খোলা বাজার ২৪,বৃহস্পতিবার, .২৫ অক্টোবর ২০১৮ঃ দ্বীপ ও উপকূলবর্তী এলাকায় নৌ পরিবহন বাড়াতে বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি সই হয়েছে। চুক্তির আওতায় চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার করতে পারবে ভারত।
নয়াদিল্লিতে সংবাদ সম্মেলন করে একথা জানান ভারতের জাহাজ পরিবহন দফতরের সচিব গোপাল কৃষ্ণ এবং বাংলাদেশের একই পদে থাকা মহম্মদ আব্দুস সামাদ।
দু'দিনব্যপী চলা নদী ও সমুদ্র যোগাযোগবৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রোটোকল অনুযায়ী ১২তম সট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক এদিন নয়াদিল্লিতে শেষ হয়। এই বৈঠকে বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে উভয় দেশ সহমত পোষণ করে এবং এই সংক্রান্ত তিনটি চুক্তিও সই হয়। এছাড়াও পণ্য পরিবহন ও যাত্রী চলাচল নিয়েও একাধিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, পশ্চিমবঙ্গের গেঁওখালি ও কোলাঘাটের মধ্যে রূপনারায়ণ নদীকে এবার প্রোটোকল রুটের মধ্যে আনা হবে। এর জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে রাজ্যের কোলাঘাট ও বাংলাদেশের চিলমারীকে নদীবন্দর হিসেবে উন্নত করা হবে। এই নদী পথে পণ্য পরিবহন চালু হলে খুব সহজেই বাংলাদেশ ফ্লাই-অ্যাশ ও অন্যান্য সিমেন নির্মাণ সামগ্রী কম খরচে নিয়ে যেতে পারবে। এছাড়াও আসামের বদরপুরে এবং বাংলাদেশের আশুগঞ্জের পাশে ঘোড়াশালে নদীবন্দর তৈরি করা হবে। কলকাতা থেকে আসামের শিলচর পর্যন্ত প্রোটোকল রুটের আওতায় এনে পণ্য পরিবহন ও ক্রুজ চলাচলের জন্য ভারতের পক্ষ থেকে এই বৈঠকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কলকাতা থেকে ঢাকা, গুয়াহাটি হয়ে জোরহাট পযর্ন্ত রিভারক্রুজ চালানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
প্রোটোকল অ্যান্ড ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেডের আওতায় ভারতের ধুবড়ি ও বাংলাদেশের পানগাঁওকে নতুন বন্দর হিসেবে ব্যবহার করার চুক্তি সই হয়েছে। প্রোটোকল রুটের সম্প্রসারণের ফলে ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলো সরাসরি কলকাতা, হলদিয়া ও বাংলদেশের মংলা বন্দরকে ব্যবহার করে পণ্য পরিবহনের সুযোগ পাবে। এতে অবকাঠামোগত ব্যয় তুলনামূলকভাবে কমবে।
দুই দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত টেকনিক্যাল কমিটি মুর্শিদাবাদের ধূলিয়ান থেকে বাংলাদেশের রাজশাহী হয়ে আরিচা বন্দর পযর্ন্ত প্রোটোকল রুট চালু করার বিষয়ে প্রযুক্তিগত সম্ভাবনা খতিয়ে দেখবে। ভাগীরথী নদীতে জঙ্গিপুরে নেভিগেশন লক পুনর্গঠনের বিষয়টি ফারাক্কা দিয়ে গঙ্গার পানি বণ্টনের চুক্তি অনুসারে খতিয়ে দেখবে। এই প্রোটোকল রুট চালু হলে আসামের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের জলপথে দূরত্ব ৪৫০ কিলোমিটার কমে যাবে।
ভারত-বাংলাদেশ প্রোটোকল রুটের অন্তর্গত আশুগঞ্জ-জকিগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ-ডাউকি জলপথের উন্নয়নের জন্য ৮০ শতাংশ আর্থিক সহায়তা করবে ভারত। এই জলপথে ড্রেজিংয়ের জন্য যৌথ কমিটি গঠিত হয়েছে। দু'টি দেশই আসাম. অরুণাচল, নাগাল্যান্ড ও ভুটানে পণ্য পরিবহনের জন্য যোগীগোপাকে হাব বা শিপিং টার্মিনাল হিসাবে উন্নয়নের জন্য সম্মত হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ নদী টার্মিনালে বাংলাদেশ শুল্ক দফতরের পরিক্ষিত পণ্য কলকাতা বন্দরের মাধ্যমে পরিবহন করা যাবে।