সমাবেশ ঘিরে ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় আগেই পুলিশের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়। তারপরও রাজধানীর বেশ কিছু জায়গায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। আবার কোথাও পরিবহন সঙ্কটে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে সাধারণ যাত্রীদের। বাস সংকট থাকায় দুপুর ১টার পর থেকে রাজধানীর মূল সড়কগুলোতে যানজট বেড়েছে।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায় কোথাও কোথাও তীব্র যানজট আবার কোথাও কোথাও গাড়ি না পেয়ে পায়ে হেটে গন্তব্যে পৌছাচ্ছে সাধারণ মানুষ। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় লাভ করায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিজয় সমাবেশের আয়োজন করায় রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় এ দুর্ভোগ বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
শনিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয় উৎসবের কার্যক্রম শুরু হয়। তবে সকাল থেকেই ঢাকার বাইরে থেকে ট্রাক, বাস পিকআপ, ভ্যান, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে করে দলে দলে আসতে থাকে দলীয় নেতাকর্মীরা।
পরিবহন মালিক শ্রমিকরাও জনসভায় যোগ দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। তবে, বিষয়টি অস্বীকার করে বাস মালিকদের একজন নেতা জানান, চালক সংকট হবে না। কারণ দুই শিফটে বাস চলে। এক বাসের একাধিক চালক থাকেন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মিরপুর রোডে সকাল থেকেই যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। সোহরাওয়ার্দী যাওয়ার প্রবেশ পথগুলোর আশেপাশের সড়কে ছিল যানবাহনের দীর্ঘ লাইন। ইস্কাটন থেকে বাংলামোটরের দিকে বের হতে ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। বাংলামোটর ফ্লাইওভারে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
অনুষ্ঠান স্থলের চারপাশের ইন্টারসেকশন যেমন-বাংলামোটর, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, শাহবাগ, কাঁটাবন, নীলক্ষেত, পলাশী, বকশীবাজার, চানখাঁরপুল, গোলাপশাহ মাজার, জিরো পয়েন্ট, পল্টন, কাকরাইল, বিজয় নগর, অফিসার্স ক্লাব, মিন্টো রোড ক্রসিংগুলো থেকে গাড়ি ডাইভারশন করে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, সায়েদাবাদ থেকে বলাকা, সদরঘাট থেকে আজমেরী, স্কাইলাইন, গুলিস্তান থেকে গুলিস্তান-গাজীপুর পরিবহন, প্রভাতী-বনশ্রী, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ-এয়ারপোর্ট পরিবহন লিমিটেড এবং মতিঝিল থেকে গাজীপুর পরিবহন এবং আল মক্কা পরিবহনের অন্যান্য দিনের মত দেখা যাচ্ছে।
কারওয়ান বাজার, পান্থপথ সড়কে গণপরিবহন তুলনামূলক কম থাকলেও মিছিলের কারণে আটকে থাকতে দেখা যায় যানবাহন। কোথাও আবার ধীর গতি।
রিকশাচালক আব্দুল বাকের বলেন, ওয়ারলেস গেট থেকে এসে ইস্কাটনে আটকে আছি। যাত্রী অর্ধেক ভাড়া দিয়ে নেমে হাঁটা দিয়েছেন।
আল আমিন নামে এক যাত্রী বলেন, এই এলাকায় এমনিতেই জ্যাম থাকে। আজকে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।
বাসের উদ্দেশ্যে শাহবাগ মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থী নিশাত মিম ব্রেকিংনিউজকে জানান, প্রায় ৪৫মিনিটেরো বেশি এখানে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু কোনও বাসের সন্ধায় পাইনি। রাজধানীর বুকে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ বন্ধ হওয়া এখন রাজধানীর জনগণের একটাই দাবি।
অনেকে বাধ্য হয়ে সিএনজিচালিত অটোরকিশা, উবার কিংবা পাঠাওয়ের মতো রাইড শেয়ারিং সার্ভিসের সহযোগিতায় গন্তব্যে যান। যাত্রীরা বলেন, পরিবহনের বাস ও চালকদের সমাবেশে নিয়ে যাওয়ায় সঙ্কট আরও বেড়েছে।