Tue. Jun 17th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements


খোলা বাজার ২৪,শুক্রবার,৩০ নভেম্বর ২০১৮ঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষক দম্পতির বিরুদ্ধে আনিতা নামে এক শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তরা রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গোবিন্দ চক্রবর্তী এবং তার স্ত্রী ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক সুতপা ভট্টাচার্য।
অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবহিত। ওই শিক্ষক কেন এ ধরনের কাজ করেছেন, তা দেখা হচ্ছে। শিশুটি এখন নিরাপদে আছে। আমাদের তত্ত্বাবধানে তাকে রেখেছি।’ 
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঢাবির এ শিক্ষক দম্পতি। গোবিন্দ চক্রবর্তী আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীলদলের সঙ্গে যুক্ত বলে জানা গেছে।
গোবিন্দ চক্রবর্তী ও সুতপা ভট্টাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি বাসায় থাকেন। তাদের হাতে নির্যাতনের শিকার শিশুটির নাম আনিতা। তার গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড় জেলায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আনিতা কয়েক বছর ধরে গোবিন্দ চক্রবর্তী ও সুতপা ভট্টাচার্য দম্পতির বাসায় কাজ করতো। তাকে বিভিন্ন সময় এই দুই শিক্ষক নির্যাতন করতেন। আনিতাকে ঠিকমতো খাবারও দেয়া হতো না। বাসায় আটকে রাখা হতো। একপর্যায়ে গত মঙ্গলবার (২৭ নভেম্বর) সে বাসা থেকে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ আনিতাকে পাশের উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়েরে ভেতর থেকে উদ্ধার করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘আনিতাকে যখন মারধর করা হতো, আমরা এর প্রতিবাদও করেছি। আনিতার নাম নিয়েও তাদের আপত্তি ছিল। কাজের মেয়ের নাম কেন এত আধুনিক হবে! এটা নিয়ে তারা ওই শিশুকে খোটা দিতেন। তাকে তিন বেলা খেতে না দিয়ে একবেলা খেতে দিতেন। শিশুটিকে দেখলেই আপনারা বুঝতে পারবেন!’
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ‘গত মঙ্গলবার ওই স্যারের কোয়ার্টারে পুলিশ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা এসেছিলেন। তারা কোর্য়াটারের মধ্যে এ বিষয়ে একটি মিটিং করেছে।’
আনিতা এখন উদয়ন স্কুলের প্রধান শিক্ষক উম্মে সালেমা বেগমের বাসায় আছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে জানতে উম্মে সালেমা বেগম ফোন দেওয়া হলে বলেন, ‘আমি ফোনে কিছু বলতে পারবো না।’
তবে গোবিন্দ চক্রবর্তী অভিযোগ অস্বীকার করেন। পরে তাকে একাধিকবার ফোন দিলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। অভিযোগের বিষয়ে তার স্ত্রী সুতপা ভট্টাচার্যের কাছে জানতে চাইলে তিনিও অভিযোগ অস্বীকার করে তাড়াহুড়ো করে ফোন কেটে দেন। পরে তাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
নীলদলের পরিচালনা কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘আমি এমন একটি ঘটনার কথা শুনেছি। তবে তারা যদি এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের উচিত ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নিয়ে সুবিচার নিশ্চিত করা।’