
এদিন সিলেট সিক্সার্সের দেয়া পাহাড় সমান লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৩ বল হাতে রেখেই ৪ উইকেটের দাপুটে জয় তুলে নিয়েছে মাশরাফি বিন মুর্তোজার রংপুর রাইডার্স। দলের পক্ষে ৩৫ বলে সর্বোচ্চ ৬১ রানের ঝড় তোলা ইনিংস খেলেন বিপিএলের এবারের আসরে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রানের মালিক রিলে রুশো। তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ৯টি চার ও ২টি ছক্কার মারে।
১৯৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। দলীয় শূণ্য রানে ইনিংসের দ্বিতীয় বলে পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ ইরফানের বলে পয়েন্টে সাব্বিরের হাত ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেন ক্যারিবিয়ান দানব ক্রিস গেইল। তবে প্রাথমিক চাপ সামলে রুশো আর হেলস রংপুরকে দারুণভাবে এগিয়ে নিয়ে যান। এ দুজন মিলে ৬৩ রানের কার্যকরী জুটি গড়ে দলকে ম্যাচে ফেরান।
২৪ বলে ৩৩ রান করে অলক কাপালি বলে লিটন দাসের হাতে ধরা পড়েন ইংলিশ তারকা অ্যালেক্স হেলস। একপ্রান্তে বিধ্বংস চালিয়ে যাওয়া রুশোকে দলীয় ১৩০ রানে ফেরান তাসকিন। এদিন উইকেটরক্ষকের ক্যাচ মিসে শূণ্য রানেই জীবন ফিরে পেয়েছিলেন রুশো। এর পর আউট হওয়ার আগে করেন ৬১ রান।
রুশো ফিরে যাওয়ার পরই মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে উঠা এ বি ডি ভিলিয়ার্সকে সরাসরি বোল্ড আউট করেন তাসকিন। তবে মোহাম্মদ মিঠুন (১৪), নাহিদুল ইসলাম (১৯), মাশরাফির (৫*) ছোট ছোট কন্ট্রিবিউশনে জয়ের পথে ফিরে রংপুর। শেষ দিকে ফরহাদ রেজার ৬ বলে ১৮* রানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৩ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় টম মুডির শিষ্যরা।
সিলেটের হয়ে ৪ ওভারে ৪২ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নেন তাসকিন। এছাড়া ইরফান ও অলক কাপালি নেন ১টি করে উইকেট।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে নিজের সেরাটা উজাড় করে দেন পড়তি ফর্মে থাকা সাব্বির রহমান। ৫১ রানে ৮৫ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে ৫টি ছক্কা ও ৬টি চার হাঁকান সাব্বির। আর শেষ দিকে নিকোলাস পরানের ২৭ বলে ৪৭ রানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৪ উইকেটে ১৯৪ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় সিলেট সিক্সার্স।
তবে ইনিংসের শুরুতেই পথ হারিয়েছিল সিলেট। দলীয় মাত্র ১৩ রানে ব্যক্তিগত ১১ রান করে মাশরাফি মুর্তোজার শিকার হন লিটন দাস। এর পর সাব্বির রহমানের সঙ্গে ৩৯ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক চাপ সামলে নিলেও ইনিংসটা লম্বা করতে পারেননি আফিফ হোসেন। ১৯ রান করে রান আউট হন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে সাব্বির আর ডেভিড ওয়ার্নার ৫১ রান করেন। দলীয় ১০৩ রানে ইনফর্ম ওয়ার্নার মাশরাফির করা বল লং অনের উপর দিয়ে মারতে গিয়ে অ্যালেক্স হেলসের হাতে দারুণ এক ক্যাচে পরিণত হন। ২১ বলে ১৯ রান করেন ওয়ার্নার।
তখনও এক প্রান্ত আগলে রেখে দলকে বড় সংগ্রহের পথ দেখাচ্ছিলেন সাব্বির। নিকোলাস পরান শুরুটা ধীরে করলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে উঠেন রংপুরের বোলারদের ওপর। দলীয় ১৮৫ রানে শফিউল ইসলামের বলে রিলে রুশোর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন সাব্বির। ৫ রানে অপরাজিত থাকেন জাকের আলী। ২৭ বলে ৪৭ রানের ইনিংসে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কা হাঁকান পরান।
রংপুরের বোলারদের মধ্যে অধিনায়ক মাশরাফি ৪ ওভারে ৩১ রান দিয়ে ২টি ও শফিউল ইসলাম নেন ১টি উইকেট।
৩৫ বলে ৬১ রানের মারকুটে ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরা হন রিলে রুশো।