খােলাবাজার২৪,শুক্রবার,২৮ ডিসেম্বর ২০১৮ঃ প্রবাসী ডেস্ক : চুমু কেবলমাত্র প্রেম-ভালোবাসা-আদর প্রকাশের মাধ্যম নয়। এর কিছু স্বাস্থ্যগত বিষয় রয়েছে। ধরুন আপনি খুব মানসিক চাপে আছেন। এই সময়ে ভালোবাসার মানুষটির একটি চুম্বনেই আপনার মানসিক চাপ অনেকখানি কমিয়ে দিতে পারে। নিয়মিত চুম্বনে মানুষের যৌবনও বৃদ্ধি পায়। শারীরিক অনুশীলন করার মতোই চুমু শরীরে হ্যাপি হরমোন নিঃস্বরণ করে। যা আপনাকে অতিরিক্ত খাওয়া থেকে নিরুৎসাহিত করে এবং আপনার শারীরিক মাপ ঠিক রাখে। এ ছাড়াও চুমু আপনার হৃৎপিণ্ডের জন্য ভালো এবং এটা আপনার দাঁতের ক্ষয়রোধ করে। আসুন জেনে নিই চুম্বনের গুণের সেই সব কথা।
জীবন সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা
গবেষকদের মতে যারা নিয়মিত চুম্বন করে জীবন সম্পর্কে তাদের ধারণা বেশ ইতিবাচক। এসব যুগল অন্যদের তুলনায় বেশি দীর্ঘ ও সুস্থ্ জীবন যাপন করে।
ব্যথা দূর করে :
চুমুর কারণে দেহে অ্যান্ড্রেনালাইন হরমোনের ক্ষরণ ঘটে। এই হরমোন ব্যথা নাশ করে। চুমুর মাধ্যমে মাথাব্যথার মতো যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মেলে।
দাঁতের ক্ষয়রোধ:
অনেকেরই চুমু খাওয়ার আগে মুখ ও দাঁতের যত্ন নেওয়ার অভ্যাস আছে। কিন্তু আপনি কি জানেন চুমুও দাঁত ও মুখের সুস্বাস্থ্যের জন্য ভালো। চুমু স্যালভিয়া নিঃস্বরণ বাড়ায়। এটি অ্যাসিডের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়, খাবারের কণাগুলো সরিয়ে দেয় এবং দাঁতের ক্ষয়রোধ করে।
রক্তচাপ কমায়
চুমু খেলে সত্যিই কমে যাবে উচ্চরক্তচাপ, হাইপারটেনশন এবং দুশ্চিন্তার মতো ব্যাধিগুলো।
অ্যালার্জির সম্ভাবনা কমায়:
জাপানি এক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, চুম্বনে অ্যালার্জির সম্ভাবনা কমে। বিশেষ করে মৌসুমী অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমতে পারে চুম্বনের ফলে।
হার্ট ভালো রাখে
চুমুর সঙ্গে রয়েছে হৃদয়ের ঘনিষ্ঠ এক সম্পর্ক। তাই, যারা হামেশাই একে অপরকে চুমু খান তাদের হৃদপিণ্ড অনেক বেশি সুস্থ থাকে।
ইনসমনিয়া বা অনিদ্রা সারায়:
যারা চুমু খেতে ভালোবাসেন এবং নিয়মিত চুমু খান তাদের ইনসমনিয়া বা অনিদ্রার সমস্যা হয় না। অন্যদের তুলনায় তারা মানসিকভাবে স্থির প্রকৃতির হয়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ভালবাসার চুমু। শুধু তাই নয়, চুমু খেলে আইজিই অ্যান্টিবডি হ্রাস পায় এবং মাস্ট সেল থেকে হিস্টারিনের ক্ষরণও কমে। ফলে অ্যালার্জির হাত থেকে রক্ষা পাবে আমাদের শরীর।
স্ট্রেস কমায়
স্ট্রেস সামলে নিতে দারুণ এক সমাধান চুম্বন। দেহে কর্টিসল নামের স্ট্রেস হরমোন কমায় চুমু। ফলে এর সঙ্গে স্ট্রেসও দূর হবে।
মেজাজ ফুরফুরে থাকে
চুম্বন করলে মেজাজ ফুরফুরে থাকে। প্রতিদিন সকালে মাত্র ২ মিনিট চুম্বন করলে সারা দিন আপনার মন-মেজাজ উত্ফুল্ল থাকবে।
