খােলাবাজার ২৪, শুক্রবার, ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ঃ রাজধানীর পাইকারি ও খুচরাবাজারে চালের দাম কেজিপ্রতি এক থেকে দুই টাকা কমেছে। এখনও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সবধরনের মাছসহ ব্রয়লার, লেয়ার ও দেশি মুরগির। তবে বেশিরভাগ সবজির দাম স্থিতিশীল থাকলেও চায়না থেকে আমদানিকৃত আদার দাম কেজিতে কমেছে ৪০ টাকা। আর রসুনের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। আগের দামেই বিক্রি হতে দেখা গেছে ডাল, ডিম, চিনি, তেলসহ সবধরনের মুদি পণ্যের।
শুক্রবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সূত্রাপুর, নয়াবাজার, ধূপখোলা মাঠ, বাবু বাজার, রায়সাহেব বাজার, শ্যামবাজার, ঠাটারি বাজার, সেগুনবাগিচাসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রতিকেজি নাজিরশাইল চাল গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৬২ টাকা, বর্তমানে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। মিনিকেট চাল ৫৬ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে ৫২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। স্বর্ণা গত সপ্তাহে ছিল ৪৫ টাকা, বর্তমানে ৪২ টাকা। বিআর ২৮ নম্বর ৪৫ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
চাল ব্যবসায়ীরা জানান, গত সপ্তাহের তুলনায় চালের দাম কেজিতে ১ থেকে ২ টাকা কমেছে। কিন্তু ডিসেম্বর মাসে যে দাম ছিল, সে দামে আর ফিরে যায়নি। সেসময় থেকে এখনও কেজিপ্রতি দেড় টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সবধরনের চাল।
রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, শীতের সবজিতে বাজার ভরপুর থাকাই বেশিরভাগ সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গত সপ্তাহের মতো এখনও বাজারে দামি সবজির তালিকায় রয়েছে- করলা ও ঝিঙা। বাজার ও মানভেদে করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঝিঙা ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে। এরপরেই রয়েছে লাউ। বাজার ও মানভেদে প্রতিপিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা, শিম কেজিপ্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা, বেগুন ২০ থেকে ৩০ টাকা, ফুলকপি ১০ থেকে ২০ পিস, বাঁধাকপি ১৫ থেকে ২৫ টাকা পিস, শালগম ১০ থেকে ২০ টাকা কেজি, মুলা ১০ থেকে ২০ টাকা এবং পাকা টমেটোর কেজি ১৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
এছাড়া নতুন আলুর দাম কেজিতে ৫ টাকা কমে ১৫ থেকে ২০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। দাম অপরিবর্তিত রয়েছে পেঁয়াজ ও কাঁচামরিচের। আগের সপ্তাহের মতো দেশি পেঁয়াজ ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি ১৫ থেকে ২০ টাকা। কাঁচামরিচের পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা, পালং শাক বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ১৫ টাকা আঁটি, লাল ও সবুজ শাক ৫ থেকে ১০ টাকা আঁটি, লাউ শাক পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকায় ও সরিষা শাক ৫ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজির দামের বিষয়ে সূত্রাপুরের সবজি ব্যবসায়ী আবুল চৌধুরী বলেন, বাজারে এখন সবধরনের শীতের সবজি ভরপুর রয়েছে। যেকারণে সবজির দাম তুলনামূলক কম। শীতের সবজি শেষ হয়ে এলেই আবার সবজির দাম বেড়ে যাবে।
এদিকে, গত সপ্তাহের মতো চড়া দামেই বিক্রি হতে দেখা গেছে মুরগির। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা থেকে ১৪০ টাকা কেজিতে। লাল কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকা থেকে ২০৫ টাকা কেজিতে। আর পাকিস্তানি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায়। একই দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে, খিলগাঁও-মালিবাগ হাজীপাড়াতেও।
মুরগি ব্যবসায়ী আলামিন বাংলানিউজকে জানান, বেশ কিছুদিন মুরগির দাম স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু চলতি মাসের শুরু থেকেই মুরগির দাম বাড়তি। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে পাকিস্তানি মুরগির দাম। যে হারে এই মুরগির দাম বাড়ছে, তাতে হয়তো খুব শিগগিরই ৩০০ টাকা কেজি হয়ে যাবে।
মুরগির দাম বাড়লেও বাজারে ডিম, গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গরুর মাংস আগের মতোই ৪৮০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা কেজি এবং খাসির মাংস ৬৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মুরগির ডিম প্রতি ডজন ৯৫ টাকা, হাঁসের ডিম ১৫৫ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ১৭০ টাকা ডজন বিক্রি হতে দেখা গেছে।
তবে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ। রুই মাছ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা কেজিতে। পাবদা ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, টেংরা ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা, পাঙাশ ১২০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, বোয়াল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, চিতল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, বাইলা ৭০০ টাকা, বাইম ৬০০ টাকা, পোয়া ৫০০ টাকা, মলা ৪০০ টাকা, খল্লা ৩৫০ টাকা, শোল মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
অপরিবর্তিত রয়েছে মুদি পণ্যের দাম। বাজারে খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ২৬ টাকা, প্যাকেট ৩২ টাকা, চিনি ৫০, ডাল ৪০ থেকে ৯০ টাকা, তেল সোয়াবিন ৫ লিটার ৪৫০ থেকে ৪৬০ টাকা, খোলা লিটার ৮২ টাকা, সরিষার তেল কেজি ১৩০ টাকা, লবণ ৩০ থেকে ৩৫ টাকা ও পোলাউর চাল ৯০ থেকে ৯৫ টাকা।