খােলাবাজার২৪, মঙ্গলবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮: বিশ্বের অন্যান্য স্থানের মতো বাংলাদেশেও খ্রিস্ট ধর্মের অনুসারীরা নানা আয়োজনে উদযাপন করছে যিশু খ্রিস্টের জন্মতিথি বড়দিন।
এ উপলক্ষে গির্জাগুলো সাজানো হয়েছে মনোরম সাজে। ক্রিসমাস ট্রি থেকে ঝুলছে আলোর মালা। বানানো হয়েছে খ্রিস্টের জন্মের ঘটনার প্রতীক গোশালা। সেই সঙ্গে বড় দিনের কেক তো আছেই।
মঙ্গলবার বড়দিন হলেও আগের রাত থেকেই উৎসবে মেতে উঠেছেন খ্রিস্টানরা, তাদের বাড়ি বাড়ি চলছে উৎসব। অভিজাত হোটেলগুলোতেও রয়েছে বিশেষ আয়োজন।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
যিশু খ্রিস্টের জন্মের সময়কে স্মরণ করতে সাজানো হচ্ছে গোয়াল ঘর। শিশু যিশু খ্রিস্টের প্রতিকৃতির সঙ্গে রাখা হয়েছে মাতা মেরি, যোসেফ, তিনজন পণ্ডিত, রাখাল ও কয়েকটি পশুর প্রতিকৃতি। ছবি: আব্দুল্লাহ আল মমীন
বড়দিন উপলক্ষে এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, যিশু খ্রিস্ট মানুষের মধ্যে ভালোবাসা, সেবা, ক্ষমা, মমত্ববোধ, সহানুভূতি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠাসহ শান্তিপূর্ণ অবস্থানের শিক্ষা দিয়ে গেছেন।
“জাগতিক সুখের পরিবর্তে যিশু খ্রিস্ট ত্যাগ, সংযম ও দানের মাধ্যমে পরমার্থিক সুখ অর্জনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। জাতিতে জাতিতে সম্প্রীতি ও ঐক্য স্থাপনসহ অশান্ত বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় যিশু খ্রিস্টের শিক্ষা ও আদর্শ খুবই প্রাসঙ্গিক বলে আমি মনে করি।”
রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এ সম্প্রীতি আবহমান কালের।
“বিদ্যমান সম্প্রীতির এই সুমহান ঐতিহ্যকে আরো সুদৃঢ় করতে ধর্মবর্ণনির্বিশেষে সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে।”
বড়দিনের একদিন আগে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে হলি রোজারিও গির্জার সামনে প্রার্থনায় ছিলেন অনেকে। ছবি: আব্দুল্লাহ আল মমীন
খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এই উৎসব দেশে ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বন্ধনকে আরও দৃঢ় করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এক শুভেচ্ছা বাণীতে তিনি বলেন, পৃথিবীতে ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই ছিল যিশুখ্রিস্টের অন্যতম ব্রত।
“বাংলাদেশে সকল ধর্মের মানুষের সমান অধিকার ও মর্যাদা রয়েছে। সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের নিজস্ব ধর্ম পালনের স্বাধীনতা রয়েছে। ঐতিহ্যগতভাবে এদেশে সকল ধর্মীয় উৎসব আনন্দঘন পরিবেশে পালিত হয়। আমি আশা করি, বড়দিন দেশের খ্রিস্টান ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মধ্যকার বিরাজমান সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতিকে আরো সুদৃঢ় করবে।”
সোমবার রাতে বিভিন্ন গির্জা ও উপাসনালয়ে প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় বড় দিনের উদযাপন। মঙ্গলবাণী পাঠের মাধ্যমে নিজের পরিশুদ্ধি এবং জগতের সব মানুষের জন্য মঙ্গল কামনা করা হয়।
বড়দিন উপলক্ষে সাজানো হয়েছে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের হলি রোজারিও গির্জার প্রার্থনা কক্ষ। ছবি: আব্দুল্লাহ আল মমীন
ঢাকার তেজগাঁওয়ের হলি রোজারি গির্জার মূল ফটকের বাইরে বড়দিন উপলক্ষে নানা পণ্যের পসরায় এসেছে মেলার আমেজ। বড়দিনের কার্ড, রঙিন মোমবাতি, সান্তা ক্লজের টুপি, জপমালা, ক্রিসমাস ট্রি, যিশু-মেরি-জোসেফের মূর্তিসহ বিভিন্ন সুভেনির পাওয়া যাচ্ছে সেখানে।
মঙ্গলবার সকালে কাকরাইলের সেন্ট মেরিস ক্যাথিড্রালে হয় বড় দিনের প্রার্থনা। এছাড়া সকাল থেকেই বিভিন্ন চার্চ, বাড়ি এবং হোটেলগুলোতে চলছ নানা অনুষ্ঠান।
বিশেষ করে শিশুদের জন্য আলাদা আয়োজন করেছে হোটেলগুলো। সেখানে শিশুদের জন্য রয়েছে নানা ধরনের খেলার আয়োজন। প্রধান আকর্ষণ হিসেবে ‘সান্তাক্লজ’ আসবেন নানা উপহার ও চমক নিয়ে।