মানসিক চাপ কমায়:
চুমু খাওয়ার ফলে আপনার মন থেকে চিন্তা দূর হয়ে যায়। বৈজ্ঞানিকভাবে বলতে গেলে, চুমু খাওয়ার ফলে শরীরের অক্সিটসিনের মাত্রা বেড়ে যায়। এটি শরীর শান্ত করার রাসায়নিক। এ ছাড়াও চুমুর ফলে আপনি গভীরভাবে শ্বাস নিতে পারবেন, যা শরীরকে রিলাক্স হতে সহায়তা করবে।
যৌন আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি করে
মানুষের নানা সমস্যা দূর করে যৌনতা। এতে আত্মবিশ্বাস বাড়ে এবং হৃদযন্ত্রের দেখভাল করে। আর যৌনতায় আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি করে চুমু।
মাইগ্রেইন কমায়
মাথা যন্ত্রণা বা মাইগ্রেনের মতো ক্রনিক ব্যথা থেকেও মুক্তি দেবে মুহূর্তের গভীর একটা চুমু।
ক্যালরি ক্ষয়
চুমু খাওয়া হলে প্রতি মিনিটে মাত্রাভেদে এক থেকে দুই ক্যালরি ক্ষয় হয়। এ কারণে আপনি যদি দৈনন্দিন ফিটনেসের অংশ হিসেবে চুমুকে রাখতে পারেন।
রোগ–বালাই দূর করে
বিজ্ঞানীরা বলেন, চুমুর মাধ্যমে দুজনের মধ্যে সুষ্ঠু বিপাকক্রিয়া শুরু হয়। বিশেষ করে চুমুর মাধ্যমে যদি ঘটনা যৌনতার দিকে গড়ায়, তবে বহু ক্ষতিকর ভাইরাসের পতন ঘটে।
তারুণ্য ধরে রাখে
চুমুর ফলে মুখের প্রায় ৩০টি পেশির উদ্দীপনা হয়। এ ছাড়াও এর উপকারিতার মধ্যে রয়েছে আপনার কপালের ত্বক থেকে শুরু করে চোয়ালের মসৃণতা তৈরি পর্যন্ত। আপনার তারুণ্য অনুভব করতে এটি যেমন সাহায্য করবে তেমনি আপনাকে তা তরুণ দেখাতেও সাহায্য করবে। মুখের রক্তচলাচল বেড়ে যাওয়ায় এর মাধ্যমে আপনার মুখের দ্যুতি বেড়ে যায় এবং বয়সের কারণে সৃষ্ট মুখের বলিরেখা কমায়।
সুখী করে তোলে
চুমুর মাধ্যমে এন্ডোফিনস এবং এন্ডোরফিনস হরমোনের ক্ষরণ ঘটে যা মানুষকে সুখী করে তোলে। অর্থাৎ, চুমুর মাধ্যমে মানুষ সুখকর অনুভূতি পায়।
বন্ধন সুদৃঢ় করে
দম্পতিদের মধ্যে সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করে লিপ কিস। চুমুর সময় উভয়ের দেহে অক্সিটোসিন হরমোন নিঃসৃত হয় যা বন্ধন দৃঢ় করে।
দুটি মানুষের ভালোবাসা প্রকাশের এই মাধ্যমে শরীরের নানান উপকারীতা লুকিয়ে আছে। চুম্বনকে মনের খোরাকের পাশাপাশি শরীরের খোরাকও বলা যেতে পারে। তাই ভালোবাসার মানুষটিকে চুম্বন করে সুস্থ, দীর্ঘ ও সুখী জীবন লাভ করুন। তবে চুমুর কিছু অপকারিতা আছে বলে এক গবেষণায় বলা হয়েছে।
চুমুর অপকারিতা:
চুমুর মধ্যে দিয়ে ব্যাকটেরিয়ার আদানপ্রদান হয়। নতুন এক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, মাত্র ১০ সেকেন্ডের গভীর চুমুতে ৮ কোটি ব্যাকটেরিয়া একজনের লালার সঙ্গে অন্যজনের মুখে প্রবেশ করে। আর মানুষের মুখে কমবেশি ৭০০ ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে।
নেদারল্যান্ডসের অরগানাইগেশন ফর অ্যাপলায়েড সায়েন্টিফিক রিসার্চের গবেষকরা এমন তথ্য পেয়েছেন।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।