খােলাবাজার২৪,শনিবার, ২৬ জানুয়ারি ২০১৯ঃ বাংলাদেশের জন্য রোহিঙ্গা ইস্যু বর্তমানে একটা অনেক বড় সমস্যা। মিয়ানমার দেশ থেকে নির্যাতিত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে এবং জাতিসংঘ এটাকে অনেক কঠিন সমস্যা বলে আসছে। আবারও বাংলাদেশে অবৈধভাবে প্রবেশ শুরু করেছে রোহিঙ্গারা। সেখানে জেনোসাইড তথা গণহত্যার শিকার হয়েই তারা জীবন বাচাঁনোর তাগিদে তারা এদেশে প্রবেশ করছে। এ নিয়ে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আবারও বাংলাদেশে উৎকন্ঠা ও উদ্বেগ শুরু হয়েছে।
বেসরকারি একটি টেলিভিশন টকশোতে ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিরাপত্তা এবং সমস্যা’ নিয়ে আলোচনা করেন, ড. আমেনা মহসিন এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব) আব্দুর রশিদ।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক আব্দুর রশিদ বলেন, এটা পুরোটাই একটা পরিকল্পিতভাবে হয়েছে। জাতি নিধনের জন্য এ হত্যাকান্ড। এখন বাংলাদেশ তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছেন, আপনি তাদের রিফিউজি বলেন আর (Displace populations) বাস্তুচ্যুত জণগণও বলতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা বিষয়ে বলতে গেলে প্রথমে গভীরে যেতে হবে। আসলে এটা তো নতুন ইস্যু না। এর আগেও অনেকবার এই গণহত্যা, নির্যাতন, বাস্তুচ্যুতের শিকার হয়েছে তারা। সৌদি আরবে মিয়ানমারের কত রোহিঙ্গা আছে? তাদের স্ট্যাটাস কি ছিল? তারা সেখানে আসলে কি হিসেবে গেছে নাগরিক, অবৈধ শ্রমিক নাকি শ্রমিক হিসেবে গেছে। নাকি তারা সেটেলিং প্রসেস হিসেবে গেছে?
মেজর আব্দুর রশিদ বলেন, এর আগে যখন তারা গেছিল তাদের জন্য কয়েকটা দেশের পক্ষ থেকে একটা সেটেলমেন্ট সিস্টেম করা হয়েছিল এটার মাধ্যমে তারা বিভিন্ন দেশে আশ্রয় পেয়েছিল। সেই সিস্টেমে সৌদি আরব সাড়ে তিন লাখ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, সৌদিতে যেসব রোহিঙ্গা আছে তারা তো স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবেই আছেন, তাদের ওখান থেকে সহজেই বাহির করে দেওয়ার কোনো পথ আর নেই বলে মনে করি।
এদিকে ভারতের রোহিঙ্গাদের আশ্রয় নেওয়ার বিষেয়ে বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব) আব্দুর রশিদ বলেন, ভারতে তারা রেজিস্টেশনের মাধ্যমে আশ্রয় দিয়েছে। তারা সেখানে ৪০ হাজার রোহিঙ্গা বসবাস করছেন। তিনি বলেন, ভারত মিয়ানমার হয়ে বাংলাদেশে আসছে এগুলো কি সেই ৪০ হাজার রোহিঙ্গা থেকেই আসছে কিনা? এটা ভাবার বিষয়। আমাদের দেশে যারা অবস্থান করছেন তারা আসলে কক্সবাজারে যে পরিচিত জনরা আছে তাদেরকে তারা আকর্ষণের মাধ্যমে (pull vactor) করেছে কি না এটা দেখার বিষয়। আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে তারেদকে ভারতের সরকার চাপ প্রয়োগ করছে কি না?
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিভাগের অধ্যাপত ড. আমেনা মুহসিন বলেন, মূল ফ্যাক্টরটা এমনও হতে পারে যে ভারত সরকার তাদের বাংলাদেশে প্রেসার দিচ্ছে অথবা আকর্ষণ দেখাচ্ছে… (তোমরা এখানে নিরাপদ না তোমরা বাংলাদেশে যাও এটাই তোমাদের জন্য ভাল হবে)। তিনি বলেন, এর আগে অনেক পত্র-পত্রিকায় আমরা দেখেছি তাদেরকে বাহির করতে অনেক কৌশল কাজে লাগাতে। কিন্ত হিউম্যান রাইট ওয়াজসহ বেশ কিছু সংস্থা আদালতের মাধ্যমে এটাকে স্থগিত করতে সক্ষম হয়েছে।
ড. আমেনা মুহসিনের মতে, বিদ্যমান রোহিঙ্গা গোষ্ঠী তৃতীয় দেশ প্রতিবেশি দেশ থেকে আরও প্রবেশ করছে কিন্তু সেই দেশের একটা দায়িত্ব ছিল এই ঘটনা ঘটবার আগে একটা পদক্ষেপ নেওয়া কিন্তু সেটা তারা করছে না।