন ইউনিট চালু হয় ঢাকা মেডিকেলে। এটি ৫০ শয্যা করা হয় ১৯৯৬ সালে। আরও ৫০ শয্যা বাড়াতে সময় লাগে ২০০৩ সাল পর্যন্ত। ২০১৩ সালে সরকার ইউনিটটিকে ইনস্টিটিউট করে ৩০০ শয্যা করার উদ্যোগ নেয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ ইউনিটের জনবল ১০০ শয্যার, ওষুধপথ্যের জোগানও ১০০ জনের হিসাবে। বাকিটুকু চলছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অনুদান নিয়ে।

পরবর্তীতে, সরকারের নির্দেশনায় রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল, কুমিল্লা, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, রংপুর, ফরিদপুর, রাজশাহী, দিনাজপুর, বগুড়া ও ময়মনসিংহ হাসপাতালে বার্ন ইউনিট চালু হয়।